কর্মজীবী মানুষের দিনের বেশিরভাগ সময়ই কাটে অফিসে। আর এ কারণে কলিগদের মাঝে নিজেকে প্রিয় হিসেবে উপস্থাপন করা জরুরি।
কারণ এর সাথে জড়িয়ে আছে আপনার ব্যক্তিত্ব। ক্যারিয়ারেরও অনেক বিষয়। কিন্তু কীভাবে আপনি নিজেকে সবদিক থেকে ফিট রাখবেন?
আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কিছু বিষয়। এগুলো অনুসরণ করতে পারলে আপনিও সহকর্মীদের কাছে হয়ে উঠতে পারবেন প্রিয়।
অফিসে যে কোনো সময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আপনার কল, বা মেসেজ আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার ফোনের রিংটোন যদি হয় কোনো গান বা অন্যকিছু, তখন আপনার সহকর্মীরা বেশ বিরক্তই হবে আপনার ওপর।
আপনার পছন্দের রিংটোন যাই হোক না কেন অফিসে অবশ্যই ভলিউম কমিয়ে রাখুন। ভালো হয় রিংটোন অফ করে রাখলে। কেননা নিরিবিলি একটা পরিবেশে কাজ করার সময় হঠাৎ উচ্চস্বরে রিংটোন বেজে ওঠা নিশ্চয়ই কোনো কাজের কথা নয়।
অফিসে বস বা অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং চলছে। তখন হঠাৎ আসা ম্যাসেজটি নিয়ে হামলে না পড়াই ভালো। যদি তা মিটিং রিলেটেড না হয়।
কেননা যে কোনো আলোচনার সময় মেসেজের দিকে মনোনিবেশ করলে অন্যরা আপনার দিকে অবশ্যই একটু বিরক্তিকর চোখে তাকাবে।
তাই ফোন বা ট্যাব যেখানেই মেসেজ আসুক না কেন মিটিং বা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময় এই কাজটি থেকে বিরত থাকাই ভালো।
প্রতিটি অফিসেরই একটি নির্দিষ্ট নিয়মকানুন ও এটিকেট থাকে। তা ভঙ্গ করা একজন কর্মী হিসেবে কখনই উচিত নয়। সময়মতো অফিস যাওয়া তারই একটি অংশ।
দেরি হতেই পারে, তবে তা যেন প্রতিদিনের তালিকায় যোগ হয়ে না যায়।
আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি অফিসে নারী-পুরুষ একসঙ্গে কাজ করে। পদমর্যাদার দিক থেকে কখনও নারী সহকর্মীরা উচ্চপদে আসীন থাকেন।
আর তখন পুরুষ কর্মীদের মধ্যে দেখা যায় হীনমন্যতা। নারী-পুরুষ যে যে পদেই থাকুক না কেন প্রত্যেককে তাদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে।
অফিসে কাউকে ছোট করে আঘাত দিয়ে কথা না বলাই ভালো। অনেকের মধ্যে সহকর্মীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করা বা ঝগড়া করার বিশেষ প্রবণতা থাকে।
সেইসঙ্গে দেখা যায় সহকর্মীদের হাঁড়ির খবর নিতেও তাদের বেশ আগ্রহ। এসব বিষয় একদম পরিহার করতে হবে।
অনেক সহকর্মীকে দেখা যায় অন্যদের খাবার সম্পর্কে জানা বা খাওয়া তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
ভালো হয় নিজের খাবার নিজে খাওয়া। অন্য সহকর্মী কী খেল, তা নিয়ে গবেষণা করে নিচু মানসিকতার পরিচয় দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
তবে সহকর্মী যখন আপনার জন্যও খাবার নিয়ে আসবেন তখন তা অবশ্যই গ্রহণ করা উচিত। তবে অনেক খাবারে অনেকের অ্যালার্জি থাকে। তখন আবার ভদ্রতার খাতিরে সেই খাবার খেয়ে নিজে অসুস্থ হতে যাবেন না।
আসলে প্রতিটি অফিসে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাতে হয় আমাদের। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কথা বলা বা গল্প করা কাজেরই একটি অংশ।
তবে অনেকে এটিকে আবার বিরক্তির পর্যায়ে নিয়ে যান। একশ্রেণীর সহকর্মীদের কাজই হলো অফিসে ঢুকেই অন্যের সঙ্গে তার আসার পথের সুবিধা-অসুবিধার ফিরিস্তি দেয়া, পরিবারের সমস্যার কথা তুলে ধরা, বা অযথাই হাসাহাসি করা।
এ ব্যাপারগুলো একেবারেই অফিস এটিকেটের বাইরে। সমস্যা থাকতেই পারে। তাই বলে প্রয়োজন নেই তা প্রত্যেককে জানানো।
আমরা যে কেউ যে কোনো সময় অসুস্থ হতে পারি।অনেকে কোল্ড অ্যালার্জির কারণে শীত-গরম সব সময়ই সর্দিজ্বরে ভোগেন।
সর্দিজ্বর বা ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হলে সহকর্মীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলাই ভালো। কেননা ভাইরাসবাহিত রোগ যে কোনো সময় যে কাউকে আক্রান্ত করতে পারে।
অন্যকে অসুস্থ করার দায়িত্ব নিশ্চয়ই আপনার নয়।
অফিস সহকর্মীদের মধ্যে যেহেতু সুন্দর একটি সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়, তাই তাদের জন্মদিন বা নিউ ইয়ার বা বিশেষ দিনে উইশ করুন।
সম্পর্ক ভালো হলে গিফট দিন, দিনটিকে সেলিব্রেটও করতে পারেন।
সহকর্মীর পোশাক নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলোচনা-সমালোচনা না করাই ভালো। পোশাকটি যদি অফিস ডেকোরামকে ভঙ্গ করে, তবে সেই সহকর্মীটিকে ডেকে তাকেই বলা ভালো।
আড়ালে অন্যদের সঙ্গে তাকে নিয়ে কথা বলা মোটেই উচিত নয়। আর অফিসে উগ্র সাজগোজ এড়িয়ে চলতে হবে সব সময়—হন আপনি নারী বা পুরুষ কলিগ।
উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে চললে অফিসে আপনার ব্যক্তিত্বের সুপ্রভাব পড়তে বাধ্য। এতে সহজেই আপনি হয়ে উঠতে পারবেন অনুকরণীয় একজন।
ক্যাম্পাসলাইভ২৪ডটকম