স্কোরে যতটা রান জমা হওয়ার কথা ছিল, ততটা হয়নি। ইমরুল কায়েসের ৭৬, নাসির হোসেনের ৪১ আর সাব্বির রহমানের ৩৩ ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান সেভাবে অবদানও রাখতে পারেননি। পুঁজি ২৪১ রানের। পারবে বাংলাদেশ?
ম্যাচের মাঝপথে ভবিষ্যদ্বাণী করাটা কঠিনই। তবে পরিসংখ্যান সাক্ষী মানলে আত্মবিশ্বাস নিয়েই বল হাতে মাঠে নামতে পারে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগে কমপক্ষে ২৪১ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মোট ১২ বার। সর্বশেষ পাঁচবার কমপক্ষে ২৪১ রান করেছে এমন কোনো ম্যাচেই দল হারেনি। বাংলাদেশ অবশ্য হেরেছেও চারবার। তবে পরিসংখ্যান আশার কথাই বলছে।
এ তো গেল আশার কথা। বাংলাদেশের ইনিংসে অবশ্য হতাশার ছবিটাই বেশি। উপযুক্ত পরিবেশে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেটা হেলাতেই হারিয়েছেন। বড় রানের তৃষ্ণা ছিল অনেকেরই। কিন্তু সেই তৃষ্ণা মেটানোর জন্য কার্যকর কিছুই করতে দেখা গেল না তাদের। সেট হয়েও আউট হওয়ার অপরাধে অপরাধী অনেকে। তামিম, মুশফিক, সাব্বির...।
এর মধ্যে দুজন দলকে টেনে নিয়ে গেছেন বলে রক্ষা। এর মধ্যে ইমরুলের কথাই বলতে হবে আলাদা করে। বিশ্বকাপের পর প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমেছেন। সেটাও দুই সতীর্থ দলে নেই বলেই অনেক সমীকরণ মিলিয়ে ফেরা। সেই ইমরুল ৮৯ বলে ৭৬ রান করেছেন। ছয়টি চার আর চারটি ছক্কা মেরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে ‘টেস্টের খেলোয়াড়’ ভাবাটা হয়তো অন্যায়ই।
‘টেস্টের ব্যাটসম্যান’ খোলসটা ছুড়ে ফেলতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। তবে ওই আক্রমণাত্মক মেজাজটাই সর্বনাশ করেছে পর পর দুটো ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে। না হলে প্রায় পাঁচ বছর পর দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরিটা পেয়েই যেতেন।
ইমরুলের ইনিংসটা লম্বা না হওয়ার ঝামেলাটা ভালোমতোই ভুগেছে বাংলাদেশ। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, তখনো কুড়ি ওভারের মতো খেলা বাকি। ১৫১ রানের সংগ্রহটা বেশ ভালো, তবে বাকিটা পথ পাড়ি দেওয়ার মতো যথেষ্ট ব্যাটসম্যান নেই। সবচেয়ে বড় কথা, বেশি উইকেট পড়ে যাওয়ার এই চাপটা সাব্বির-নাসিরদের সহজাত খেলা খেলতে দেবে না।
তা দেয়ওনি। ওভারে চারের একটু বেশি করে তোলা ষষ্ঠ উইকেটের এই জুটিটা ৪২ রানের জোগান দিয়ে ভাঙল সাব্বিরের বিদায়ে। ততক্ষণে অবশ্য স্লগ ওভার শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সাব্বির চলে যাওয়ায় নাসিরকেও অনেক হিসাব মিলিয়ে খেলতে হচ্ছিল। সেই হিসাব মেলাতে মেলাতেই মাশরাফির সঙ্গে ৩৫ বলে ৩৮ রানের জুটি। কিন্তু মাশরাফি-নাসিরের পর পর বিদায়, সঙ্গে আরাফাত সানিও। উইকেট হারানোর সেই ধাক্কাতেই শেষ চার ওভারে উঠল মাত্র ১৪ রান!