বাজারে ভয়ংকর চিনি – সাবধান হোন আজই

Author Topic: বাজারে ভয়ংকর চিনি – সাবধান হোন আজই  (Read 1247 times)

Offline sadiur Rahman

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 199
  • Test
    • View Profile
মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ঘন চিনি বা সোডিয়াম সাইক্লামেট। দাম কমাতে এর সঙ্গে মেশানো হয় বিষাক্ত সার ম্যাগনেসিয়াম সালফেট। এভাবে বিষের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বানানো হয় ‘বিকল্প চিনি’। এই ‘বিকল্প চিনি’র এক কেজিতে ৫০ কেজি আসল চিনির কাজ হয়। এই ভেজাল ঘন চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য, চকোলেট, আইসক্রিম, কনডেন্সড মিল্ক, বেকারি ও বেভারেজ দ্রব্য। বিষ মেশানো এসব খাবার খেয়ে ক্যান্সার, কিডনি বিকল, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের মানুষ। নিষিদ্ধ সত্ত্বেও গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ ঘন চিনি আমদানি দেখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিষাক্ত চিনি দিয়ে বর্তমান বাজারে কী পরিমাণ মিষ্টি ও মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরি হচ্ছে তা ভাবতে গেলে গা শিউরে উঠবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেখতে একই রকম হওয়ায় সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম সাইট্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেটের নামে গত কয়েক বছরে হাজার হাজার টন ঘন চিনি বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। পরে এর সঙ্গে বিষাক্ত সার ম্যাগনেসিয়াম সালফেট মিশিয়ে সস্তা দামের বিকল্প চিনি বাজারজাত করছে রাজধানীর মিটফোর্ড ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত মাজার গেটকেন্দ্রিক কিছু ব্যবসায়ী।
আগে ফরমালিনবিরোধী অভিযানে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত এবং বর্তমানে চট্টগ্রামে বিনিয়োগ বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মাহবুব কবীর দুই সপ্তাহ আগে ভয়াবহ এই ভেজালের সন্ধান পান। তিনি বাজার থেকে ঘন চিনি কিনে রাজধানীর খামারবাড়ীতে মৃত্তিকা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে পরীক্ষা করে তাতে সোডিয়াম সাইক্লামেটের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে তা জানান। গতকাল রবিবার তিনি এ তথ্য প্রকাশ করেন।
বাজারে ভয়ংকর চিনি
বাজারে ভয়ংকর চিনি
অভিযোগ পাওয়া গেছে, স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ঘন চিনি ভিন্ন ভিন্ন নামে দেদার আমদানি হচ্ছে। সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম সাইট্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ঘোষণা দিয়ে এসব ঘন চিনি আসছে। কারণ এই তিনটি পণ্য দেখতে হুবহু ঘন চিনির মতো, শুল্কহারও অনেক কম; কিন্তু স্বাদে পার্থক্য রয়েছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বেশি লাভের আশায় এসব পণ্য আমদানি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট আমদানি গ্রুপের সহকারী কমিশনার আবদুল হান্নান কালের কণ্ঠকে জানান, গত দুই মাসে চট্টগ্রাম কাস্টম দিয়ে শুধু সাইট্রিক এসিড আমদানি হয়েছে এক হাজার ৬৩৬ টন। অর্থাৎ প্রতি মাসে ৮০০ টনের ওপর।
এক ব্যবসায়ী জানান, দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ওষুধ কম্পানিতে এক বছরে সাইট্রিক এসিড প্রয়োজন হয় চার টনের মতো। আর শুধু দুই মাসে এই পরিমাণ সাইট্রিক এসিড আমদানির ঘটনা রহস্যজনক। এর বাইরে সোডিয়াম সাইক্লামেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট কী পরিমাণ আমদানি হচ্ছে তাও খতিয়ে দেখা উচিত।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত এক বছরে কী পরিমাণ সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম সাইট্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট আমদানি হয়েছে তার তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যায়নি কাস্টম থেকে। তবে বাজার চিত্র বলছে, আমদানি নিষিদ্ধ হলেও হাত বাড়ালেই মিলছে ঘন চিনি এবং সার মিশ্রিত ঘন চিনি।
জানা গেছে, এই ঘন চিনি ক্যান্সারসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। ১৯৬০ সালে যুক্তরাজ্য এবং ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র এর ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বাংলাদেশে এ রাসায়নিক আমদানি নিষিদ্ধ। কিন্তু দেখতে একই রকম হওয়ায় সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম সাইট্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট নাম দিয়ে দেশে এ রাসায়নিক আমদানি হচ্ছে।
দেশে ঘন চিনি আমদানির এই চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে দুই সপ্তাহ আগে। দেশে আমদানি নিষিদ্ধ ঘন চিনি ভিন্ন নামে আমদানির অভিযোগটি আসে চট্টগ্রাম বিনিয়োগ বোর্ড থেকে। তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে কাস্টম কর্তৃপক্ষ পণ্য খালাসে কড়াকড়ি আরোপ করলে জুনের প্রথম থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসব পণ্য খালাস কমে আসে।
চট্টগ্রাম বিনিয়োগ বোর্ডের পরিচালক মাহবুব কবীর সম্প্রতি ঢাকার মিটফোর্ড থেকে রেইনবো কম্পানির একটি ঘন চিনির প্যাকেট কিনে নমুনা সংগ্রহ করে মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পাঠান। সেখানকার গবেষণাগারে পরীক্ষায় প্রতি ১০০ গ্রামে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় ১.৭২ শতাংশ এবং সালফার ১৩.১২ শতাংশ।
এ বিষয়ে মাহবুব কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফরমালিন আমদানি নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ভিন্ন নামে নিষিদ্ধ ঘন চিনি আমদানি এবং ঘন চিনিতে ভেজাল মেশানোর তথ্য পাই। দীর্ঘদিন লেগে থাকলেও প্রমাণ করতে পারছিলাম না। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনের ফলাফল পাওয়ার পর থেকে ঘুম হারাম হয়ে গেল। আতঙ্কিত হলাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা কিভাবে বড় করছি।’
মাহবুব কবীর বলেন, ফরমালিন আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার পর এ বছর ফল, মাছসহ বিভিন্ন পণ্যে ফরমালিন ব্যবহার একেবারে কমে এসেছে। এই ঘন চিনিও একইভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ জন্য দেশের সব সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও আইসিডিতে একই পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঘন চিনি ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে মেডিসিন, কিডনি ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দীপন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য ক্ষতিকারক বিধায় পৃথিবীর অনেক দেশ ঘন চিনি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো সরাসরি খাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। খাদ্যে মিশিয়ে ব্যবহার করা হলে প্রথমেই কিডনি আক্রান্ত হবে, এরপর উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে বেড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি এবং পরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।’

