রক্তের রোগ হিমোফিলিয়া

Author Topic: রক্তের রোগ হিমোফিলিয়া  (Read 451 times)

Offline akhishipu

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 104
  • Test
    • View Profile
.অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত যত রোগ আছে, সেগুলোর মধ্যে হিমোফিলিয়া বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এটি জিনের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে লক্ষণীয় বিষয়, কেবল পুরুষেরাই এ রোগে আক্রান্ত হলে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় ভোগে। আর নারীরা রোগটির জিন বৈশিষ্ট্য ধারণ করলেও রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় ভোগে না।
আমাদের রক্ত জমাট বাঁধা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ হওয়ার জন্য রক্তে বেশ কিছু উপাদান বা ফ্যাক্টর কাজ করে। হিমোফিলিয়ায় জিনগত কারণেই এই উপাদানের অভাব থাকে। হিমোফিলিয়া দুই ধরনের। অষ্টম ফ্যাক্টরের অভাব ঘটলে হিমোফিলিয়া এ এবং নবম ফ্যাক্টরের অভাবে হিমোফিলিয়া বি রোগ হয়ে থাকে। বিশ্ব হিমোফিলিয়া ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি লাখে ২০ জন মানুষ হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত।
জিনগত রোগ হলেও জন্মের পরপরই সাধারণত এ রোগের তেমন কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না। যখন শিশু হামাগুড়ি দিতে শুরু করে, তখন হাঁটুতে চাপ পড়ার কারণে রক্তক্ষরণ হয়ে হাঁটু ফুলে যেতে পারে। অনেক সময় প্রথম রোগটি ধরা পড়ে দাঁত পড়া বা খতনা করাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সময়। সাধারণত হাঁটু, কনুই বা কোমরের সন্ধি বা মাংসপেশিতে রক্তক্ষরণ হয় বেশি। তবে ত্বকের নিচে, খাদ্যনালিতে এমনকি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও বিরল নয়। রক্তক্ষরণের মাত্রা নির্ভর করে আঘাতের পরিমাণ এবং রক্ত জমাট বাঁধার উপাদানের পরিমাণের ওপর। যদি এই উপাদানের পরিমাণ ১ শতাংশের কম হয়ে থাকে, তবে মারাত্মক ধরনের হিমোফিলিয়া হয়, যাতে খুব সামান্য আঘাত বা বিনা আঘাতেও প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর উপাদানের পরিমাণ ৫ শতাংশের বেশি থাকলে তাকে সাধারণ মাত্রার হিমোফিলিয়া বলা হয় এবং ১ থেকে ৫ শতাংশের মাঝামাঝি থাকলে মধ্যম মাত্রার হিমোফিলিয়া বলা হয়।
হিমোফিলিয়া রোগটি আপাতত নিরাময়যোগ্য নয়। রক্ত জমাট বাঁধার যে উপাদানের অভাব থাকে, সেটি ইনজেকশনের মাধ্যমে গ্রহণ করা ছাড়া আপাতত কোনো সমাধান নেই। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে এবং সতর্কতার সঙ্গে জীবনযাপন করলে রোগী প্রায় স্বাভাবিক জীবন কাটাতে সক্ষম হয়, যদিও তাদের গড় আয়ু অন্যদের তুলনায় প্রায় ১০ বছর কম হয়ে থাকে। বর্তমানে এই রোগের আধুনিক চিকিৎসা ও ওষুধ বাংলাদেশেই পাওয়া যায়।