Faculty of Engineering > EEE

স্ট্রোক হলে যা জরুরি

(1/1)

abdussatter:
স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া মানেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ। রোগী একদিকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন আরেকদিকে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখার প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে থাকেন আত্মীয়-স্বজনেরা। এই অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উপস্থিত হয়ে তাঁকে একনজর দেখার জন্যও ভিড় জমান রোগীর স্বজনেরা। যেন দ্রুত তাঁকে শেষবার একনজর জীবিত দেখে নেওয়ার তাগিদ অনুভব করেন। সবচেয়ে পরিচিত স্ট্রোকের মধ্যে পড়ে মস্তিষ্কের শিরায় রক্ত জমে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার যাওয়ার ঘটনাটি। এতে মস্তিষ্কের ওই শিরার নিকটস্থ কোষগুলো দ্রুত মারা যেতে শুরু করে। তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন যে, বর্তমানে এই রোগের কার্যকর চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। স্ট্রোকের মতো অবস্থা দেখা দিলে দ্রুত নিউরোলজিস্টকে দেখাতে হবে। সম্প্রতি স্ট্রোকের জরুরি চিকিৎসা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট।
মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধা স্ট্রোকের একটি চিকিৎসা হচ্ছে ‘থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি’, যে চিকিৎ​সায় ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে দ্রুত মস্তিষ্কের জমাট বাঁধা রক্ত গলে যায় এবং রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হয়। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটে গেলে ভিন্ন বিষয়) উভয় ক্ষেত্রেই এই থেরাপি বা ওষুধের মাধ্যমে জমাট বাঁধা রক্ত গলিয়ে ফেলা হয়। স্ট্রোক হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই থেরাপি দেওয়া হলে মস্তিষ্কের ক্ষতি কম হয় এবং প্যারালাইসিস বা দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতা তৈরির বিষয়গুলো কমে যায়। নিউরোলজিস্ট বা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা স্ট্রোকের চিকিৎসার বিষয়টিকে বলেন, ‘টাইম ইজ ব্রেইন’।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে স্ট্রোকের রোগী এলে তিনি লক্ষণ দেখেই দ্রুত চিকিৎসা দেন এবং ওষুধ প্রয়োগ করেন। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা একটি ধাপ আগে সম্পন্ন করেন আর তা হচ্ছে কম্পিউটেড টমোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যানারে রোগীর মস্তিষ্ক স্ক্যান করা। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে তাঁরা সিটি স্ক্যান করেন। যদি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে তবে থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ প্রয়োগ করলে রোগীর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য সিটি স্ক্যানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সিটি স্ক্যান করতে গেলে সময় লাগে। গত কয়েক দশকে অবশ্য সিটি স্ক্যান করার মতো বিষয়টিতে সময় বাঁচানোর বেশ কয়েকটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। চিকিৎসকেরাও স্ট্রোকের রোগী চেনার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন। সিটি স্ক্যানার মেশিনও জরুরি বিভাগে সহজলভ্য হয়েছে। এ ছাড়াও স্ক্যান করার আগে ইনজেকশনের মাধ্যমে সরাসরি ওষুধ প্রয়োগের বিষয়টিও এখন চিকিৎসকদের নখদর্পণেই থাকে।
