«  on: March 21, 2015, 04:05:37 PM »
									
								 
							 
							
								
ঢেঁড়শের সংস্কৃত নাম রোমশ। আয়ুর্বেদ মতে এ ফলটির রসশক্তি ও বীর্যশক্তি উভয়ই কার্যকর। রসগত স্বভাবে এটি ভেদক অর্থাৎ কোষ্ঠ পরিষ্কারক, পিত্তবিকার নাশক, রুচিবর্ধক তবে বায়ুবর্ধকও বটে; রুক্ষ, মূত্রবর্ধক ও অশ্মরী দূরীকারক অর্থাৎ শরীরে জমা পাথর গলিয়ে বের করে দেয়। এটিকে ডিনডিশও বলা হয়; ইংরেজিতে বলা হয় ওকরা বা লেডিস ফিঙ্গার।
উত্তম ভেষজ গুণের এ রোমশ নামক সবজির কথা বলতে গিয়ে ধান ভানতে শিবের গীত শুনানোর মতো হলেও সমাজসচেতক নিচে দেয়া শ্লোকটির উল্লেখ লোভ সংবরণ করা গেল না।
শ্লোকটি হলো
কদাচিৎ দন্তুরো মূর্খ  কদাচিৎ রোমশ : সুখী।
কদাচিৎ তুন্দিলো দুঃখী কদাচিৎ চপলা সতী।।
দাঁত উঁচু যার কচিৎ হয় মূর্খ। রোমশের কপালে প্রায় মিলে দুঃখ।। ভুঁড়িদার হয় কভু কদাচিৎ দুঃখী। চপলা পিছলায়, হয় না কোনো সুখী।
অর্থাৎ দাঁত উঁচু লোক খুব কমই মূর্খ হয়, আর রোমশ লোক কচিৎ সুখী হয়, ভুঁড়িওয়ালা লোক দুঃখী হয় কম আর নারী চপলা হলে প্রায় পা পিছলে যায়। অন্তত শেষের বিষয়ে সত্যটা প্রকট হয় বলে সাবধান করে দেয়ার জন্য উল্লেখ করা। এবার প্রসঙ্গে ফেরা যাক। এ সবজিটি ডায়াবেটিসে বিশেষ উপকারী, পেসারের অসুখ সারায়, পুষ্টি গুণে ভরপুর। এটি মেধা বাড়ায়; তবে বাতবর্ধকও। ঢেঁড়শ বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসায় ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নিচে এর ব্যবহার বিধি দেয়া হলো।
দাস্ত অপরিষ্কার : দাস্ত অপরিষ্কার, খাওয়ার সাথে সাথে সারাশরীরে কামড়ানি, এমন অবস্থায় বীজ বাদ দিয়ে ২০-২৫ গ্রাম ঢেঁড়শ ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে সে পানি মাঝে মাঝে খেতে হবে। তাতে অসুবিধাটা চলে যাবে, সে সাথে প্রস্রাবও পরিষ্কার হবে।
প্রস্রাবের উগ্র গন্ধ : কাঁচা ঢেঁড়শ বীজ বাদ দিয়ে ২৫-৩০ গ্রাম নিতে হবে। তারপর ১ লিটার পানিতে সিদ্ধ করে আন্দাজ ২৫০-৩০০ মিলিলিটার থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঠাণ্ডা করে পানিটা সারা দিনে দুই-তিনবারে পান করতে হবে। এভাবে কয়েক দিন খেলে দেখা যাবে উগ্র গন্ধটা কমে গেছে।
প্রস্রাবের স্বল্পতা : যারা পানি কম পান করে না, অথচ পান করার পরিমাণ মতো প্রস্রাব হয় না, তারা বীজ বাদ দিয়ে কাঁচা ঢেঁড়শ ৪-৫ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে দেড়-দুই কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে চট্চটে সে পিচ্ছিল পানি পান করলে প্রস্রাব সহজভাবে হবে ও পরিমাণে বেড়ে যাবে।
খুসখুসে কাশি : বীজ বাদ দিয়ে কাঁচা ঢেঁড়শ কুচিকুচি করে কেটে কড়া রোদে শুকিয়ে সেগুলো গুঁড়ো করে ৫-৭ গ্রাম পরিমাণে নিয়ে চিনির কড়া রসে মেড়ে মোমবাতির মতো পাকিয়ে রাখতে হবে। গলা খুসখুস করলেই একটু চুষে খেলে এ কাশি চলে যাবে। যেকোনো বয়সের লোক এটি খেতে পারে এবং সাথে সাথে উপকার পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস বা ব্লাড সুগার (রক্ত শর্করা) : রক্তে শর্করা বাড়লে বা বাড়তে থাকলে কালো জামের বিচির গুঁড়ো ১ গ্রাম নিয়ে ৩-৪টি কাঁচা ঢেঁড়শের সিদ্ধ পানির সাথে প্রতিদিন করে কিছু দিন খেলেই এটি আর থাকবে না।
অপুষ্টি : রোজ সকালে কয়েকটি নরম ঢেঁড়শ খেলে অপুষ্টি দূর হয়।
আমাশয় : গাছের মূল পিষে চিনি মিশিয়ে খেলে আমাশয় সারে।
মূত্রদোষ : ধাতুক্ষরণে মূত্রনালী টিপলে একটি তরল পিচ্ছিল পাতলা আঠা বের হয়। এ ত্রুটি প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্ষরণও হতে পারে। এ রকম ক্ষরণ হলে ২৫-৩০ গ্রাম কাঁচা ঢেঁড়শ (৩-৪ টা মতো) বেটে ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে পাতলা কাপড়ে ছেঁকে কয়েক দিন খেতে হয়। এর ফলে দুই-তিন দিনের মাঝে অসুবিধাটা চলে যাবে। তবে হজম শক্তি ভালো না থাকলে কাঁচা বেটে না খেয়ে পানিতে সিদ্ধ করে ছেঁকে খাওয়া ভালো।Source: 
http://www.onnodiganta.com/article/detail/3353#sthash.8WgLCNPn.dpuf 
							 
						 
						
							
							
							
								
								Logged
							
 
							Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar