স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ম্যাজিক শিখে নিন

Author Topic: স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ম্যাজিক শিখে নিন  (Read 878 times)

Offline imran986

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 375
  • If you don't try, Allah will not help you too
    • View Profile
প্রিয় বন্ধুর সাথে দেখা হলো কিন্তু নাম মনে পড়ছেনা। আবার ড্রয়ারের চাবি কোথায় রেখেছেন তা ভুলে সারাবাড়ি মাথায় তোলা ইত্যাদি আমাদের জীবনে হরহামেশাই ঘটে। কখনও তা বড়ো আকার ধরণ করে। তখনই হয় বিপত্তি।

বয়সের সাথে সাথে স্মৃতিশক্তির ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া স্বাভাবিক শারীরিক বৈশিষ্ট্য। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে একজন মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে থাকে। অনেকেই এটিকে রোগ ভেবে ভুল করেন। সবসময়ই এটি রোগ নয়। আবার বয়স ছাড়াও কখনও কখনও ভুলে যাওয়ার বাতিক লক্ষ্য করা যায়। মাঝে মধ্যে ভুলে যাওয়া মানেই স্মৃতিশক্তির কঠিন সমস্যা নয়। এক নজরে দেখে নিন বয়স ছাড়াও কি কি কারণে ভুলে যাওয়ার সমস্যা বা স্মৃতিভ্রংশ হতে পারে।

০ পারিবারিক ঝামেলার আধিক্য

০ মাথায় আঘাত

০ থাইরয়েডের সমস্যা

০ ডায়াবেটিকস

০ হাই কোলেস্টরল

০ ক্লান্তি

০ বিষন্নতা

০ নিঃসঙ্গতা

ভুলে যাওয়ার বিভিন্নতা

বিভিন্নরকমভাবে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে

০ সাম্প্রতিক ঘটনা ভুলে যাওয়া এবং চেষ্টা করেও মনে করতে না পারা

০ কথা বলার সময় বহুল ব্যবহৃত শব্দ মনে করতে না পারা

০ পরিচিত রাস্তা ভুলে যাওয়া

০ কোনও জিনিস যে জায়গায় রাখার কথা সেখানে না রেখে সম্পূর্ণ অন্য জায়গায় রাখা

০ কাজের প্ল্যান করতে না পারা অথবা প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করতে না পারা

০ সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনিচ্ছা ০ অজানা জায়গা সম্পর্কে অহেতুক আশংকা

০ নিয়মিত অভ্যাসমূলক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার প্রবণতা ০ ব্যক্তিত্বের নেগেটিভ পরিবর্তন ইত্যাদি।

ভুলে যাওয়া যখন রোগ

ভুলবশত ভুলে যাওয়া এক দুইবার হলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে বারবার হতে থাকলে অবশ্যই সেটা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। যে কোন ধরনের ভুলে যাওয়ার মেডিকেল নাম অ্যামনেজিয়া। এর আবার নানা ভাগ আছে।

অ্যালজাইমার্স ঃ এই রোগে সাধারণত মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের এই রোগ হয়। তবে ৮০ বছরের উর্ধ্বে এই রোগের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বংশগত কারণে ষাটের আগেও এই রোগ হতে পারে। থাইরয়েড নিঃসরণ হ্রাস পেলেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় কথা বলতে সমস্যা হওয়া, হাত পায়ের দ্বারা সাধারণ কাজ করতে না পারা, এইমাত্র যা করলেন বা বললেন তা ভুলে যাওয়া, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় যাবেন মনে করতে না পরা ইত্যাদি।