তবে, অনেক সময় চিকিৎসা পদ্ধতিতে সামান্য সময় বাঁচাতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবহেলাও করে বসতে পারেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে মানবিক উপাদান বা মানসিক সাহায্য। ইসরায়েলের সরোকা ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের নিউরোলজিস্ট গাল ইফারজেন স্ট্রোকের রোগীদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষক ইফারজেন খেয়াল করে দেখেন, চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে যখন স্ট্রোকের রোগীকে আনা হয় তখন তাঁর সঙ্গে বন্ধু, স্বজন বা পরিবারের সদস্যদের থাকা জরুরি। যেসব স্ট্রোকের রোগীকে একা আসতে হয় তাদের তুলনায় স্বজনদের সঙ্গে এলে তাঁর অবস্থা কিছুটা ভালো থাকে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রোগীদের নিয়ে এই পর্যবেক্ষণ করেছেন এই গবেষক। তাঁর গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে ‘মেডিসিন’ সাময়িকীতে।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রোকের রোগীর সঙ্গে দুজনের বেশি উপস্থিত থাকলে তাঁর চিকিৎসা সঠিকভাবে হয় এবং সিটি স্ক্যানও দ্রুত করা যায়। যে রোগীদের মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্ত গলানোর জন্য ওষুধ দেওয়া দরকার তাদের ক্ষেত্রেও জরুরি চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়। অবশ্য রোগীর পাশে স্বজনদের উপস্থিতির কারণে জরুরি চিকিৎসা মেলে কি না সে বিষয়টি নিয়ে এখনো নিশ্চিত নন গবেষকেরা। গবেষণায় দেখা যায়, স্ট্রোকের রোগীর সঙ্গে যদি একজন থাকেন তবে সিটি স্ক্যান দ্রুত সম্পন্ন হয়। এতে রোগীর সঙ্গে কেউ না থাকার চেয়ে একজন সঙ্গী থাকলে ১৫ মিনিট পর্যন্ত সময় বাঁচে। সঙ্গী দুজন হলে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় বাঁচানো যায়। তবে দুজনের বেশি হলে খুব বেশি ফায়দা হয় না।
রোগীর সঙ্গে যাঁরা থাকবেন তাঁরা রোগীর নিকটাত্মীয় না কি স্বজন সে বিষয়টি অবশ্য গবেষক ইফারজেন রেকর্ড রাখেননি। তাঁরা কীভাবে চিকিৎসার দেরি হওয়া ঠেকায় তারও কোনো রেকর্ড নেই। তবে গবেষক ইফারজেনের ধারণা, স্বজনদের কিছুটা বাড়তি যত্ন, সাহায্য রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকখানি সময় বাঁচিয়ে দেয়।
গবেষকেরা অবশ্য স্বীকার করেছেন, চিকিৎসার সময় রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের উপস্থিতি কতটা প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে খুব কম গবেষণা করা হয়েছে। অনেক হাসপাতালে এখন নিয়ম রয়েছে যে, জরুরি বিভাগে রোগীর সঙ্গে কেবল পরিবারের একজন সদস্য উপস্থিত থাকতে পারবেন।
তড়িঘড়ি চিকিৎসার সময় যাতে চিকিৎসকদের কাজে ব্যাঘাত না ঘটে সে কারণে দর্শনার্থীদের একত্রে হাসপাতালে বা চিকিৎসাকেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেদের করা এক গবেষণায় দেখা যায়, স্ট্রোকের চিকিৎসার সময় মায়াকান্না করে এমন স্বজনদের উপস্থিতির কারণে চিকিৎসকদের পক্ষে সঠিক চিকিৎসা দিতে বিলম্ব হতে দেখা যায়। অবশ্য, অন্য কোনো গবেষণায় কার্ডিওপালমোনারি রিসাচসাইটেশন, পেডিয়াট্রিক ট্রমার মতো বিষয়গুলোতে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি চিকিৎসা মানে কোনো হেরফের ঘটিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই।
অবশ্য গবেষক ইফারজেন তাঁর এই গবেষণায় কিছু সীমাবদ্ধতার কথা মেনে নিয়েছেন। কারণ, এই গবেষণায় নমুনার পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও ইসরায়েলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে অন্য দেশের বিষয়টি নাও মিলতে পারে।
অন্য দেশে বা অন্য চিকিৎসাকেন্দ্রে যে ব্যবস্থা নেওয়া হোক না কেন ইতিমধ্যে সরোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছেন তিনি। ইফারজেন বলেন, ‘আমরা স্ট্রোকের রোগীদের সঙ্গে এখন দুজনকে আসার অনুমতি দিচ্ছি। ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের একা আসা নিরুৎসাহিত করে স্বজনসহ উপস্থিত হতে পরামর্শ দিচ্ছি।’

ড. ইফারজেনের পরামর্শ হচ্ছে, চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে একাকী স্ট্রোক রোগী আসলে তাঁর চিকিৎসার সময় স্বজনের মতোই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা উচিত। এই বিষয়টি অন্যান্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারে।
Source: BD Protidin

mahmud_eee:
getting afraid....thanks

Nusrat Nargis:
thanks for sharing.

mahmud_eee:
National Heart Foundation, located at Mirpur, is a good place for heart treatment..............

mostafiz.eee:
Hmm.

Navigation

[0] Message Index

Go to full version