অটো হান(Otto Hahn)—পারমাণবিক শক্তির কারিগর

Author Topic: অটো হান(Otto Hahn)—পারমাণবিক শক্তির কারিগর  (Read 934 times)

Offline subrata.ns

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 255
  • Test
    • View Profile
    • https://www.daffodilvarsity.edu.bd/
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পূর্ববর্তী সময়! ইউরোপে থম থম পরিবেশ। জামার্নী থেকে পালাচ্ছে ইহুদিরা। আটো হান রসায়নবিদ। তার মগজে অণু-পরমাণু। রাজনীতির যুদ্ধ তাকে স্পর্শ করে না। তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু লিসা। লিসা মাইটনার। অসামন্য প্রতিভার বিজ্ঞানী। দুজন কাজ করে নিউক্লিয়ার রসায়ন নিয়ে। লিসাকে জামার্নী ছাড়তে হবে। হিটলারের শাসনামল লিসার জীবনের জন্য হুমকি। লিসা জন্মেছিল অষ্ট্রিয়ার ইহুদি পরিবারে।

১৯৩৮ সালের গ্রীষ্মে, লিসা, বার্লিন ছেড়ে চলে এলেন সুইডেন। অটো হান বার্লিনের ল্যাবরেটরিতে কাজে মগ্ন। ঈশ্বরের কাছে তার প্রার্থনা, কেউ যেন তার ল্যাবরেটরি গুড়িয়ে না দেয়। প্রটেকটেনিয়াম নামে একটি মৌল আবিষ্কার করে ইতিমধ্যে 'হান-লিসা' জুটি বিজ্ঞানে উজ্জ্বল চরিত্র। অটো হান আরো দূর যেতে চান। সে বছরের ডিসেম্বর। হান কাজ করছিলেন ইউরেনিয়াম নিয়ে। নিউট্রন কণা দিয়ে ইউরেনিয়ামকে আঘাত করলেই তিনি পাচ্ছেন দুটি ভিন্ন পরমাণু। ক্রিপটন(Kr) এবং বেরিয়াম(Ba)। হান কোন ভাবেই এই পর্যবেক্ষণ বুঝতে পারছেন না। চিঠি পাঠালেন বন্ধু লিসার কাছে। ১৯ ডিসেম্বর, ১৯৩৮ সাল। ইতিহাস পাল্টে যাওয়ার এক মুহূর্ত!

লিসা পদার্থবিদ্যা ও গণিতে অসাধারণ! হানের পর্যবেক্ষন সহজেই সমাধান করলেন। অটো হান যে বিক্রিয়া আবিষ্কার করেছেন সেটির নাম নিউক্লিয়ার ফিশান(Nuclear Fission) বিক্রিয়া। বিজ্ঞান এর পূর্বে এমন বিক্রিয়া দেখেনি। হান তার গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানের খ্যাতনামা জার্নাল নেচারে(Nature)। ১৯৩৯ সালের ০৬ জানুয়ারি সে আর্টিকেল প্রকাশ হয়। পৃথিবী খুঁজে পায় শক্তির এক নতুন উৎস! নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ায় প্রচুর পরিমান শক্তি উৎপন্ন হয়। কারণ প্রতিটি ইউরেনিয়াম পরমাণু ভেঙ্গে যখন দুটি ভিন্ন পরমাণু ক্রিপটন ও বেরিয়াম হয় তখন কিছু ভর হারিয়ে(হ্রাস) যায়। সেই ভর আইনস্টাইনের E=mC2 সূত্র অনুসারে, বিশুদ্ধ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
অটো হানের আবিষ্কার লুফে নেয় আমেরিকা। 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট' নামে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে ব্যায়বহুল প্রজেক্টে নিউক্লিয়ার ফিশনকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয় পারমাণবিক বোম। সে বোমের আঘাতে মানবেতিহাস থুবড়ে পড়ে ১৯৪৫ সালের ০৬ ও ০৯ আগস্ট। হিরোশিমা ও নাগাসাকি আমাদের কাছে এখনো যন্ত্রণা ও বিভিষীকার এক নাম! আটো হান কোন দিন ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি, তার আবিষ্কার নিয়ে মানবহত্যায় মেতে উঠবে রাজনীতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আটো হানকে আটক করে মিত্র শক্তি। তারা ভেবেছিল, হান, নাৎসি বাহিনীকে সাহায্য করেছে। যুদ্ধাপরাধ(War Crime) সন্দেহে তাকে বন্দি করা হয়। ভাগ্যকুলে অবশেষে তিনি অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পান।

অটো হানের আবিষ্কার পৃথিবীতে শক্তির নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পৃথিবীর উন্নত সব শহরগুলো টিকে আছে নিউক্লিয়ার ফিশান প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বিদ্যুৎ শক্তি দিয়ে। কম্পিউটারে যখন লিখছি, তখনো নিউক্লিয়ার ফিশান প্রক্রিয়ার উৎপন্ন বিদ্যুৎ শক্তি ব্যায় করেই লিখছি। বিজ্ঞানকে নিয়ে অপরাজনীতি করেছে রাজনীতির পাষণ্ডরা।
বিজ্ঞান সবসময় আছে মানুষের কল্যানেই।
Subrata Banik
Lecturer (Physics)
Department of General Educational Development

Offline Umme Salma Panna

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 140
  • Test
    • View Profile
This real story give me this realization that, the same thing can be make welfare or disaster, it only depends on its use.