ডিমেনসিয়া ঃ এই রোগ বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কের কোষ বা নিউরণগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে। ফলে স্মৃতিভ্রংশ হয়। ডিমেনসিয়ার বিশেষত্ব হলো ভুলে যাওয়ার সাথে সাথে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ঘটে। কারণ মস্তিষ্কের সামনের অংশ ব্যক্তিত্ব গঠনে সাহায্য করে। ডিমেনসিয়া রোগে এই অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফলে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হয়। সাধারণত ৮০ বছরের পর ডিমেনসিয়া হয়। তবে অনেক সময় নিজের অজান্তেই মস্তিস্কে ছোট ছোট স্ট্রোকের ফলে কোষ শুকিয়ে যেতে থাকে। সেক্ষেত্রে ৮০’র আগেও ডিমেনসিয়া হতে পারে।

প্রতিকার

০ মস্তিষ্কের নিউরোসেল সক্রিয় রাখার চেষ্টা করতে হবে।
০ শরীর সচল রাখতে হবে ফলে তা মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ঘটাবে
০ মাথায় বড় আঘাত থেকে সতর্ক থাকতে হবে
০ রক্তচাপ, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে
০ চর্বি কম খেতে হবে
০ ধূমপান সর্বাগ্রে বর্জনীয়
০ বই পড়ার অভ্যাস ডিমেনসিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে

মনে রাখার ম্যাজিক

প্রিয় পাঠক আবার ভেবে বসবেন না যে কোনো ম্যাসিজ শিখিয়ে দিচ্ছি। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে মস্তিষ্কের গঠন বিশ্লেষণ করে একটি পন্থা আবিষ্কৃত হয়েছে। যার নাম নেমোনিক্স। এটিকেই মগজাস্ত্রের তুরুপের তাস বলা হয়। নাম, তারিখ, তালিকা সবকিছু মনে রাখার এটি এক অনন্য পদ্ধতি। তবে এজন্য তুখোড় বুদ্ধিমান বা মোটাফ্রেমের চশমা পরে থিতু হবার প্রয়োজন নেই। এর প্রাথমিক ব্যবহার বুঝতে পারলেই আপনি অনুভব করবেন কেন এটিকে ম্যাজিক বলা হয়েছে। নেমোনিক্স বহুরকম হয় তবে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পন্থা হচ্ছে কল্পনা এবং অনুষঙ্গ। এই পদ্ধতিতে আপনি যদি কারও নাম মনে রাখতে না পারেন তবে তার নামের সাথে মিল রেখে যেকোনো পরিচিত বস্তুর ছবি আঁকুন আপনার কল্পনায়। একবার যদি কল্পনার জাল বুনে ফেলতে পারেন তবে তার নাম ভোলার চান্স থাকবেনা বললেই চলে।

আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে রোমান রুম পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে আপনি যা মনে রাখতে চাচ্ছেন তার সাথে পরিচিত একটি প্রেক্ষাপটে কল্পনা করুন। ধরা যাক আপনি সদাই করতে গিয়ে কাগজ আর পেন্সিল কিনবেন। চিন্তা করুন, একটি বাচ্চা কাগজ ছিড়ে কুটি কুটি করছে আর পেন্সিল দিয়ে এঁকে সারাবাড়ির দেয়াল নষ্ট করছে। দেখবেন সহজেই মনে রাখতে পারছেন।

আরও করণীয়

০ মস্তিষ্ক সজাগ রাখুন। খবরের কাগজ পড়ুন, সামাজিক অনুষ্ঠানে যান, সকলের সঙ্গে মিশুন
০ নিয়মিত অনুশীলন করুন
০ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
০ রক্তচাপ ও কোলস্টেরল নিয়মিত পরীক্ষা করুন
০ কাঁচা লবন কম খাবেন
০ রাতে সারাদিনের ঘটনা মনে করার চেষ্টা করুন
০ কবিতা পড়ুন, গান শুনুন, ছবি দেখুন
০ মন খুলে হাসুন। হাসতে পারলে আপনি ফুরফুরে থাকবেন।
...........................
Md. Emran Hossain
Coordination Officer
Department of Nutrition and Food Engineering (NFE)
Daffodil International University