Entertainment & Discussions > Life Style

সব বাসনকোসন স্বাস্থ্যসম্মত নয়

(1/1)

Lazminur Alam:
খাবার রান্না করা, রাখা বা সংরক্ষণ করার জন্য চাই বাসনকোসন। খেয়াল করে দেখুন, দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্রের তালিকায় কত রকমের তৈজসপত্র আমাদের দরকার হয়। যেহেতু রান্নাবান্না ও খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে এগুলো জড়িত, তাই ব্যবহৃত জিনিসপত্র স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা নিয়ে অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত।
অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, মেলামিন, চীনামাটি বা সিরামিক, কাচ, প্লাস্টিক, পিতল, ঢালাই লোহা ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিসের তৈরি বাসনকোসন বাজারে পাওয়া যায়। আর সেগুলোর ব্যবহারও হচ্ছে প্রচুর। এসব বাসনপত্রের ব্যবহার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. নূরনবী কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
অ্যালুমিনিয়াম: এই ধাতুর তৈরি হাঁড়িতে রান্না করতে অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আবার এটাও ঠিক, অ্যালুমিনিয়াম বিষাক্ত ধাতু। তবে যে তাপমাত্রায় রান্না করা হয়, তাতে অ্যালুমিনিয়াম বিচ্যুত হয়ে খাবারের সঙ্গে মিশতে পারে না। ঘষে পরিষ্কার করার সময় যদিও বা কিছু অ্যালুমিনিয়াম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তা ভালোভাবে পানি দিয়ে ধোয়ার কারণে দূর হয়ে যায়। তবে টক বা অম্লজাতীয় খাবার অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে বেশি সময় ধরে রান্না করা কিংবা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, এতে অ্যালুমিনিয়াম পাত্র থেকে বিমুক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
নন-স্টিক তৈজসপত্র: বিভিন্ন তৈজসপত্র আছে, যেগুলোতে নন-স্টিক প্রলেপন থাকে। টেফলন দিয়ে এই প্রলেপ দেওয়া হতো আগে, তবে ধীরে ধীরে এই প্রলেপনের কাজে ব্যবহার বেড়েছে কালফ্যালন, আনোলন, টেফাল ইত্যাদির। যেমন কালফ্যালনের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়াম মেশানো থাকে, যা খাবারে ছড়িয়ে যেতে পারে।

কপার বা তামা: তামার তৈরি তৈজসপত্রও খুব স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বহুদিন ব্যবহারের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হলে সেটা রান্না কিংবা খাবার ধারণের জন্য ব্যবহার না করাই ভালো।

ইস্পাত বা স্টেইনলেস স্টিল: তামা কিংবা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি বাসনের তুলনায় স্টেইনলেস স্টিলের তৈজসপত্র স্বাস্থ্যের পক্ষে কম ঝুঁকিপূর্ণ। স্টিলের অভ্যন্তর ভাগ অ্যালুমিনিয়াম কিংবা তামা দিয়েই তৈরি হলেও এর ওপরে পুরু আস্তরণ থাকে স্টিল বা দস্তার, যার কারণে অ্যালুমিনিয়াম অথবা তামা আস্তরণ ভেদ করে খাবার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। তাপ সুপরিবাহী বলেই তামা ও অ্যালুমিনিয়াম এতে ব্যবহার করা হয়।

লোহা: লোহার তৈরি তৈজসপত্র এখনো টিকে আছে কোথাও কোথাও। লোহা দিয়ে তৈরি বলে এর উপরিভাগ রান্নার জন্য বেশ সুবিধাজনক। স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর নয়।

সিরামিক বা চীনামাটি: সিরামিকের তৈরি বাসনপত্র সবদিক থেকে স্বাস্থ্যসম্মত। এতে চকচকে ভাব আনার জন্য সিসার প্রলেপন থাকলেও তা খাবার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।

মেলামিন: মেলামিন রেজিন তৈরি হয় ইউরিয়া ও ফরমালডিহাইডের মিশ্রণে। তাপের অনুপস্থিতিতে এই মেলামিন রেজিন অপরিবর্তিত থাকে। ওভেনে মেলামিনের জিনিস কখনোই দেওয়া যাবে না, তাপের সংস্পর্শে মেলামিন রেজিনের রাসায়নিক উপাদানগুলো আলাদা হয়ে পড়ে, যা বিষাক্ততার জন্য দায়ী।

প্লাস্টিক: প্লাস্টিকের তৈরি একবার ব্যবহারের উপযোগী বোতল কিংবা অন্যান্য জিনিস বারবার ব্যবহার করা উচিত নয়। প্লাস্টিকের পণ্য কেনার আগে মানের দিকটি পরীক্ষা করে কিনুন, এবং নিশ্চিত হয়ে নিন তা ‘ফুড গ্রেড’ উপকরণ দিয়ে তৈরি কি না। যেসব প্লাস্টিক ‘ফুড-গ্রেড’ নয়, আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি কিংবা মাইক্রোওয়েভ রশ্মির কারণে তাপের সংস্পর্শে এলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয় ডাই-অক্সেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা এই ডাই-অক্সেনকে মানবদেহের কারসিনোজেন উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যেগুলো ক্যানসার সৃষ্টির জন্য দায়ী।

অধ্যাপক মো. নূরনবী বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেন, শিশুদের খাবার রাখা বা পরিবেশনে প্লাস্টিক কিংবা মেলামিনের পাত্র, চামচ ইত্যাদি ব্যবহার না করাই ভালো। তার চেয়ে বরং কাচের পাত্রে রাখুন। কারণ, কাচের বাসনকোসনের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই।

Source: http://epaper.prothom-alo.com/view/dhaka/2015-05-27/14

irin parvin:
thanks for sharing

Navigation

[0] Message Index

Go to full version