জিনেদিন জিদান বলবেন, ‘এত কিছু করতে হয় নাকি! আমার তো মাত্র ছয় মাস লেগেছিল!’
পেশাদার কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর প্রথম মৌসুমটা সবচেয়ে সাফল্যবিধৌত ছিল পেপ গার্দিওলার। কিন্তু তাঁরও তো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে এক বছর লেগেছে। আর জিদানের লাগল মাত্র ছয় মাস। গত জানুয়ারিতে রিয়ালের টালমাটাল সময়ে হাল ধরলেন জিদান। মে মাস পুরোতে না–পুরোতেই ইতিহাসের পাতায়। খেলোয়াড় হিসেবে আগেই জিতেছেন। এবার কোচ হিসেবেও জিতলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ। ফুটবল কোচকেন্দ্রিক খেলা হলেও তারকাদের ভিড়ে কোচ আড়ালেই থাকেন। কিন্তু নামটা জিদান বলেই তাঁর দ্যুতিতে রিয়ালের মহাতারকা খেলোয়াড়রাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে। জিদান মানেই যে জাদু! এখনো স্যুট-সুবেশী কোচের চেয়ে হাফপ্যান্ট আর জার্সিতেই হয়তো বেশি মানাবে তাঁকে। যেন এখনো মাঠে নামিয়ে দিলে সেই দুর্দান্ত কর্নারগুলো উড়ে আসবে পা থেকে, কিংবা সেই ফ্রি কিক। এবার তো দুবার প্যান্টই ছিঁড়ে ফেললেন অনভ্যস্ত ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে থেকে।
কিন্তু মাঠে পায়ে না খেললেও জিজু এবার খেলেছেন মাথায়-মস্তিষ্কে। অশান্ত মাদ্রিদ-ক্যাম্পে স্থিতি এনেছেন। আস্থা এনেছেন। আত্মবিশ্বাস এনেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, দলের হৃৎপিণ্ড রোনালদোর সঙ্গে তাঁরই যেন সবচেয়ে ভালো এক জুটি গড়ে উঠেছে। মাঠে না থেকেও যেন দুজন মিলেই খেলেছেন। আর জিদান এর সবই করলেন মাত্র ছয় মাসে।
আর তাতেই ইতিহাস। কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর মাত্র ছয় মাসের মাথায় আর কেউ কি ইউরোপ–সেরার মুকুট পরেছে? জিদানের নাম লেখা হলো আগের সেই ছয়জনের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও, খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে এই ট্রফি জেতার কীর্তি ছিল যাঁদের।
সেখানে ক্রুইফ, আনচেলত্তি, রাইকার্ড, গার্দিওলারা আছেন। এর সঙ্গে বিশ্বকাপ-কীর্তি মাথায় রাখলে ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়টির নাম তো জিনেদিন জিদানই!