ম্যালেরিয়া ঠেকাচ্ছে নোবেলজয়ী ওষুধ

Author Topic: ম্যালেরিয়া ঠেকাচ্ছে নোবেলজয়ী ওষুধ  (Read 1002 times)

Offline Ishtiaque Ahmad

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 136
  • Test
    • View Profile
পরজীবী গোলকৃমি সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত  ওষুধ ম্যালেরিয়া প্রতিরোধেও সহায়ক হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

আইভারমেকটিন নামের নতুন ওই ওষুধ উদ্ভাবনের জন্য আইরিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম সি ক্যাম্পবেল ও জাপানি বিজ্ঞানী সাতোশি ওমুরা এ বছর চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পান।

এরই মধ্যে বুরকিনা ফাসোতে পরীক্ষামূলকভাবে আইভারমেকটিন ব্যবহারের পর দেখা গেছে শৈশবে ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১৬ শতাংশ কমে গেছে।

‘আমেরিকান সোসাইটি অব ট্রোপিকাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন কনফারেন্স’ এ  বিজ্ঞানীরা বলেন, ওষুধটি রক্তপানকারী মশাদের জন্য বিষাক্ত।

গবেষণার এ ফলকে চমকপ্রদ বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এখনও এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তারা।

পরজীবী গোলকৃমি সংক্রমণে এরই মধ্যে আইভারমেকটিন ওষুধের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ গোলকৃমি সংক্রমণের কারণে ফাইলেরিয়া (গোদরোদ) ও রিভার ব্লাইন্ডনেসে আক্রান্ত।

প্লাজমোডিয়াম নামে অন্য একটি পরজীবী ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী। স্ত্রী মশা এই পরজীবী বাহক।

গবেষকরা দেখেছেন, যেসব মানুষ সম্প্রতি আইভেরমেকটিন ওষুধ সেবন করেছে তাদের রক্ত পান করার পর প্লাজমোডিয়াম বিস্তারকারী স্ত্রী মশা দুর্বল হয়ে যায় অথবা মারা পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুরকিনা ফাসোর একটি বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইভেরমেকটিন ব্যবহার করে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

তারা আটটি গ্রাম বেছে নিয়েছে এবং সেগুলোর মধ্যে চারটি গ্রামের সব বাসিন্দাকে তিন সপ্তাহ পরপর আইভারমেকটিন ওষুধ দিচ্ছে।

জুলাই মাসে এ কার্যক্রম শুরু হয়।  আগামী সপ্তাহে তা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

কলরাডো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. ব্রিয়ান ফয় বিবিসি’কে বলেন, "প্রাথমিক পরীক্ষার ফল বেশ ভালো। যেসব শিশুকে পরীক্ষামূলকভাবে আইভারমেকটিন দেয়া হয়েছে তাদের ম্যালেরিয়া কম হয়েছে।"

"খুব সম্ভবত আইভারমেকটিন গোলকৃমি এবং ম্যালেরিয়ার পরজীবী উভয়কেই একই পন্থায় আক্রমণ করে। এ ক্ষেত্রে উভয় রোগের চিকিৎসা একসঙ্গে করার একটি বড় সুযোগ এটি।"

তবে ব্যাপকভাবে আইভারমেকটিন ব্যবহারের ফলে উভয় পরজীবী যদি ওষুধটির বিরুদ্ধে লড়াই করা শিখে যায় তবে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ডা. ফয় বলেন, "শুধু গোলকৃমির ক্ষেত্রেই নয় বরং মশাদের ক্ষেত্রেও প্রতিরোধ করতে শিখে যাওয়া নিশ্চিত ভাবেই উদ্বেগের বিষয়। সে কারণে আমাদের অবশ্যই এ বিষয়ে আরও যত্নবান হতে হবে।"

২০১০ সালের পর বিশ্বে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাওয়ার সংখ্যা ৬০ শতাংশ কমে গেছে।

 কিন্তু এ সাফল্য এখন হুমকির মুখে। কারণ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় আর্টেমিসাইনিন ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ম্যালেরিয়ার পরজীবীরা ধীরে ধীরে এই ওষুধ প্রতিরোধের সক্ষমতা অর্জন করছে।