Entertainment & Discussions > Cricket
They told stories toss
(1/1)
habib:
টসের গল্প শোনালেন তাঁরাও
দুই বাঙালি অধিনায়ক প্রথমবারের মতো টেস্টে করছেন টস। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে। ফাইল ছবি‘
আমার টসভাগ্য খুব খারাপ!’ টস অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে শুরুতেই মাশরাফি বিন মুর্তজার সহজ স্বীকারোক্তি।
টস ভাগ্য কতটা খারাপ, জানাতে ফিরে গেলেন ইনচনের বৃষ্টিভেজা সেই পড়ন্ত বিকেলে। বৃষ্টির কারণে গত বছর এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফল নির্ধারণ হয়েছিল টসে। বৃষ্টির জল আর টসে হার মিলিয়েই ভেসে গিয়েছিল বাংলাদেশের সোনা ধরে রাখার স্বপ্ন। সে স্মৃতি আজও তাড়া করে মাশরাফিকে, ‘টসের অভিজ্ঞতা আমার সবচেয়ে বাজে। ইনচনে সমীকরণ ছিল, টস জিতলে ম্যাচ জিতব। এমন তো সাধারণত হয় না। একমাত্র আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল। তবে টস হেরেও ম্যাচ জিতেছি, এমন ঘটনাই বেশি।’
মাশরাফির অধিনায়কত্বে ২৮ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতেছে ২০টিতে। এর মধ্যে টসে জিতেছেন মাত্র ৭ বার। বাকি ১৩টি জয় এসেছে টসে হেরেই। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য ৭ ম্যাচে টসে জিতেছেন ৪ বার। এর মধ্যে ম্যাচ জিতেছেন দুটিতে।
টস ভাগ্য যতই খারাপ হোক, মাশরাফির অধিনায়কত্বের শুরুটা কিন্তু হয়েছিল টসে জয় দিয়ে। ২০০৯ এর ৯ জুলাই-তারিখটা মাশরাফির স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বলই করবে সব সময়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই দিনই বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক। সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে টসে জিতে নিয়েছিলেন ব্যাটিং। পরের গল্পটা অবশ্য বুকে মোচড় দেওয়ার। ওই টেস্টেই হাঁটুর চোটে সতীর্থের কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়লেন। সেই যে ছাড়লেন, আর বাংলাদেশ দলের হয়ে আর সাদা পোশাকে মাঠে নামা হলো না মাশরাফির।
টস পুরোপুরিই ভাগ্যের ব্যাপার হলেও এখানে কুসংস্কারও কাজ করে। মুদ্রা ছুড়ে মারার সময় ওপরে যে দিকটা থাকে সেটিই নাকি ওঠে! টস করার সময় অনেকেই তাই মুদ্রা ঢেকে বা খাঁড়া করে ছুড়ে মারেন। মাশরাফি অবশ্য এসব সংস্কার মানেন না, ‘এটা তো খারাপ। টস হেরে গেলেন তো ম্যাচ হারলেন, এ ভাবনা থাকা ঠিক নয়। এভাবে খেলাও যায় না। ক্রিকেট তো পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক খেলা। এসব চিন্তা করলে ম্যাচে প্রভাব পড়ে। তবে গেম প্ল্যানে টসের ব্যাপারটা থাকে। তাই বলে টসে হারলে ম্যাচ হারব, এমন নয়।’
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি অধিনায়কত্ব করেছেন হাবিবুল বাশার। টেস্ট-ওয়ানডে মিলে ৮৭ বার টস করে জিতেছেন ৪০বার। অবশ্য পরিসংখ্যান-টরিসংখ্যান খুব একটা মনে থাকে না বলেই তাঁর দাবি। তবে ২০০৪-এর ১৯ ফেব্রুয়ারি হারারেতে যে প্রথম টস করলেন, দিব্যি মনে আছে সেটি, ‘খুব টেনশনে ছিলাম সেদিন। বৃষ্টির কারণে টস হতে দেরি হচ্ছিল। জানতাম না কখন খেলা শুরু হবে। বৃষ্টি থামলে হঠাৎ জানানো হলো, শুরু হচ্ছে ম্যাচ। দলের সবাই ওয়ার্ম-আপে নেমে গেল, আর আমি ছুটলাম টসে। কোনো রকম ওয়ার্ম-আপ ছাড়াই সেদিন নামতে হলো মাঠে।’
মাশরাফির মতো হাবিবুলেরও টস নিয়ে কোনো সংস্কার কাজ করেনি কখনো। তবে কোন কল দেবেন, এ নিয়ে দ্বিধা কাজ করত মনে, ‘খুব দ্বিধাগ্রস্ত থাকতাম। তবে হেড-টেল নিয়ে ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ ছিল না। অনেক অধিনায়কেরই থাকে, আমার ছিল না। তবে টেনশন হতো খুব।’
টসভাগ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে এগিয়ে মুশফিকুর রহিম। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে মুশফিক নেতৃত্ব দিয়েছেন ৮৪ ম্যাচ। এর মধ্যে টসে জিতেছেন ৪৩বার। ওয়ানডেতে ২০, টেস্টে ১১ ও টি-টোয়েন্টিতে ১২ বার।
বাংলাদেশ অধিনায়কদের টস নিয়ে আলোচনায় যার নাম বলতেই হবে, তিনি গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। ১৯৮৬-এর ৩১ মার্চ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলার শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত সেই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম টসও করেছিলেন তিনি।
বাংলাদেশকে হালকাভাবে নিয়ে ওই ম্যাচের টস ইমরান খান নাকি বাউন্ডারির বাইরে সেরে ফেলেছিলেন, এমন গল্প বেশ চালু। তবে এ গল্পকে অতিরঞ্জিত বলেই জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘টসের গল্পটা মোটামুটি সত্যি। ইমরান খান আমাকে বাউন্ডারির বাইরেই টস করতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে এতে তাঁর বাংলাদেশকে ছোট করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল কিনা, বলতে পারব না। এটা ঠিক, ইমরানের প্রস্তাবে বেশ অবাকই হয়েছিলাম।’
টস নিয়ে কত গল্প, কত ঘটনা। অথচ ক্রিকেটে টসই উঠে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন কেউ কেউ। স্বাগতিক দেশের সুবিধা নিতে গিয়ে কোনো দল যেন বাড়াবাড়ি না করে, আহ্বানটা সে কারণেই। মাশরাফি অবশ্য যুগ যুগ ধরে চলে আসা ক্রিকেটীয় সংস্কৃতি ধরে রাখার পক্ষেই, ‘ক্রিকেটে এত নতুন নতুন বিষয় আসে, খেলোয়াড়দের মানিয়ে নিতেও সময় লাগে। ক্রিকেটকে একভাবে দেখে আসছি। রীতি থেকে বেরিয়ে আসতেই বরং খারাপ লাগে। যুগ যুগ ধরে ক্রিকেট যেভাবে চলে আসছে, সেই সংস্কৃতি বজায় থাকুক না। এ থেকে বেরিয়ে আসলে বরং ধাক্কা লাগবে।’
Navigation
[0] Message Index
Go to full version