অধিনায়ক নন, যখন তিনি বাবা !!!

Author Topic: অধিনায়ক নন, যখন তিনি বাবা !!!  (Read 989 times)

Offline habib

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 112
  • Test
    • View Profile
অধিনায়ক নন, যখন তিনি বাবা

 


এরাই এখন তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ। মাশরাফির ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া ছবিসবুজ মাঠের ক্যানভাসে মাশরাফি বিন মুর্তজা কত ছবিই তো আঁকেন। কখনো প্রতিপক্ষের উইকেট নিয়ে, কখনো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জয় তুলে নিয়ে; ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যাট হাতে বল সীমানা ছাড়া করেও! বলবেন, তাঁর অভিনব উদযাপনের ছবিটাই বা বাদ দেওয়া কেন? সেটাও না হয় রাখা গেল। কিন্তু মাশরাফিকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার প্রিয় ছবি কোনটি?

অধিনায়ককে তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্ক ব্যবহার না করেই অবলীলায় হয়তো বলবেন, ‘আমার মেয়ে হুমায়রার ছবিগুলো।’
হুমায়রা মুর্তজা, মাশরাফির চার বছরের কন্যা। মেয়ে ছবি আঁকা শিখেছে। ছোট্ট আঙুলে সাদা ক্যানভাসে কত্ত ছবি আঁকতে, বাবাকে দেখাবে। বাবা যতক্ষণ না ছবিগুলো দেখছে, শান্ত হবে না। বাবা হয়তো মেয়েকে অনুপ্রাণিত করে বলবে, ‘বাহ! মা দারুণ এঁকেছ!’ ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচিতে ছোট্ট মেয়ের শিল্পকর্ম হয়তো খুব বেশি দেখার সুযোগ মেলে না।
তাঁর কাঁধে জাতীয় দলের দায়িত্ব। আবেগকে পেছনে ঠেলে, প্রিয় সন্তানদের মুখগুলো মনের ভেতর লুকিয়ে চোয়াল শক্ত করে নামতে হয় মাঠে। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, অধিনায়কের ভাবনায় থাকে একটাই—জয়। গত নভেম্বর থেকে মাশরাফির নেতৃত্বে এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। তবে দিন শেষে তিনিও মানুষ; সন্তানের বাবা। মাঠের সেই কাঠিন্য কখনো ভেঙে পড়ে আবেগের ঢেউয়ে। মনের কোনো ভেসে ওঠে কন্যা হুমায়রা আর আট মাসের ছেলে সাহেল মুর্তজার মুখ।
গত মাসে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পর কলকাতার একটি দৈনিকে লিখল, ম্যাচ শেষে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে ধোনির কাছে নাকি মুস্তাফিজকে নিয়ে গিয়েছিলেন মাশরাফি। আইপিএলে খেলার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে। খবরটা বেশ হইচই ফেলেছিল বাংলাদেশে। মাশরাফি পরে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, এমন কিছুই ঘটেনি। এ প্রশ্নের উত্তরটাও দিলেন তাঁর মতো করে, ‘বাসায় ছেলে-মেয়ের মুখই দেখার সময় পাচ্ছি না! অন্য কোথাও যাওয়ার তো সুযোগই নেই।’
হয়তো কথাটায় শ্লেষ আছে। কিন্তু চাইলে এর মধ্যে আকুতিও খুঁজে পেতে পারেন। বোঝায় যায়, ছেলে-মেয়ের জন্য মনটা তাঁর কতটা ব্যাকুল থাকে। ছেলেটা হয়তো হামাগুড়ি দেয়। ফোকলা দাঁতে হাসি দিয়ে ইশারায় বাবাকে অনেক কিছুই বলে। কখনো আবার কোমল আঙুলগুলো দিয়ে বাবার তর্জনিটা আটকে ধরে। বাবাকে ছাড়বে না কিছুতেই। তবুও বাবাকে যেতে হয়। পিতা-পুত্রের রচিত পৃথিবীর সেরা দৃশ্যটা হৃদয়ে তুলে রেখে মাশরাফিকে নামতে হয় মাঠে।
এই তো, গত বিশ্বকাপেই কী এক কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়লেন। মাত্রই কিছু​দিন আগে পৃথিবীতে আসা ছেলেটা ভীষণ অসুস্থ। হাসপাতালেও ছিল অনেক দিন। মাশরাফি তখন বিশ্বকাপে। এক দিকে সন্তান, অন্য দিকে দেশ—এক বাবার কাছে এর চেয়ে কঠিন পরীক্ষা আর কী হতে পারে! একবার ভেবেছিলেন দেশেই ফিরে আসবেন। কিন্তু আবার তাকালেন দলের দিকে। দলটাকেও যে ভালোবাসেন সন্তানের মতো! মাশরাফি বুকে কষ্ট চেপে থেকে গেলেন অস্ট্রেলিয়াতেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের এ এক বোহেমিয়ান জীবন!
আর তাই খেলার ব্যস্ততা, অধিনায়ক হিসেবে নানা দায়িত্ব-প্রতিশ্রুতি রক্ষা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি—এত কাজের ভিড়ে ঠিকই সময় বের করে নেন পরিবারের জন্য। কেবল মাঠেই নন, সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব পালনেও ভীষণ সচেতন। মেয়ে হুমায়রার স্কুল থাকলে সকাল আটটায় ঘুম থেকে উঠে পড়বেন। ম্যাচ না থাকলে মেয়েকে নিজেই স্কুল নামিয়ে দিয়ে অনুশীলন করতে মাঠে যাবেন। ছেলে-মেয়েকে মানুষ করাই যে তাঁর সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে একজন জানতে চাইলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১-১ করার পর এখন সিরিজ জয়টা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল কি? মাশরাফির জবাব, ‘প্রতিটি দিনই একেকটা চ্যালেঞ্জ। আর চ্যালেঞ্জ বলতে বলতে বুঝি, আমার ছোট্ট ছেলে-মেয়ে আছে। তাদের মানুষ করাই আমার চ্যালেঞ্জ। বাকি আর যা আছে, কোনো কিছুই আমার কাছে চ্যালেঞ্জ মনে হয় না।’
মাঠে কেবল নেতৃত্বেই নয়, মাশরাফির কথায় কী এক জাদু আছে! মন্ত্রমুগ্ধের মতে কেবলই শুনতে হয়। একটি বিজয়ী দলের অধিনায়কের কাছে সন্তানদের মানুষ করার চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিছু নেই—পৃথিবীর আর কোনো অধিনায়ক এমন উত্তর দিতেন কিনা সন্দেহ! এরপর বিষয়টি কি আর খেলার চৌহদ্দিতে আটকে থাকে? এত বড় দর্শন যিনি লালন করেন, তিনি কেবল বড় ক্রিকেটার নন, বিরাট মাপের মানুষও।

Source: http://www.prothom-alo.com/sports/article/577141/
             জুলাই ১৩, ২০১৫
Md. Habibur Rahman
Officer, Finance & Accounts
Daffodil International University (DIU)
Corporate Office, Daffodil Family
Phone: +88 02 9138234-5 (Ext: 140)
Cell: 01847-140060, 01812-588460

Offline asitrony

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 547
    • View Profile
Hats off @ Masrafee....