চলতি বছর মার্চে বিশ্বকাপে শেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন। এরপর টানা ৩টি হোম সিরিজে নির্বাচকদের বিবেচনার বাইরেই ছিলেন ইমরুল কায়েস। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান সিরিজে ভাগ্য ফিরেছে এই ওপেনিং ব্যাটসম্যানের; ইনজুরির কারণে সৌম্য সরকার ছিটকে পড়ায় দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি। আর সুযোগ পেয়েই ইমরুল বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি ফুরিয়ে যাননি। সোমবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭৬ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। সেই সুবাদে বাংলাদেশ সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে এক ম্যাচ হাতে রেখে, আর তিনিও হয়েছেন ম্যান অব দি ম্যাচ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে একাদশে ছিলেন না। তবে রবিবার রাতে সাকিব আল হাসান যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ায় সোমবার দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে হয়েছে ইমরুলকে। ভাগ্যক্রমে দলে জায়গা পেয়েই নিজের ব্যাটিং ক্ষমতার জানান দিয়েছেন ইমরুল। দলের হাল ধরেছেন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। বুঝিয়ে দিয়েছেন এখনো ওয়ানডেতে অনেক কিছুই দেওয়ার ক্ষমতা রাখে তার ব্যাট।
ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে তখন সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন ইমরুল। কিন্তু এ অবস্থায়ই দুর্ভাগ্যক্রমে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে। ৩১তম ওভারের তৃতীয় বলটি তুলে মারতে গিয়ে ক্রেমারের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি। আগের বলটিতেই লং অনে দুর্দান্ত ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। সিন উইলিয়ামসের বলে অনেকটা একইভাবে মারতে গিয়ে পরের বলেই লং অফে ধরা পড়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে খেলেছেন ৮৯ বলে ৭৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। যেখানে ছিল ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা।
ইমরুলকে ওয়ানডেতে বিবেচনায় না নেওয়ার চিন্তা যে একেবারে অযৌক্তিক ছিল, তাও নয়। সব শেষ গত মার্চে বিশ্বকাপে খেলেছেন ওয়ানডেতে। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে করেছেন ২ রান। ওই ম্যাচসহ বিশ্বকাপে ৩টি ম্যাচে খেলে কোনোটিতেই দুই অঙ্ক ছূঁতে পারেননি। এর আগের ৫ ইনিংসেও একই অবস্থা। সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ম্যাচের আগে টানা ৮ ম্যাচে ভাল স্কোর তো দূরে থাক; দুই অঙ্কেই যেতে পারেননি ইমরুল।
ওয়ানডেতে তিনি শেষ হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে (২০১৪ সালের ৪ মার্চ)। সেই হিসেবে প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় পর ওয়ানডেতে হাফসেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন ইমরুল।
অবশ্য টেস্টে ধারাবাহিক ইমরুল। রানের গড়ও তুলনামূলক ভাল। টেস্টে শেষ ১০ ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার। তাই ইমরুল যেন ক্রমেই টেস্ট ওপেনার হয়ে যাচ্ছিলেন অঘোষিতভাবে।
মূল সিরিজ শুরুর আগে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচেও ভালই খেলেছেন ইমরুল। করেছিলেন ৫২ রান। ওই ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন এনামুল হক বিজয়ও। তবে প্রথম ম্যাচে এনামুল কিংবা ইমরুলের উপর আস্থা না রেখে ওপেনিংয়ে লিটন কুমার দাসকে নামানো হয়েছিল তামিমের সঙ্গী হিসেবে। লিটন অবশ্য সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। আর তাতেই হয়তো দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুযোগ হয়েছে ইমরুলের।
রঙিন জার্সিতে মাঠে নেমেই ইমরুল তাই জানান দিয়েছেন ওয়ানডেতে এখনো তিনি ফুরিয়ে যাননি।