হতাশায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় মস্তিষ্ক...
হতাশাগ্রস্থ থাকলে তা মস্তিষ্কের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে এবং মস্তিষ্কের নতুন স্মৃতিধারণে সহায়তা করা হিপোক্যাম্পাস নামক অঙ্গের ক্ষতিসাধন করে। সম্প্রতি মলিকিউলার সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা রিপোর্টে এ তথ্য জানা যায়।
অনেকদিন ধরেই হতাশার বিরুপ প্রভাব নিয়ে গবেষণা চলে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কখনোই এ ব্যাপারে খুব একটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এবার প্রায় ৯ হাজারা মানুষের উপর এই গবেষণা চালানো হয়। ব্রেন এন্ড মাইন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরে ইয়ান হিকি একে ‘সফলতার নতুন মাত্রা’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এখন আমরা সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে ক্রমাগত হতাশ থাকার ব্যাপারটি মানুষের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।’
২১ বছর বয়সের আগে থেকে যারা হতাশ মূলত তাদেরই হিপোক্যাম্পাল বেশি সংকুচিত হয়ে যায়। তবে হতাশায় যে তা ক্ষতিগ্রস্থ হয় তা নিশ্চিত।কিন্তু অল্প সময়ের হতাশায় এটি কোনো প্রভাব ফেলে না। দীর্ঘ সময়ের হতাশাই হিপোক্যাম্পাল সংকুচিত হওয়ার মূল কারণ।
ই্উরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৭২৮ জন মানুষের মস্তিষ্কের ছবি নিয়ে গবেষণা করেন। তারা ৭ হাজার ১৯৯ জন সুস্থ মানুষদের মস্তিষ্কের সঙ্গে তাদের তুলনা করেন। এক্ষেত্রে তারা মানসিক ভারসাম্য নিয়ে গবেষণা করা এনিগমা গ্রুপের তথ্য সংগ্রহ করেন। সাইন্টিয়া’র অধ্যাপক ফিলিপ মিশেল বলেন, সুস্থ মানুষের মস্তিষ্ক এর সঙ্গে হতাশাগ্রস্থ মানুষের পার্থক্য খুব স্পষ্টভাবেই এর পরিবর্তন বলে দেয়।
গবেষণায় দেখা যায় মস্তিষ্কের অন্য কোনো অংশ হতাশায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় না শুধুমাত্র হিপোক্যাম্পালই হতাশার মাধ্যমে সংকুচিত হয়ে যায়। আর এটি মানুষের আবেগের অংশ। এছাড়া স্মৃতিধারণ করাও এই অংশের কাজ। আর স্মৃতিধারণ শুধু পাসওয়ার্ড মনে রাখাই নয় মন্তব্য করে অধ্যাপক হিকি বলেন, স্মৃতি বলতে আপনার প্রত্যেকটি মুহূর্তকে বোঝায়। পৃথিবীতে আপনার অস্তিত্বকেই বোঝায়।
অন্যান্য প্রাণীর উপর হিপোক্যাম্পাসের সংকোচন নিয়ে গবেষণা করে দেখা যায়, তাদের শুধু স্মৃতিভ্রমই ঘটে না। তাদের আচার-আচরণেই আসে আমূল পরিবর্তন।
মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের পল ফিতজার্যাংল্ড মনে করেন এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিস্কার। এর মাধ্যমে মানসিক চিকিৎসা ভবিষ্যতে আরো উন্নত হবে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়না আমরা খুব তাড়াতাড়ি এর সুফল পেতে শুরু করবো। কিন্তু মানসিক চিকিৎসায় এটি আমাদের অনেক সাহায্য করবে।’