দুটি প্রশ্ন নিয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচের বিরতিতে যাচ্ছেন চেলসির খেলোয়াড়েরা—১. ক্লাবে ফেরার পর ভাগ্যটা কি বদলাবে তাঁদের? ২. ডাগ-আউটে কোচ হোসে মরিনহোই থাকবেন, নাকি অন্য কেউ?
প্রশ্ন দুটি নিয়ে যদি এ মুহূর্তে একটা জরিপ করা হয়, তাহলে বোধ হয় নেতিবাচক উত্তরই বেশি আসবে। এমনই হতশ্রী চেলসির ফর্ম। গতবারের প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা যে এরই মধ্যে সাত ম্যাচে হেরে গেছে! প্রথম ১২ ম্যাচ থেকে পেয়েছে মাত্র ১১ পয়েন্ট।
লন্ডনের ক্লাবটির অবস্থা অনেকটা যেন আইসবার্গে ধাক্কা খাওয়া টাইটানিকের মতো। মাত্র পাঁচ মাস আগে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা নিয়ে উচ্ছ্বাস করা দলটি কি না এখন অবনমনের এক ধাপ ওপরে! মৌসুম শুরুর আগে যেখানে আলোচনার বিষয় ছিল ‘চেলসিকে হারাবে কে?’, তিন মাস না যেতেই সেটা উল্টে হয়ে গেল ‘চেলসির সঙ্গে হারবে কে?’ প্রায় একই দল, একই কোচ নিয়েও এমন বিপর্যয়ের ইতিহাস এর আগে দেখা যায়নি। প্রথম ১২ ম্যাচের সাতটিতে হার—ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের ইতিহাসে কোনো বর্তমান চ্যাম্পিয়নের এর চেয়ে বাজে শুরুর রেকর্ড নেই।
পরশু স্টোক সিটির মাঠে ১-০ গোলের পরাজয়টা হোসে মরিনহো ও তাঁর দলকে আরও অনেকগুলো অযাচিত ‘প্রথমে’র সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম এক মৌসুমে লিগে সাতটি ম্যাচ হারলেন মরিনহো। অথচ মাত্র নভেম্বর মাসই চলছে, লিগের ২৬টি ম্যাচ এখনো বাকি। ১৬ বছর পর এই প্রথম লিগে টানা তিন ম্যাচ হারল চেলসি। রোমান আব্রামোভিচ ২০০৩ সালে চেলসির মালিকানা কেনার পর এই প্রথম। সর্বশেষ যেবার লিগে এমন জঘন্য শুরু করেছিল, সেই ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে লিগ থেকে অবনমিতই হয়ে গিয়েছিল চেলসি।
চেলসি ফর্মে ফিরতে পারবে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে মরিনহো আর সুযোগ পাবেন কি না, সেটা বলতে পারবেন কেবল আব্রামোভিচই। এরই মধ্যে কার্লো আনচেলত্তি, ডিয়েগো সিমিওনে বা গাস হিডিঙ্কের মতো বড় সব নাম শোনা যাচ্ছে মরিনহোর বিকল্প হিসেবে। কোচ ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে চেলসির মালিক যেমন ‘উদার’, তাতে আন্তর্জাতিক বিরতির পরও মরিনহোকে ডাগ-আউটে দেখা গেলে সেটা ‘মিরাকল’ই হবে।
ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে স্টেডিয়াম-নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় স্টোকের ম্যাচটা দেখেছেন টিম হোটেলে বসে। ‘স্পেশাল ওয়ান’ তাই এই ম্যাচে ছিলেন ‘মিসিং ওয়ান’ হয়ে। চেলসির ডাগ-আউটে কি স্থায়ীভাবেই ‘মিসিং’ হয়ে যাচ্ছেন মরিনহো?