Famous > Person
অগাস্ট কোঁৎ
(1/1)
Ishtiaque Ahmad:
ফরাসি চিন্তাবিদ, সামজবিজ্ঞানের জনক ও প্রত্যক্ষবাদ বা দৃষ্টবাদের প্রবক্তা। ফ্রান্সের মঁপেলিয়ে শহরের এক ক্যাথলিক পরিবারে ১৭৯৮ সালে কোঁৎ (Auguste comte)-এর জন্ম। ১৮১৪ সালে প্যারিসের একোল পলিটেকনিকে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। কিন্তু প্রগতিপন্থী ছাত্ররাজনীতিতে নেতৃত্বদানের জন্য অন্য ছাত্রদের সঙ্গে তিনিও এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১৮১৬ সালে বহিষ্কৃত হন।
১৮১৭ সালে ফ্রান্সের সমাজবাদী নেতা ‘স্যাঁ-সিম’র একান্ত সচিব নিযুক্ত হন। কিন্তু তার সঙ্গে মতের অমিল হওয়ায় ১৮২৪ সালে পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি জনসমক্ষে আধুনিক সামজভাবনামূলক বক্তৃতাদানের কর্মসূচি গ্রহণ করেন। ১৮২৬ সালে প্রত্যক্ষবাদ বা দৃষ্টবাদের ওপর প্রথম বক্তৃতা দেন। তার মতে, যা অভিজ্ঞতাসাপেক্ষ বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় এমন কোনো কিছুর অস্তিত্বে বিশ্বাস না করাই প্রত্যক্ষবাদ বা দৃষ্টবাদ (পজিটিভিজম)। এ সম্পর্কে তার প্রথম গ্রন্থ ‘কুর দ্য ফিলসফি পজিতিভ’ (‘দ্য কোর্স অফ পজিটিভ ফিলসফি’ ১৮৩০-৪২) ছয় খ-ে এবং দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘সিস্ত্যাম দ্য পলিতিক পজিতিভ’ (‘সিস্টেম অফ পজিটিভ পলিটি’, ১৮৫১-৫৪) চার খ-ে প্রকাশিত হয়।
কোঁতের মতে, সামাজিক গতি বা প্রগতি মানুষের জ্ঞানের বিকাশের সঙ্গে একান্তভাবে যুক্ত। তিনি বিজ্ঞানের সমগ্র বিকাশের একটি ইতিহাস তৈরির চেষ্টা করেন এবং তিনটি স্তর চিহ্নিত করেন। জ্ঞানের এ তিনটি স্তরের মধ্য দিয়েই মানুষকে তথা সমাজকে অগ্রসর হতে হয়। তিনি বলেন: ধর্মীয় যুগই জ্ঞান বিকাশের আদি যুগ; এ যুগে রহস্যের ব্যাখ্যায় মানুষ অতিপ্রাকৃত শক্তি বা ঈশ্বরের শরণাপন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় যুগ দার্শনিক যুগ; এ যুগে চরম সত্তার অস্তিত্বের ভিত্তিতে মানুষ ও সমাজের ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা চলেছে। সর্বশেষ যুগটি হলো প্রত্যক্ষবাদ বা বিজ্ঞানের যুগ; এ যুগে অতি প্রাকৃত শক্তি নয়, চরম সত্তা নয়, প্রত্যক্ষ প্রকৃতিকেই মানুষ চরম বলে মনে করছে এবং তা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের মাধ্যমে। বিজ্ঞানই প্রত্যক্ষ প্রকৃতির যথাযথ জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। প্রত্যক্ষ প্রকৃতিই চরম সত্তা, একে অতিক্রম করার ক্ষমতা মানুষের নেই।
সোশিওলজি (sociolog) অর্থাৎ সমাজবিদ্যা শব্দটি বর্তমানে প্রচলিত অর্থে কোঁৎই প্রথম ব্যবহার করেন। সামাজিক সব কিছুকে তিনি বিচার করেছেন স্থিতি ও গতির দিক থেকে। তার মতে, সামাজিক কাঠামোর সঙ্গে সাময়িক ধ্যান-ধারণার সম্পর্কে স্থিতির দিক থেকেই বিবেচনা করা উচিত, এটি সামাজিক শৃঙ্খলার সহায়ক। সামজের উন্নতিকে তিনি গতির দিক থেকে পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেন।
কোঁতের মতে, ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু ঈশ্বর নয়, মনুষ্যত্ব। মানবপ্রেমের ওপরই তিনি অধিক গুরুত্বারোপ করেন। স্বভাবে তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা মানুষ। সারাজীবনই তাকে প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হয়েছে। নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে তিনি গবেষণা কাজ চালান। ১৮৫৭ সালে তিনি পরলোকগমন করেন।
monirulenam:
Good Sharing
Navigation
[0] Message Index
Go to full version