Science & Information Technology > Life Science

এবার মাথা প্রতিস্থাপন!

(1/1)

Karim Sarker(Sohel):
বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানুষের মাথা প্রতিস্থাপনের পরীক্ষামূলক অস্ত্রোপচার হতে যাচ্ছে। আর এটি করা হবে রাশিয়ার ৩০ বছর বয়সী ভালেরি স্পিরিদোনভের মাথায়। তিনি স্বেচ্ছায় এ অস্ত্রোপচার করাতে রাজি হয়েছেন। এ প্রক্রিয়ায় তাঁর মৃত্যুঝুঁকি অনেক।
মেরুদণ্ডের বিরল রোগে ভুগছেন স্পিরিদোনভ। তিনি একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। জিনগত ওই রোগের নাম ওয়ার্ডনিং-হফম্যান ডিজিজ। এটির কারণে তিনি হাঁটাচলার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমে অবনতি হচ্ছে। অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেবেন বিতর্কিত ইতালীয় শল্যচিকিৎসক সের্গিও কানাভারো। তিনি দাবি করেন, মানুষের মাথা অপসারণ করে সুস্থ শরীরে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। তাঁর উদ্ভাবিত ওই চিকিৎসাপদ্ধতিতে আগামী দুই বছরের মধ্যেই প্রথম মাথা প্রতিস্থাপন করা হবে।
স্পিরিদোনভ যুক্তরাজ্যের ডেইলি মিরর পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি কি ভয় পাচ্ছি? অবশ্যই। কিন্তু এটা যে শুধু আতঙ্কের, তা নয়। ব্যাপারটা একই সঙ্গে বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। কিন্তু আমার কাছে তো বিকল্প নেই। যে অবস্থায় আছি, তা মৃত্যুযন্ত্রণার চেয়ে কম নয়।’
ওয়ার্ডনিং-হফম্যান রোগের প্রভাবে স্পিরিদোনভের মাংসপেশি ক্রমে ক্ষয়ে যাচ্ছে। নজিরবিহীন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর মাথাটি শরীর থেকে আলাদা করা হবে। এরপর দাতার শরীরে তা প্রতিস্থাপন করা হবে। তবে সেই দাতা কে হবে তা নিশ্চিত হয়নি। স্পিরিদোনভ বলেন, ‘আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং তা পাল্টাবে না। যদি আমি এ অস্ত্রোপচার না-ও করাই, আমার পরিণতি হবে দুঃখজনক। কারণ, আমার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত আগের চেয়ে খারাপ হচ্ছে।’
স্পিরিদোনভ ওই অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে ইতিমধ্যে চিকিৎসক কানাভারোর সঙ্গে কথা বলেছেন। সিএনএন জানায়, মাথা প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার করাতে আগ্রহী অনেকের কাছ থেকেই ই-মেইল পেয়েছেন কানাভারো। মাংসপেশি ক্ষয়জনিত রোগে আক্রান্ত কোনো মানুষের ওপর প্রথম ওই শল্যচিকিৎসা প্রয়োগ করতে চান ইতালীয় ওই চিকিৎসক। তিনি এ ব্যাপারে নিজের পরিকল্পনা আগামী জুনে অনুষ্ঠিতব্য আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজিক্যাল অ্যান্ড অর্থোপেডিক সার্জনসের (এএএনওএস) বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থাপন করবেন। কানাভারো বলেছেন, তিনি ওই অস্ত্রোপচারের জন্য ইতিমধ্যে কয়েকজন সহযোগী চিকিৎসক ও নার্স বাছাই করেছেন। ওই দলের মোট সদস্যসংখ্যা ১৫০। অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করতে তাঁদের ৩৬ ঘণ্টা লাগবে।
প্রস্তাবিত ওই অস্ত্রোপচারে স্পিরিদোনভের শরীর থেকে মাথা কার্যত বিচ্ছিন্ন করা হবে। তাঁর স্পাইনাল কর্ড ও ঘাড়ের শিরাগুলোও প্রতিস্থাপন করতে হবে।
তবে কাজটি ‘অবাস্তব’ এবং উন্মাদনার পর্যায়ের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ু শল্যবিদদের সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর নিউরোলজিক্যাল সার্জনসের প্রধান হান্ট বাটজার বলেন, তিনি চান না কেউ ও রকম ভয়ংকর শল্যচিকিৎসার মধ্য দিয়ে যান। তিনি নিজের শরীরে কাউকে এ রকম অস্ত্রোপচার করার সুযোগ দেবেন না। কারণ, অনেক ব্যাপার আছে যেগুলো মৃত্যুর চেয়েও বেশি যন্ত্রণাকর হতে পারে।
চীনা বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে ইঁদুরের মাথা প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে অবস্থিত কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির চিকিৎসা অনুষদের বিজ্ঞানী রবার্ট হোয়াইটের নেতৃত্বে একটি বানরের মাথা প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে ওই অস্ত্রোপচারে মেরুদণ্ডের সুষুম্না কাণ্ড (স্পাইনাল কর্ড) সংযোজন না করায় বানরটি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়েছিল। তবে বিশেষ সহায়তা নিয়ে এটি শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারত। অস্ত্রোপচারের নয় বছর পর বানরটি মারা যায়। কানাভারো মনে করেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে অর্জিত অগ্রগতির ফলে তিনি অনেক সমস্যা এড়াতে পারবেন, ৪৫ বছর আগে যেগুলোর মুখোমুখি হয়েছিলেন হোয়াইট।
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট, নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ ও পিটিআই।

