ইবোলা–প্রতিরোধী ট্যাব

Author Topic: ইবোলা–প্রতিরোধী ট্যাব  (Read 708 times)

Offline khairulsagir

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 142
  • Test
    • View Profile



প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর পরিচর্যাকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের উপযোগী একটি বিশেষ ট্যাবলেট কম্পিউটার (ট্যাব) তৈরি করা হয়েছে। ক্লোরিনে ভেজানো অবস্থায় এটি সক্রিয় থাকবে এবং এভাবে সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে। সিয়েরা লিওনের কয়েকটি চিকিৎসাকেন্দ্রে ইতিমধ্যে যন্ত্রটির ব্যবহার শুরু হয়েছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের সহায়তায় একদল স্বেচ্ছাসেবী প্রযুক্তিবিদ ওই অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবের নকশা তৈরি করেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা দস্তানা (গ্লাভস) পরা হাতে এটি চালাতে পারবেন। ঝড়বৃষ্টি ও উচ্চ আর্দ্রতার মধ্যেও এই ট্যাব ব্যবহার করা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তামূলক সংস্থা মেদ্সাঁ সঁ ফ্রঁতিয়েহ্ (এমএসএফ) বা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস রোগীদের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের উপযোগী একটি ইবোলা-প্রতিরোধী ট্যাব তৈরির আহ্বান জানিয়েছিল। ভাইরাসটি পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দেশে গত বছর মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ইবোলা আক্রান্ত রোগীকে অন্যদের সংস্পর্শ এড়িয়ে আলাদা রাখতে হয়। সংক্রমণ এড়াতে প্রচলিত ব্যবস্থায় চিকিৎসকেরা দূর থেকে চিৎকার করে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। এ পদ্ধতিতে ভুল হতে পারে বলে মনে করে এমএসএফ।

আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন তরল পদার্থের সংস্পর্শে ইবোলা ভাইরাস ছড়ায়। এমনকি এক টুকরো কাগজের মাধ্যমেও এ সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে বলে জানিয়েছে এমএসএফ। তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের সব ধরনের সংক্রমণ এড়িয়ে কাজ করতে হয়। তাঁরা গরমের মধ্যেও সারা শরীরে বিশেষ ধরনের পুরু পোশাক পরেন, চোখে সুরক্ষা চশমা (গগলস) এবং হাতে কয়েক স্তরের গ্লাভস ব্যবহার করেন। এসব বাধা মোকাবিলায় একদল আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী প্রযুক্তিবিদ এগিয়ে এসে কাজ শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পিম দ্য উইত, দানিয়েল কানিংহাম প্রমুখ। পরে তাঁরা গুগলে যোগ দেন। তাঁদের তৈরি নতুন ট্যাবটি পানিনিরোধী আবরণে (ক্যাসিং) মোড়ানো। ইবোলা ভাইরাস মেরে ফেলার উপযোগী দশমিক পাঁচ শতাংশ ক্লোরিনের দ্রবণে ওই ট্যাব ডুবিয়ে রাখা যায়। সুরক্ষাবিহীন অবস্থায় কেউ এটিতে হাত দিলে ক্লোরিন দ্রবণের সাহায্যে জীবাণুমুক্ত করা যায়। ট্যাবটির তীক্ষ্ণ কোনাগুলো অপসারণ করা হয়েছে, যাতে স্বাস্থ্যকর্মীর বিশেষ সুরক্ষা পোশাকের ক্ষতি না হয়। এ ছাড়া যন্ত্রটি দ্রুত এবং তারবিহীন অবস্থায় একটি টেবিলে রেখে চার্জ করা যায়। তারবিহীন প্রযুক্তিতে ট্যাবটি একটি স্থানীয় যোগাযোগব্যবস্থায় (লোকাল নেটওয়ার্ক সার্ভার) যুক্ত থাকে। স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীর উন্নতি পর্যবেক্ষণ, হৃৎস্পন্দনের গতির ওঠানামা, শরীরের তাপমাত্রা ইত্যাদি জানতে ওই ট্যাব ব্যবহার করতে পারেন।

এমএসএফের প্রযুক্তি উপদেষ্টা আইভান গেটন বলেন, মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ইবোলা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করতে হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। কিন্তু ভাইরাসটির বিস্তারের গতি ও ধরন সম্পর্কে এ পর্যন্ত খুব সামান্যই জানা সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে রোগটির ব্যাপারে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারলে হয়তো তা জানা যাবে এবং আরও উন্নতমানের চিকিৎসাসেবাও দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

ইবোলা প্রতিরোধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। কিন্তু উপদ্রুত এলাকাগুলো প্রত্যন্ত ও সেসব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অপর্যাপ্ত হওয়ায় রোগটির বিস্তার ঠেকাতে প্রযুক্তিগত সমাধানের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। গুগলের পণ্য ব্যবস্থাপক গণেশ শঙ্কর বলেন, ইবোলার মতো সমস্যা মোকাবিলায় নতুন ট্যাবটি ব্যবহার করে বেসরকারি সংস্থাগুলো সুফল পাবে।
সূত্র: বিবিসি ও টেলিগ্রাফ।






Source: www.prothom-alo.com