প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিটি কিডনিতে প্রায় ১০-১২ লাখ ছাঁকনি রয়েছে। এই ছাকনি প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১৭০ লিটার রক্ত পরিশোধন করে। পরিশোধিত রক্তের মধ্য থেকে ৩ লিটার বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। কোনো কারণবশত যদি এ ধরনের ফিল্টার বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন কিডনি রোগ হতে পারে।
কিডনির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরিমাপ করা হয়। একজন সুস্থ পুরুষ লোকের শরীরে ক্রিয়েটিনিন ১.৪ মিলিগ্রাম এবং মহিলার শরীরে ১.৩ মিলিগ্রাম বা তার চেয়ে কম থাকাকে স্বাভাবিক ধরা হয়।
কিডনি নিজস্ব কোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারে অথবা অন্য কোনো রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যে কারণেই আক্রান্ত হোক না কেন এতে যদি কিডনির কার্যকারিতা তিন মাস বা ততোধিক সময় পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ হতে পারে।
কিডনি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেলে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিয়মিত ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন প্রয়োজন হয়। বর্তমান বিশ্বে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করে একজন রোগী ৫ থেকে ১৫ বছর ও সফল কিডনি সংযোজনের মাধ্যমে ১০-১৫ বছর স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন। নিয়মিত ডায়ালাইসিস বলতে সপ্তাহে তিনবার চার ঘণ্টা করে হেমোডায়ালাইসিস মেশিনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা বোঝায়।
এসিই-ইনহেবিটরস ও এআরবি জাতীয় উচ্চরক্তচাপের ওষুধ কিডনি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। তেমনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা মাইক্রোঅ্যালবুমিন ধরা পড়লে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম, ফাস্টফুড না খাওয়া, চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চললে কিডনি রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। এছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষ চর্বি নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ খেলে, ধূমপান না করলে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায় এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত হৃদরোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।