Faculty of Allied Health Sciences > Public Health
এই সময়ে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট
(1/1)
saima rhemu:
হাঁপানি রোগীদের জন্য এই সময়টা সবচেয়ে খারাপ। শীত আসি আসি করছে, বাতাসে উড়ছে প্রচুর ধুলাবালু, পরিবেশের তাপমাত্রা পাল্টাচ্ছে ঘন ঘন আর চারদিকে বাড়ছে ভাইরাস সংক্রমণের প্রকোপ—এই সব কটিই হাঁপানির আকস্মিক আক্রমণের জন্য আদর্শ। এ বিষয়ে লিখেছেন ডা. মৌসুমী মরিয়ম সুলতানা।
হাঁপানি কেন হয়?
বিশেষ কোনো পদার্থের প্রতি শ্বাসতন্ত্রের অতি সংবেদনশীলতা হলো হাঁপানির মূল কারণ। এটি হতে পারে ঠান্ডা হাওয়া, ধুলাবালু, সামান্য পরিশ্রম, জীবাণু, পোষা প্রাণীর লোম, ওষুধপত্র, এমনকি বাতাসে উড়তে থাকা ফুলের রেণু, তুলার কণা যেকোনো কিছু। এ ধরনের জিনিসের সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসতন্ত্রের পেশিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়, নিঃসৃত হতে থাকে নানা রাসায়নিক। শ্বাসনালি সরু হয়ে আসে, শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। যাঁদের পরিবারে হাঁপানির ইতিহাস আছে, অথবা নানা ধরনের অ্যালার্জি আছে, তাঁদের হাঁপানি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কীভাবে বুঝবেন?
বছরে দু-তিনবার বা তার বেশিবার শ্বাসকষ্ট, সঙ্গে কাশি, দম বন্ধ হয়ে আসা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে বুকে শব্দ—এই হলো হাঁপানির লক্ষণ। ঠান্ডা আবহাওয়ায় ও ভোরের দিকে উপসর্গ বাড়ে। এ ধরনের সমস্যা থাকলে হাঁপানি নির্ণয় করা কঠিন নয়। তবে মাত্রার তীব্রতা দেখার জন্য স্পাইরোমেট্রি করা যেতে পারে। বুকের এক্স-রে সাধারণত স্বাভাবিক থাকে, তবে রক্তে অ্যালার্জির মাত্রা নিরূপণকারী বিভিন্ন পরীক্ষায় অস্বাভাবিকতা দেখা যায়।
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর মৃত্যু হচ্ছে ২৫ কোটি
বিশ্বজুড়ে হাঁপানিতে ভুগছে ৩০ কোটি
হাঁপানি—কী করি
হাঁপানির রোগীরা আক্রমণকারী অ্যালার্জেনকে সাধারণত ভালো করেই চেনেন। এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলবেন। ধুলাবালিতে নাক ঢেকে রাখবেন, ঝুল বা বিছানা বা কার্পেট ঝাড়ার মতো কাজ করবেন না। পোষা প্রাণী থেকে দূরে থাকুন। যাঁদের ফুলের রেণুতে অ্যালার্জি তাঁরা পার্কে বা বাগানে যেতে সাবধান। ঠান্ডা লাগাবেন না। ভোরে ও রাতে এই সময় গায়ে হালকা গরম কাপড় রাখুন। গোসলে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। ধূমপান বাদ দিন। এ সময় আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে আগে থেকেই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইনহেলারের মাত্রা ও সময় ঠিক করে নিন।
২০২৫ সাল নাগাদ এই তালিকায় যুক্ত হবে আরও ১০ কোটি মানুষ। বিগত শতাব্দী থেকেই আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে এই রোগের প্রকোপ, উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশেই, শিশু ও বয়স্ক—সব বয়সের মানুষের মধ্যেই।
শীতে হাঁপানি রোগীদের করণীয়:
