Entertainment & Discussions > Cricket

তাঁর রেকর্ড ভাঙতে পারবে না কেউই

(1/1)

Tofazzal.ns:
ক্রিকেটার তাঁকে হতেই হতো। ক্রিকেট যে রক্তে। বাবা আবুল হোসেন ছিলেন ক্রিকেটার। মেহরাবের চাচা আজহার হোসেন খেলেছেন জাতীয় দলে, ওয়ানডেতে করেছিলেন বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ফিফটিও। আর তাঁর ভাস্তে মেহরাব হোসেন বাংলাদেশের হয়ে করলেন প্রথম সেঞ্চুরি। লাল-সবুজের জার্সিতে হবে সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি, গড়া হবে কীর্তির পর কীর্তি। তবুও অক্ষয় থাকবে এ রেকর্ডটি। প্রথমের কীর্তি যে ভাঙা যায় না কখনোই!

১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ মেরিল ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই সেঞ্চুরির কথা যত শোনা যায়, ততই অনুভব হয় প্রথম শোনার শিহরণ। স্মৃতির ভেলায় চড়ে মেহরাবও নিয়ে গেলেন ১৬ বছর আগের সেই বিকেলে, ‘কয়েক ম্যাচ আগেই কেনিয়ার বিপক্ষে ৯৫ করে আউট হয়েছিল বিদ্যুৎ (শাহরিয়ার হোসেন)। ইনিংসটা দেখি দর্শক হয়ে। তখন চিন্তা করছিলাম, এ জায়গায় থাকলে সেঞ্চুরি করেই ফিরতাম। এরপর জাভেদের জায়গায় একাদশে সুযোগ পেলাম। সেঞ্চুরি করার উৎসাহটা পেয়েছিলাম আসলে বিদ্যুতের ওই ইনিংস থেকেই। সেঞ্চুরির পর বাবার কথাই বেশি মনে হচ্ছিল। কারণ, ১৯৯০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চাচা যখন বাংলাদেশ দলের হয়ে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করলেন, বাবা জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘সেঞ্চুরি করতে পারবা না?’’ না বুঝেই হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়েছিলাম। সেঞ্চুরির পর মনে হয়েছিল, বাবার কথা রাখতে পারলাম।’

সেঞ্চুরির ওই ম্যাচে শাহরিয়ারের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে গড়েছিলেন ১৭০ রানের জুটি। যেটি আজও উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। বাংলাদেশের পক্ষে আরেকটি অমর-অক্ষয় রেকর্ডও আছে তাঁর। বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটির। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ালশ-ডিলনদের বিপক্ষে করেছিলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪। তারকায় ঠাসা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪২। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ঘটেছিল এক স্মরণীয় ঘটনা। শুনুন মেহরাবের মুখেই, ‘ম্যাচ শেষ হওয়ার পর দেখি ওদের ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে মার্ক ওয়াহ। বললাম, ‘‘তোমার সঙ্গে একটা ছবি তুলতে পারি?’’ সম্মতি দিল। এরপর অবাক করে দিয়ে বলল, যদি ভুল না করি, তুমি বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান।’

ক্যারিয়ারটা হতে পারত আরও সমৃদ্ধ। সেঞ্চুরি কেবল ওই একটা নয়, করতে পারতেন আরও। কেন পূর্ণতা পেল না আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার? কেনইবা অর্ধযাত্রায় টানতে হলো সমাপ্তির রেখা? প্রশ্নের পর প্রশ্ন। জবাব যেন তৈরিই ছিল মেহরাবের ঠোঁটের ডগায়, ‘বেশ কিছুদিন চোটে ভুগেছিলাম। আর ফিরে আসতে পারিনি। অনেকে বলেন, শৃঙ্খলার সমস্যা ছিল। স্বীকার করি, দুষ্টু ছিলাম। তবে ওই সময় ক্রিকেটে এখনকার মতো পেশাদারি ছিল না। খেলাটাকে পেশাদারির চোখে না দেখায় আমাদের সময়ের খেলোয়াড়েরা ১৯৯৯ থেকে ২০০৩—এ চার বছরেই হারিয়ে গেল। সুযোগ-সুবিধাও খুব বেশি ছিল না। এখনকার মতো বছর জুড়েও খেলা হতো না। দুই তিনটা টেস্ট আরও কয়েকটা ওয়ানডে। একটা সিরিজ বা টুর্নামেন্ট শেষে মাসের পর মাস বসে থাকা। ছিল না ফিটনেস নিয়ে কাজ করার তেমন ব্যবস্থা।’

১৯৯৮ সালের মে মাসে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক, পাঁচ বছর পর আরেক মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সমাপ্তি। খেলেছেন ১৮ ওয়ানডে, ৯ টেস্ট। ক্যারিয়ারটা বড় না হওয়ায় আক্ষেপ কাজ করে না? মেহরাবের উত্তর, ‘ক্যারিয়ার হয়তো বড় হতে পারত। তবে এ নিয়ে আক্ষেপ কাজ করে না। জাতীয় দলে খেলব, এতটুকুই স্বপ্ন ছিল। অর্জনের আরও অনেক কিছু আছে, ভাবিনি। কোনো পরিকল্পনাই ছিল না তখন।’

ক্রিকেট ছেড়েছেন অনেক দিন হলো। মাঝে বেশ কয়েক বছর যুক্ত ছিলেন পারিবারিক ব্যবসায়। তবে বেশি দিন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে পারেননি। আবার ফিরে এসেছেন। ভবিষ্যতেও ক্রিকেটে জড়িয়ে থাকার ইচ্ছে, ‘মাঝে সাত বছর জড়িয়ে ছিলাম পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে। তবে পেশাটা উপভোগ করতে পারছিলাম না। আবার ক্রিকেটে ফিরে এলাম। এমনিতে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছি। আসলে কোচিং নিয়েই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।’

তিন ছেলের বাবা মেহরাব একটি স্বপ্ন লুকিয়ে রেখেছেন বুকের ভেতর। স্বপ্নাতুর চোখে আওড়ে যান সে স্বপ্নের কথা, ‘বড় ছেলের ক্রিকেটে খুব একটা আগ্রহ নেই। তবে ছোট দুই ছেলের ক্রিকেটের প্রতি বিরাট আগ্রহ। বিশেষ করে ছোটটি। ওর বয়স এক বছর তিন মাস। কথা শেখেনি। তার ব্যাট ধরার ভঙ্গি দেখে আশ্চর্য হয়ে যেতে হবে। আমার চাচা করেছিলেন হাফ সেঞ্চুরি, আমি সেঞ্চুরি। স্বপ্ন দেখি, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করবে আমার ছেলে।’

Nazmul Hasan:
Thus the Cricket of Bangladesh is going ahead contributing for the "maidens"

Navigation

[0] Message Index

Go to full version