DIU Activities > Get in the Ring

রিং’য়ে রোমাঞ্চ

(1/1)

Badshah Mamun:
‘রিং’য়ে রোমাঞ্চ

কয়েক দিন আগের কথা। ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলে বানানো হয়েছিল বক্সিং রিংয়ের আদলে একটি মঞ্চ। দর্শক সারির একেবারে সামনের দিকে উপস্থিত দেশের বড় ব্যবসায়ীরা। বক্সিং গ্লাভস হাতে তৈরি প্রতিযোগীরাও। রিংয়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণের জন্য প্রস্তুত আটটি দল। তবে লড়াইটা মুষ্টিযুদ্ধের নয়, ব্যবসায়িক উদ্ভাবনের। স্টার্টআপের অলিম্পিক হিসেবে পরিচিত ‘গেট ইন দ্য রিং’ নামের উদ্যোক্তা নির্বাচনের এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটির বাংলাদেশ অংশের গ্র্যান্ড ফিনালে উপলক্ষে সেজেছিল এই মঞ্চ। গেট ইন দ্য রিং যুক্তরাষ্ট্রের কাফম্যান ফাউন্ডেশনের উদ্ভাবিত একটি ‘গ্লোবাল স্টার্টআপ’ প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)।

বিশ্বের ৮০টি দেশে এ প্রতিযোগিতার আসর বসেছে। প্রতিটি দেশের গ্র্যান্ড ফিনালে বিজয়ীরা অংশ নেন ‘রিজিওনাল’ প্রতিযোগিতায়। মহাদেশ আকারে ভাগ করা হয়েছে এসব ‘রিজিওন’। সেখানে উতরে যেতে পারলে অংশ নেওয়া যাবে আন্তর্জাতিক রাউন্ডে। প্রতিযোগীদের সামনে থাকবেন ধনকুবেরেরা। শুধু বিজয়ীই নয়, যেকোনো দলের স্টার্টআপ পছন্দ হলে তাঁরা এই তরুণ উদ্ভাবকদের ব্যবসায় বিনিয়োগ করবেন।

রোমাঞ্চটা অনেকটা জমজমাট মুষ্টিযুদ্ধের মতো বলেই প্রতিযোগিতাটি ঢুকে পড়েছে বক্সিং রিংয়ের ভেতর। নামটাও ছুড়ে দিচ্ছে চ্যালেঞ্জ—গেট ইন দ্য রিং! প্রতিযোগিতার নিয়ম হলো, দুটি দলের দলনেতা উঠবেন মঞ্চে। প্রথম মিনিটে দিতে হবে নিজেদের পরিচয়। এরপর ধাপে ধাপে মাত্র সাত মিনিটের মধ্যে নিজেদের ব্যবসার নানা দিক বিচারকদের বোঝাতে হবে। রিংয়ে উপস্থিত দুই দলের দুই দলনেতা পালাবদল করে বলবেন তাঁদের অর্জন, ব্যবসায়িক মডেল, বাজার ও আর্থিক প্রস্তাবের বিস্তারিত। ঠিক যেন বক্সিং রিংয়ে মুখোমুখি দুই যোদ্ধা!

১৭ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত গেট ইন দ্য রিংয়ের গ্র্যান্ড ফিনালেতে অংশ নিয়েছিল আটটি দল—গেমজট, বাঘের বাচ্চা, দ্য ব্রিডজ, মাই ডক্টর, ওয়ান রুফ, দ্রিসা, বায়স্কোপ ও ফুড পর পিপল। অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বেশ কটি ধাপ পেরিয়ে তাঁরা পৌঁছেছেন এই গ্র্যান্ড ফিনালেতে। তবে এটাই শেষ নয়। গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিজয়ী দল অংশ নেবে এশিয়ার রিজিওনাল ফাইনালে, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে।

‘এসব স্টার্টআপ বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি আশাব্যঞ্জক।’ বলছিলেন গেট ইন দ্য রিংয়ের গ্র্যান্ড ফিনালে আয়োজনের অতিথি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান। তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিচারকের দায়িত্বে থাকা এসএমই ফাউন্ডেশনের ফ্যাকাল্টি কনসালট্যান্ট সুকুমল সিনহা চৌধুরী, ওমেরার প্রধান নির্বাহী ইশতিয়াক আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ ও ঢাকা উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাজ ফারহানা আহমেদও। টানটান উত্তেজনা শেষে সেদিন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল ফুড পর পিপলকে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান নাভিদ মাহবুব।

‘ফুড পর পিপল একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এটি ব্যবহার করে প্রতিদিন ঢাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বেঁচে যাওয়া খাবার পৌঁছে দেওয়া যাবে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে। পাশাপাশি সেসব ক্ষুধার্ত মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মমুখী করে তোলা হবে।’ বলছিলেন ফুড ফর পিপলের প্রধান নির্বাহী আতিকুর রহমান। তাঁর দলের অন্য সদস্যরা হলেন নুসরাত জাহান, ইকবাল হোসাইন ও অন্তরা হুমায়রা। ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে দলটির দুই সদস্য আগামী মাসে সৌদি আরব যাচ্ছেন এশিয়া অঞ্চলের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে। সেখানে জয়ী হলেই তাঁরা পৌঁছে যাবেন মূল পর্বে, যেটি এ বছর অনুষ্ঠিত হবে কলম্বিয়ায়।

আয়োজনে সহযোগিতা করেছে দ্য ডেইলি স্টার, আরটিভি, হাব ঢাকা ও জাগো এফএম। তরুণ উদ্যোক্তা নির্বাচনের এ প্রতিযোগিতাটি বাংলাদেশে আয়োজন প্রসঙ্গে গেট ইন দ্য রিং বাংলাদেশের ইভেন্ট ব্যবস্থাপক ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ বিভাগের শিক্ষক এজাজ-উর-রহমান বলেন, ‘ডিআইইউ বরাবরই উদ্যোক্তা তৈরিতে আগ্রহী। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি বিভাগও আছে। এ রকম একটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বাংলাদেশে আনতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

Source: http://goo.gl/Pjt9Ib

Navigation

[0] Message Index

Go to full version