Entertainment & Discussions > Life Style

শেখালেই শিশুরা শেখে

(1/1)

A-Rahman Dhaly:
মাসিক আলকাউসার-সংকলনে:
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। তারা দেখে দেখে শেখে, শুনে শুনে শেখে, শেখালে শেখে। প্রয়োজন শুধু বড়দের সচেতনতা। শিশু তার বাবার কাছ থেকে শেখে, মায়ের কাছে থেকে শেখে, শিক্ষকের কাছ থেকে শেখে; তার চারপাশের মানুষগুলো থেকে সে শিখতে থাকে। ফলে সকলেরই শিশুর সাথে সচেতনভাবে চলা দরকার। ভালো কিছু দেখলে সে ভালোটা শিখে, আর মন্দ কিছু দেখলে সে মন্দটা শিখে।

শিশুকে বলা হয় ‘কাদামাটি’। আপনি যেভাবে তাকে গড়তে চাইবেন সেভাবে গড়ে উঠবে। যা শেখাবেন তা-ই শিখবে।

সেদিন এক আত্মিয়ের বাড়িতে গেলাম। সেখানের এক শিশুর সাথে ভাব  হল। সে আমাকে চকোলেট দিল। আমি বললাম, জাযাকাল্লাহ। সে বলল,জাযাকাল্লাহ অর্থ কী? আমি তাকে খুলে বললাম। জাযাকাল্লাহ অর্থ, তুমি যে আমাকে চকোলেট দিলে সে জন্য আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন। তোমাকে সুন্দর সুন্দর চকোলেট দিন, অনেক কিছু দিন; দুনিয়াতে ও জান্নাতে। কেউ কিছু দিলে বলতে হয় জাযাকাল্লাহ।

পরক্ষণে যখন আমি তাকে কিছু একটা দিলাম সে বলে উঠল,জাযাকাল্লাহ। আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। তাইতো, শিশুর তো শেখালেই শেখে! প্রয়োজন শুধু সুন্দর উপস্থাপনে শেখানো। এরপর সে বাড়িতে আমি যে কয়দিন ছিলাম, যতবার তার সাথে আমার আদান-প্রদান হয়েছে, সে জাযাকাল্লাহ বলতে ভোলেনি। তার মা’কে বিষয়টি জানালে তিনি খুব খুশি হলেন।

আরেকদিন মসজিদ থেকে নামায শেষে বের হচ্ছি। প্রতিবেশী এক কিশোরের সাথে দেখা হল। আমি তাকে সালাম দিলাম আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। সে উত্তর দিল ওয়া আলাইকুমুস সালাম। তখন আমি তাকে বললাম, যখন কেউ সালাম দেয় তখন সে যে শব্দে সালাম দেয় তার চেয়ে আরো উত্তম শব্দে তার উত্তর দেওয়া দরকার। এটা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে আমাদেরকে শিখিয়েছেন। সুতরাং তোমাকে যদি কেউ আসসালামু আলাইকুম বলে, তাহলে তার উত্তরে তুমি কমপক্ষে ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলবে। অর্থাৎ তার চেয়ে ওয়া রাহমাতুল্লাহ বাড়িয়ে বলবে। তাহলেই তার চেয়ে উত্তম বাক্যে সালামের জবাব দেওয়া হল। তেমনি সে যদি আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে তাহলে তুমি তার জবাবে বলবে,ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

আর সালাম দেওয়ার সময় কীভাবে সালাম দিবে এবং এর ফযীলত কী তা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হাতে কলমে শিখিয়েছেন

একবার নবীজী বসা ছিলেন, এক সাহাবী এসে বললেন,আসসালামু আলাইকুম। নবীজী তার সালামের জবাব দিয়ে বললেন,আশরুন অর্থাৎ দশ নেকী। তারপর আরেক সাহাবী এসে সালাম দিলেন,আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ নবীজী উত্তর দিয়ে বললেন,ইশরূনা অর্থাৎ বিশ নেকী। আরেক সাহাবী এসে সালাম দিলেন আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু নবীজী উত্তর দিলেন ও বললেন,ছালাছূনা অর্থাৎ ত্রিশ নেকী। [অর্থাৎ সালামের শুধু প্রথম অংশ বললে,দশ নেকী হবে। দ্বিতীয় অংশ যুক্ত করলে বিশ নেকী হবে। পূর্ণ সালাম উচ্চারণ করলে,ত্রিশ নেকী হবে। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৬৮৯]

এরপর থেকে সেই ছেলেটির সাথে যখনই আমার দেখা হয়েছে সে আর দশ নেকীর সালাম দেয়নি বরং ত্রিশ নেকীর সালাম দিয়েছে। অর্থাৎ প্রতিবারই সে আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু পুরাটা বলেছে। আল্লাহ আমলের তাওফীক দিন। আমীন 

Navigation

[0] Message Index

Go to full version