
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভোগেননি এমন মানুষ নেই। মানুষের বিবর্তনে এর ইতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। তবে এসব যখন কারো জীবনের বিভিন্ন অংশে ঝামেলার সৃষ্টি করে, তখন একে মানসিক অবস্থার বিপর্যয় বলে অভিহিত করেন বিশেষজ্ঞরা। এমন পরিস্থিতিতে কাছের মানুষরাই সান্ত্বনা বা পরামর্শ দিতে এগিয়ে আসেন। 'অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার'-এ যাঁরা ভুগছেন, অতি সাধারণ কিছু কথা উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। দেখে নিন এমনই চারটি বিষয়, যা আমরা অহরহ বলে থাকি।
১. 'তুমি একটু শান্ত হও'
যিনি উৎকণ্ঠায় বিপর্যস্ত, তাঁকে শান্ত হতে বলা নেহাত বোকামি। এটা সর্দিতে আক্রান্ত কাউকে নাক টানতে নিষেধ করার মতোই। পরিস্থিতি সামলাতে যিনি ব্যাপক মানসিক চাপে রয়েছেন, তাঁকে এক কথায় শান্ত হতে বলা তাঁর অবস্থাকে হেয় করে দেখার মতো। বরং তাঁর কী হয়েছে এবং কিভাবে এর সমাধান বের করা যায়-এসব বিষয়ে কথা বলুন। এতে মানুষটি কিছুটা মানসিক বল ফিরে পাবেন।
২. 'যা নিয়ে তুমি অস্থির তা কোনো ব্যাপার না'
যে বিষয় নিয়ে ব্যাপক পেরেশানিতে রয়েছেন, তা আপনার কাছে নিশ্চয়ই অতি গুরুত্ব। একে কেউ 'কোনো বিষয়ই নয়' বলে উড়িয়ে দিলে আপনার মোটেও ভালো লাগবে না। একই ঘটনা উদ্বিগ্ন মানুষটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
৩. 'আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি'
আমরা অহরহ অন্যদের এ কথাটি বলে থাকি। তবে এটা কেবল তখনই বলা যায়, যখন একই অভিজ্ঞতা আমাদের জীবনেও অর্জিত হয়। অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার মানুষের জীবনটাকে এলোমেলো করে দেয় এবং একে বহন করে চলা প্রতিদিনের সংগ্রামে পরিণত হয়। যদি সান্ত্বনাদাতার অভিজ্ঞতা না থাকে, তবে ওই মানুষের অবস্থা কখনোই বোধগম্য হবে না। আর বিপদগ্রস্ত মানুষটি যদি বোঝেন যে আপনি অবস্থা না বুঝেই এ কথা বলছেন, তবে তাঁর মনে আপনার সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি হবে।
৪. 'ঠিক বলেছ, এটা ঘটতে পারে'
এমন কিছু বলবেন না, যা আতঙ্কগ্রস্ত মানুষটির মনে আরো ভয় ঢুকিয়ে দিতে পারে। যেমন : যে মানুষটির উচ্চতাভীতি রয়েছে, তাঁর কাছে ছাদ থেকে পড়ে কারো মৃত্যুর ঘটনা বর্ণনা করতে যাবেন না। মানুষটির জীবনে কোনো বাজে ঘটনা ঘটেছে বা ঘটার আশঙ্কা থাকলেও তাঁকে বলতে যাবেন না যে এটা ঘটতে পারে।
--হাফিংটন পোস্ট অবলম্বনে সাকিব সিকান্দার
http://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2015/08/30/262652#sthash.dwVIZU1k.dpuf