হাঁপানি রোগীদের জন্য শীতল আবহাওয়া, সর্দি-কাশি-ফ্লু বা ঠান্ডাজ্বর প্রচণ্ড কষ্ট আর বিপদের কারণ হতে পারে। প্রতি বছর শীতে শিশুদের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ এবং বড়দের ৪০ শতাংশ হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের তীব্রতা বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণগুলো হলো: এই সময়ে ঠান্ডা, জ্বর বা ফ্লুর প্রকোপ, ঠান্ডা-শুষ্ক বাতাস যা শ্বাসতন্ত্র সংকুচিত করে, শীতে বেড়ে যাওয়া ধুলাবালু ও ধোঁয়ার পরিমাণ, কুয়াশা ও বদ্ধ গুমোট পরিবেশ ইত্যাদি। এসবই শ্বাসতন্ত্রের সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে হাঁপানি রোগীর কষ্ট বাড়ে।
তাই শীতে হাঁপানির রোগীদের প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা ও প্রস্তুতি।
১. যাঁদের হাঁপানি, অ্যালার্জি আছে, তারা ঠান্ডা উপভোগ করতে যাবেন না। ঠান্ডায় বের হলে পরিষ্কার স্কার্ফ বা টুপি ব্যবহার করুন। বাইরে বের হওয়ার আগে আপনার নীল রঙের ইনহেলার দুই চাপ ব্যবহার করে নিতে পারেন। বেশি সময় বাইরে থাকতে হলে ইনহেলারটা সঙ্গেই রাখুন।
২. শিশুরা অনেক সময় মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়। মুখ দিয়ে নেওয়া শ্বাস শুষ্ক এবং শ্বাসতন্ত্র আরও সংকুচিত করে তোলে। অন্যদিকে নাক দিয়ে নেওয়া শ্বাস উষ্ণ এবং আর্দ্র, ধোঁয়া-ধুলা ইত্যাদি ফিল্টার হয়ে আসে। তাই মুখে শ্বাস নেবেন না। শিশুদের বন্ধ নাক সব সময় স্যালাইন ড্রপ দিয়ে পরিষ্কার করে দিন।
৩. ধূমপান নিষেধ। এমনকি পাশের ব্যক্তির ধূমপানও আপনার সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ঠান্ডা খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন।
৪. এমনকি রান্নার ধোঁয়াও শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে। বাড়িতে কিচেনভেন্ট ব্যবহার করা ভালো। ঘর ধোঁয়ামুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। মশার কয়েলও জ্বালাবেন না।
৫. ব্যায়ামের আগে ১০ মিনিট ওয়ার্ম-আপ করে নিন এবং প্রয়োজনে নীল রঙের ইনহেলার দুই চাপ নিয়ে শুরু করুন। অতিরিক্ত শীতে বাইরে না গিয়ে ঘরের ভেতর ব্যায়াম সেরে নিন।
৬. সর্দি হলে নাক মুছতে রুমাল নয়, পেপার টিস্যু ব্যবহার করুন। নাক, চোখমুখে ঘন ঘন হাত লাগাবেন না। সর্দি ঝাড়ার পর নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। সর্দি-কাশি-ফ্লু-আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকা ভালো।
৭. হাঁপানি রোগীরা শীতের শুরুতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতি বছর ফ্লু-ভ্যাকসিন নিতে পারেন।
৮. বাড়িতে কুকুর, বিড়াল বা পোষা পাখি শোয়ার ঘর থেকে দূরে রাখুন। ঘরের আসবাব শুষ্ক রাখুন, ধুলা জমতে দেবেন না।
আপনার ইনহেলার, ওষুধ, নেবুলাইজার ইত্যাদি রসদ পর্যাপ্ত ও কার্যকর আছে কি না খেয়াল করুন। পরিবারের সবাইকে এগুলোর স্থান ও ব্যবহারপদ্ধতি অবহিত করুন। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার পরও শ্বাসকষ্ট তীব্র হলে অবশ্যই হাসপাতালে চলে যাবেন।
Kazi Taufiqur Rahman:
Nice post. Thanks for sharing.
saima rhemu:
Welcome Sir :)
Navigation
[0] Message Index
Go to full version