আমাদের দেহকে পরিচালনার জন্য হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই জানি। যত সময় যাচ্ছে, ততই পৃথিবীর আবহাওয়া ও পরিবেশ আমাদের বসবাসের জন্য প্রতিকূল হয়ে উঠছে। এর মধ্যেই আমাদের নিজেদের সুস্থ রাখার জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে।
আমাদের প্রত্যেকেরই দরকার আমাদের হৃৎপিণ্ডের সুস্থতায় যতটা নিয়ম মেনে চলা সম্ভব মেনে চলা। আমরা অনেকেই জানি না যে নিয়মিত জীবন যাপনের রুটিনে কিছু কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যোগ করলেই আমাদের হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ ও স্বাভাবিক কর্মক্ষম রাখতে পারি। আসুন দেখে নেই ৭টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যার মাধ্যমে আমাদের হৃৎপিণ্ডকে রোগমুক্ত রাখতে পারব।
নিয়মিত হাঁটুন:
আমাদের ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেকেই হাঁটার সময় পাই না অথবা আলসেমি করে হাঁটতে যাই না। কিন্তু আমরা জানি না এতে করে আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করে চলেছি প্রতিদিন। হাঁটার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা বাড়ে। কারণ হাঁটলে পুরো দেহে রক্ত ও অক্সিজেনের সঞ্চালন ভালো মত হয়। ডাক্তাররা সবাইকে দিনে অন্তত ২০-৩০ মিনিট হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সকালে কিংবা বিকেলে হাঁটতে পারেন। যদি হাঁটার সময় না পান তবে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পরে খানিকটা হেঁটে নিন। অথবা ফোনে কথা বলার সময় হাঁটুন। হাঁটাকে অভ্যাসে পরিনত করলে হৃৎপিণ্ড থাকবে রোগমুক্ত।
খাবার তালিকার প্রতি লক্ষ্য রাখুন:
শরীর সুস্থ আছে কিংবা আপনি ক্ষীণ দেহের অধিকারী দেখে ভেবে বসবেন না অস্বাস্থ্যকর তেল, মশলা, ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার আপনি বিনা দ্বিধায় খেতে পারবেন। যদি হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ ও সবল রাখতে চান তবে অবশ্যই তেল, মশলা, ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনি কার্ডিওভাস্কুলার রোগ সমূহ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন:
ব্যস্ত জীবনে নানান কারনে মানসিক চাপ আসতেই পারে। কিন্তু এই জন্য মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা করে নিজেকে অসুস্থ করে ফেললে চলবে না। আপনি মানসিক চাপ নিলে আপনার ব্রেইনের পাশাপাশি হার্টের ওপর চাপ পড়ে।
নার্ভ সিস্টেমে চাপ পড়ে। কর্টিসোল লেভেল বাড়ে ফলে হার্ট অ্যাটাক এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সমস্যা নিয়ে পড়ে থেকে চিন্তা করলে সমাধান হয় না। মাথা ঠাণ্ডা ও মানসিক চাপ মুক্ত রেখে সমাধানের চিন্তা করুন। সুস্থ থাকবেন।
ধূমপান ও মদ্যপান কে না বলুন:
ধূমপান ও মধ্যপান উভয়েই হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। হৃৎপিণ্ডকে স্বাভাবিক কার্যক্রমে রাখতে চাইলে ধূমপান ও মদ্যপান এখনই ত্যাগ করুন। ধূমপান ও মদ্যপান উভয়ের মাধ্যমে দেহে কোলেস্টেরল বাড়ে। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
বাদাম খান:
বাদামে রয়েছে হাই ডেনসিটি লিপ্রোপ্রোটিন যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ। হার্টের রোগীদের ডাক্তাররা নিয়মিত পরিমিত বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন। হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন বাদাম খান।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান:
ব্যস্ত জীবনে অফিস কিংবা নানা কাজে রাতে ঘুমানো হয় অনেক কম। দিনের বেলা ঘুম আসার তো কোন প্রশ্নই উঠে না। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলেও যে হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হয় তা আমরা অনেকেই জানি না।
ঘুমের সাথে উচ্চরক্ত চাপের যোগ রয়েছে। পর্যাপ্ত না ঘুমালে উচ্চ রক্তচাপ রোগে পড়তে পারেন সহজেই। একজন পূর্ণ বয়স্ক হিসেবে দিনে ৬/৭ ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাবেন। হার্ট ভালো থাকবে। দেহও নীরোগ রাখতে পারবেন।
নিয়মিত চেকআপ করান:
আমরা অনেক সময়েই নিয়মিত চেকআপ করার প্রয়োজন বোধ করি না। সুস্থ আছি কিংবা সামান্য কারনে ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগবে না এই ভেবে চেকআপ করাই না। কিন্তু এতে কিন্তু সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
হয়তো ছোটোখাটো কিছুর জন্য আমরা ডাক্তারের কাছে গেলাম না যা সামান্য চিকিৎসায় ভালো হতে পারতো। পরবর্তীতে বড় সমস্যা ধরা পড়লে অনেক সম্য ডাক্তারদের কিছুই করার থাকে না। সুতরাং অবহেলা করবেন না। নিয়মিত চেকআপ করবেন সুস্থ থাকতেও।