আমদানির পর সেগুলো প্রধানত বিক্রি হচ্ছে ঢাকার মিটফোর্ড এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত মাজার গেটের আশপাশে। গতকাল বিকেলে মাজার গেটের এক দোকানে ঘন চিনি কিনতে গেলে দরবার স্টোরের বিক্রয়কর্মী আবদুল হাকিম জানান, আসল ঘন চিনির কেজি ২৩০ টাকা এবং সাধারণ ঘন চিনির দাম ১৪০ টাকা। চট্টগ্রামের অভিজাত এক মিষ্টি ব্যবসায়ী জানান, দোকানে চিনির বদলে ঘন চিনি দেওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে খরচ সাশ্রয় করা। কারণ এক কেজি আসল ঘন চিনি দিয়ে যে পরিমাণ মিষ্টি তৈরি করা সম্ভব, ওই সমপরিমাণ মিষ্টি তৈরিতে লাগে ৫০ কেজি চিনি। অর্থাৎ দুই হাজার টাকার খরচ মাত্র ২৩০ টাকায় নেমে আসবে।
চট্টগ্রাম বিএসটিআই সহকারী পরিচালক কে এম হানিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রামে অনেকগুলো অভিযানে ৯৯ শতাংশ আইসক্রিম কারখানায় ঘন চিনি ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া নিম্নমানের কিছু জুস, ড্রিংকস কারখানায় এর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ার পর জরিমানা-আটক করা হয়েছিল। কিন্তু অভিজাত কারখানায় এসব কী পরিমাণে ব্যবহৃত হয় সে তথ্য আমার কাছে নেই ।

Source: http://www.alochito.com
Shah Muhammad Sadiur Rahman
Coordination Officer
Department of Multimedia & Creative Technology (MCT)
Email:mctoffice@daffodilvarsity.edu.bd
Cell:01847140056(CP),Ext:160

Offline asitrony

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 547
    • View Profile