গড়ে প্রতিদিন একবার করে ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয় এলাকাটিতে। কখনো কখনো ভূমিকম্পের সংখ্যা হয় অনেক বেশি। যেমন ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বরও ১৮ বার পায়ের তলার মাটি কেঁপে উঠেছে স্থানীয় মানুষের।
না, জাপান বা আশপাশের প্রশান্ত মহাসাগরীয় কোনো অঞ্চল নয়, জায়গা উত্তর আমেরিকায়। পশ্চিম কানাডার অ্যালবার্টা প্রদেশের ফক্স ক্রিক শহরের বাসিন্দাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে ভূমিকম্প। আর প্রকৃতি নয়, খুব সম্ভবত মানুষের কার্যকলাপের কারণেই ঘটছে এ ঘটনা।
ভূমিকম্প উপদ্রুত অঞ্চলটিতে বিতর্কিত ফ্র্যাকিং পদ্ধতিতে তেল তোলা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে ভূগর্ভস্থ শিলাস্তরে অতি উচ্চ চাপে তরল পদার্থ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ওই চাপে শিলায় ফাটল সৃষ্টি হয়ে ভেতরে সঞ্চিত থাকা তেল ও গ্যাস বেরিয়ে আসে। দুই প্রতিবেশী কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে এ কৌশল ব্যবহৃত হয়। তবে ইউরোপের কিছুসংখ্যক দেশে এটি নিষিদ্ধ।
গত মঙ্গলবার ফক্স ক্রিকের ৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৮ মাত্রার এক ভূমিকম্প হয়। ওই এলাকায় স্পেনের জ্বালানি কোম্পানি রেপসল এসএ ফ্র্যাকিং পদ্ধতিতে তেল-গ্যাস তুলছে। ওই ভূমিকম্পের সময় তাদের খনির কাজ চলছিল। অ্যালবার্টা জ্বালানি নিয়ন্ত্রক (এইআর) জানিয়েছে, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছে।
মাত্র হাজার দুয়েক অধিবাসী ফক্স ক্রিকে। কিন্তু এই সামান্য জনসংখ্যার পানির চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন শহরের মেয়র জিম আন। কারণ আশপাশের নদী, ঝরনা আর হ্রদ থেকে বিপুল পরিমাণ পানি টেনে নেওয়া হচ্ছে খনির কাজের জন্য। পাশের প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ গত বছরের আগস্টে বলেছে, মালয়েশিয়ার তেল-গ্যাস কোম্পানি পেট্রোনাসের একটি কানাডীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ফ্র্যাকিংয়ের কারণে ২০১৪ সালে ৪ দশমিক ৪ মাত্রার এক ভূমিকম্প হয়েছিল। এটি ছিল ফ্র্যাকিংজনিত সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের একটি। সূত্র: এএফপি।