ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়বে: আইসিটি নেবে বিএসসিসিএলের ব্যান্ডউইথ

[riazur]

ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো এবার বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) সাউথ এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ-ফোর (সিমিউই-ফোর) সংযোগ নিতে আবেদন করেছে। আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতীয় ব্যান্ডউইথের পাশাপাশি বিএসসিসিএল-এর ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন গ্রাহক সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বিকল্প সংযোগ হিসেবে সিমিউই-ফোর ব্যবহার করবে আইটিসিগুলো। এর মাধ্যমে সেবার মান আরো উন্নত ও প্রতিযোগিতামূলক হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসসিসিএলের নিয়ন্ত্রণে থাকা দেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ সিমিউই-ফোরের সংযোগ নিতে প্রতিষ্ঠানটির কাছে প্রস্তাবনা চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে আইটিসি প্রতিষ্ঠান ওয়ানএশিয়া অ্যালায়েন্স কমিউনিকেশন লিমিটেড, নভোকম এবং সামিট কমিউনিকেশন্স। এ বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছেও আবেদন করেছে। খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ব্যান্ডউইডথ শেয়ারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যান্ডউইডথ ব্যবহারের আনুপাতিক হারে ব্যান্ডউইডথ শেয়ারের অনুমোদন দেয়া হতে পারে।

বর্তমানে ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেড, নভোকম লিমিটেড, ওয়ানএশিয়া, বিডি লিংক কমিউনিকেশন লিমিটেড, ম্যাংগো টেলিসার্ভিসেস লিমিটেড ও সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড আইটিসি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো স্থলভাগ দিয়ে ভারতের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগ ব্যবস্থা তৈরি করেছে। ভারতের স্থলভাগ দিয়ে মুম্বাই ও চেন্নাইয়ের ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে একাধিক সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে এ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ভারতীয় অংশে টাটা ইন্ডিকম, ভারতী এয়ারটেল ও রিলায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত আইটিসিগুলো।

আইটিসি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) বা বিটিআরসির অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কাছে। আইটিসিগুলোর কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত হওয়ায় কল সেন্টার ও বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার ও চাহিদাও বাড়ছে। তবে বিকল্প ইন্টারনেট ব্যবস্থা হিসেবে আইটিসি সেবা চালুর উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানই একে মূল সংযোগ হিসেবে ব্যবহার করছেন।

প্রসঙ্গত, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান সাবমেরিন ক্যাবলের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে দেশে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে আইটিসি লাইসেন্স দেয়া হয়। পরবর্তীতে কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে চালু হলেও তুলনামূলক কম দামে ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করায় মূল সংযোগ হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ছে। আর বেসরকারি খাতের সঙ্গে এ প্রতিযোগিতায় বাজার হারাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিএসসিসিএল। এদিকে ২০১২ সালেই বিভিন্ন জটিলতায় ভারতের মাধ্যমে বিকল্প ক্যাবল ব্যবস্থা চালুতে দেরি হওয়ার কারণে আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলো সিমিউই-ফোরের সংযোগ দিতে বিটিআরসির কাছে আবেদন করেছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা চালু করতে এ ক্যাবল সংযোগ দেয়ার জন্য জানায়। তবে আইটিসি লাইসেন্স দেয়ার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে উল্লেখ করে সে সময় এ অনুমোদন দেয়া হয়নি।