Karim Sarker(Sohel):
প্রতিদিনই আগের চেয়ে উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। আর এই উন্নতিকে তরাণ্বিত করতে আধুনিক থেকে আধুনিকতর হচ্ছে বিজ্ঞান। একটা সময় শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের চোখের কর্নিয়া কিংবা কিডনি প্রতিস্থাপন ছিল কল্পনার অতীত। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষের কারণে আর মাত্র বছর দুয়েকের মধ্যে মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে সক্ষম হবে মানুষ।

‌ইতালির নিউরোসার্জন সার্জিও ক্যানাভেরোর এক ঘোষণায় এমনটাই আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব নিউরোলজিক্যাল এন্ড অর্থোপেডিক সার্জনস’র বার্ষিক বৈঠকে এ ঘোষণা দেন তিনি।

এসময় সার্জিও ক্যানাভেরা জানান, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর নাগাদ তিনি মানব মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে অস্ত্রপচারের পরিকল্পনা করেছেন। এ অস্ত্রপচারে সফল হওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ।

মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে বিশ্বের প্রথম রোগী হিসেবে ছুরি-চাকুর নিচে যাবেন ৩০ বছর বয়সী রাশিয়ান নাগরিক ভ্যালারি স্পিরিদনোফ। তিনি পেশী-ক্ষয়জনিত রোগে ভুগছেন বলে জানান সার্জিও ক্যানাভেরা।

ঘোষণার সময় ক্যানাভেরা বলেন, আমি অস্বীকার করছি না, এতে কাজে ঝুঁকি আছে। সফলতার বিষয়ে অনেকাংশেই নিশ্চিত হয়েই আমি ঘোষণাটা দিয়েছি।

ক্যানাভেরার রোগী স্পিরিদনোফ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, যদি এই অস্ত্রপচারে সফলতা আসে, তাহলে সীমাবদ্ধতাগুলো থেকে আমার মুক্তি মিলবে। আমি আরও স্বাধীন হতে পারবো এবং আমার জীবন আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

স্পিরিদনোফ আরও বলেন, আমরা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় অনেক বড় একটা পদক্ষেপ নিতে চলেছি। আমার বিশ্বাস, সবকিছু ঠিকঠাকভাবেই সম্পন্ন হবে।

ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অব সার্জনস’র সাবেক প্রেসিডেন্ট কার্ডিওথোরাসিক সার্জন রেমন্ড দিয়েতার সার্জিও ক্যানাভেরার ঘোষণা আসার পরপরই বলেছেন, এই অস্ত্রপচারে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, প্রতিস্থাপনের সময় মস্তিষ্ককে জীবিত রাখা।

তিনি বলেন, সার্জিও ক্যানাভেরার বিষয়টি সমালোচিত হচ্ছে বলে আমি জানতে পেরেছি। ভুলে গেলে চলবে না, প্রথম যখন হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হল, তখনও সমালোচনা হয়েছিল।

সার্জিও ক্যানাভেরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে অস্ত্রপচারটি যুক্তরাষ্ট্র অথবা চীনে সম্পন্ন করা হবে। শতাধিক চিকিৎসাকর্মী এতে অংশ নেবেন। প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হতে ৩৬ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে।

তিনি বলেন, আমি বৈজ্ঞানিকভাবেই শুধু নয়, মানসিকভাবেও নিজেকে প্রস্তুত করেছি। এধরণের একটি অভিযানে মানসিক জোরও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

Collected from The Bangladesh Today.

Navigation

[0] Message Index

Go to full version