ম্যাচের আগেই অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ বলেছিলেন, ‘ওদের ব্যাটিং তো ভয়ংকর, বিশেষ করে বিরাট কোহলি।’ ওদের মানে ভারত। সেই ভারতের ব্যাটিং নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্মিথ কেন আলাদা করে কোহলির নামটা বলেছিলেন, ম্যাচ শেষে মনে হয় তা বুঝে গেছেন সবাই। মোহালির আইএস বিন্দ্রা স্টেডিয়ামে কাল ভারত তো আসলে শুধু নামেই অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিল। খেললেন তো কোহলিই। ৫১ বলে অপরাজিত ৮২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। স্কোরকার্ড বলছে, ১৬০ রান করেও অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে হেরেছে ভারতের কাছে। কিন্তু আসলে তো হারটা কোহলির কাছেই!
কোহলির ব্যাটে ভর করে পাওয়া এই দুর্দান্ত জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও পৌঁছে গেছে ভারত। শেষ চারে ৩১ মার্চ মুম্বাইয়ে ধোনির দলের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জিতলে সেমিফাইনাল, হারলে এখানেই শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পথচলা। কঠিন এই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা হলো অবিশ্বাস্য রকমের ভালো। প্রথম ৪ ওভারেই ৫৩। শুরুর তাণ্ডবটা চালিয়েছেন মূলত উসমান খাজা। ১৬ বলে ২৬, প্রথম ২৪ রানই বাউন্ডারি থেকে! দলের ৫৪ রানে খাজা ফিরে যাওয়ার পর হঠাৎই নিজেদের গুটিয়ে নেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা। সে কারণেই ২২ বলে যেখানে প্রথম ৫০ হয়েছিল, সেখানে পরের ৫০ রান আসে ৫৬ বলে। ৭.৩ ওভারের পর টানা ৩১ বল কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। অ্যারন ফিঞ্চ এক প্রান্ত থেকে চেষ্টা করছিলেন রানরেট বাড়ানোর। কিন্তু ৩৪ বলে ৪৩ রান করার পর তাঁকেও ফিরে যেতে হলো হার্দিক পান্ডিয়ার বলে শিখর ধাওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে। শুরুটা যদি কালবৈশাখীর তাণ্ডব হয়, শেষটা স্রেফ দমকা বাতাস। সপ্তম উইকেটে শেন ওয়াটসন ও পিটার নেভিল জুটি ৫ বলে ১৫ তোলায় ৬ উইকেটে ১৬০ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
তাড়া করতে নেমে ৪৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়েছিল ভারত। কিন্তু যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন কোহলি। তখনো অবশ্য কোহলি বিধ্বংসী রূপে দেখা দেননি। দলের ৯৪ রানে যুবরাজ যখন আউট হন, কোহলি ৩০ বলে ৩৫ রানে ব্যাট করছেন। কিন্তু অধিনায়ক ধোনিকে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যেন ব্যাটটাও তলোয়ার হয়ে উঠল তাঁর। ধোনির সঙ্গে মাত্র ৩১ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়লেন, যাতে কোহলির ব্যাট থেকেই এল ২১ বলে ৪৭ রান।
ফলাফল, যুবরাজ আউট হওয়ার পরও যে ম্যাচ দুদিকেই দুলছিল, সেটি ভারত জিতল ৫ বল হাতে রেখে!