বেঙ্গালুরু থেকে: সংবাদ সম্মেলন শেষে বের হয়ে অঝরে কাঁদলেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির অন্যায় সিদ্ধান্তে স্কোয়াড থেকে ছিটকে পড়েছেন দুই প্রিয় সতীর্থ আরাফাত সানি ও তাসকিন আহমেদ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনের বাকি ম্যাচগুলোতে বাজির ঘোড়া তাসকি আহমেদ ও তুরুপের দুই আরাফাত সানিকে ছাড়াই খেলতে হবে মাশরাফি বাহিনীকে।
রোরবার (২০ মার্চ) বেঙ্গালুরুর চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলন যখন মাশরাফি এলেন তখনই তাকে দেখে বোঝা যাচ্ছিলা যে মানসিকভাবে কতটা বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন টাইগার দলপতি।
তার চোখ বেয়ে যেকোন সময়ই ঝরে পড়বে অশ্রুধারা। শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। সংবাদ সম্মেলনে অনেক কষ্টে চেপে রাখা কান্না ঝরলো বাইরে গিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফিকে প্রশ্ন করা হয়, তাসকিন ও সানি না থাকাটা দলের জন্য কত বড় ধাক্কা? উত্তরে মাশরাফি বলেন, তাসকিন ও আরাফাত আইসিসি’র নিষেধাক্কায় দল থেকে ছিটকে পড়ায় আমরা সত্যিই বিমর্ষ। এটা টিম বাংলাদেশের জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। আইসিসির এমন সিদ্ধান্ত সত্যিই হতাশাজনক।
মাশরাফি একটি বিষয় কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না যে, তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন কীভাবে ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে! আরাফাত সানির বোলিং নিয়ে তার শঙ্কা থাকলেও টাইগার পেসার তাসকিনের বোলিং নিয়ে এতটুকু সন্দেহ পোষণ করছেন না খোদ নড়াইল এক্সপ্রেস।
‘হতে পারে আরাফাত সানির বোলিং ত্রুটিপূর্ণ, কিন্তু তাসকিনেরটা কোনভাবেই নয়’- মন্তব্য মাশরাফির।
টাইগার দলপতি আরও বলেন, ওদের দুই জন ছাড়া মাঠে নামলে আমরা অনেক কিছু মিস করবো। আমাদের ছন্দই যেন হারিয়ে গেল।
তাসকিন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘ওর প্রথম ওভারই আমাদের পরের ওভারগুলো ঠিক করে দেয় যে, আমরা কীভাবে পরের ওভারগুলোতে বল করবো।
এদিকে তাসকিনের বদলি হিসেবে দলে ডাক পেয়েছেন শুভাগত হোম আর আরাফাত সানির বদলি হিসেবে সাকলাইন সজীব।
তাসকিন ও সানির অবর্তমানে এই দুই টাইগার সদস্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কতটুকু ভালো করত পারবেন? গণমাধ্যম কর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, নিঃসন্দেহে সাকলাইন ও শুভাগত ভালো, কিন্তু দেশ থেকে এসেই বিশ্বকাপের মতো এত বড় আসরে খেলা একটু কঠিনই হবে। তাছাড়া কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ব্যাপার তো আছেই।
পেসার তাসকিন আহমেদ ও স্পিনার আরাফাত সানির নিষেধাজ্ঞার পর বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন সাকলাই সজীব ও শুভাগত হোম।
অন্যদিকে, আইসিসি’র খাম খেয়ালিপনায় দুই টাইগার বোলার ছিটকে যাওয়ায় ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে না উঠলেও আগামী ম্যাচে বল হাতে নামতে হচ্ছে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে।
পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সংবাদ সম্মলনে মাশরাফি জানালেন, ও (মুস্তাফিজ) যদি ২০ ভাগও ফিট থাকে তাহলে আগামী ম্যাচে ওকে মাঠে নামতে হবে। কেননা আমাদের আর কোন পথ খোলা নেই।
এদিকে আইসিসির এমন সিদ্ধান্তের অনেকটা মৌন প্রতিবাদ জানিয়ে, সংবাদ সম্মলনেই মাশরাফি বললেন, আমরা ন্যায় বিচার চাই।
উল্লেখ্য, গেল ৯ মার্চ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তাসকিন ও আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মাঠের আম্পায়াররা। ১২ মার্চ আরাফাত সানি এবং ১৪ মার্চ চেন্নাইয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন তাসকিন আহমেদ। ১৯ মার্চ তাদের বোলিং অ্যাকশনকে অবৈধ ঘোষণা করে আইসিসি।