আবুল মনসুর আহমেদ একজন বাংলাদেশী সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক।তিনি ময়মনসিংহে জেলার ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ১৯১৭ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাশ করেন এবং ১৯১৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। তিনি কলকাতার রিপন কলেজ থেকে আইন বিষয়ে পাশ করেন। এই সময়টা ছিল খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের। তিনি ৯ বছর ময়মনসিংহে আইন বিভাগে পাশ করেন। তারপর কলকাতায় পেশাদার সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেন। তিনি বিশিষ্ট আইনজীবীও ছিলেন।তিনি সাংবাদিক হিসেবে নানান সংবাদপত্রে কাজ করেছেন, যেমনঃ ইত্তেহাদ, সুলতান, মোহাম্মদী, নাভায়ু।
রাজনীতিবিদ হিসেবে:
আবুল মনসুর আহমেদ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কংগ্রেস আন্দোলনসমূহের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পরে তিনি বাংলার মুসলীম লীগের সাথে সম্পৃক্ত হন এবং ১৯৪০ সাল থেকে পাকিস্তানের আন্দোলনসমূহের সাথে যুক্ত হন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তিনি ত্রিশাল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নেতৃত্বে প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী হন।পরবর্তীতে ১৯৫৭ সালে তিনি হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রীও ছিলেন। পূর্ববাংলার মঙ্গলের জন্য তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, বিশেষ করে শিল্পায়নে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের ২১দফার অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। আওয়ামী মুসলিম লীগ (পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক ছিলেন। আইয়ুব খানের শাসনামলে তিনি বেশ কয়েকবার কারাবরণ করেন।
সাহিত্যিক হিসেবে:
আবুল মনসুর আহমেদ একজন শক্তিমান লেখক ছিলেন। তিনি ব্যঙ্গাত্মক রচনায় বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। আয়না ও ফুড কনফারেন্স গল্পগ্রন্থদ্বয়ে তিনি মুসলিম সমাজের গোঁড়ামি, ধর্মান্ধতা, ভণ্ডামিসহ নানা কুসংস্কারের ব্যাঙ্গ করেছেন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে।
গ্রন্থসমূহ:
ব্যঙ্গরচনা:
আয়না (১৯৩৬-১৯৩৭)
ফুড কনফারেন্স (১৯৪৪)
গালিভারের সফরনামা
স্মৃতিকথা:
আত্মকথা (১৯৭৮, আত্মজীবনী)
আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর (১৯৬৯)
শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু (১৯৭২)
অন্যান্য রচনা:
সত্য মিথ্যা (১৯৫৩)
জীবনক্ষুধা (১৯৫৫)
আবে হায়াত (১৯৬৪)
হুযুর কেবলা
সাহিত্য পুরস্কার:
বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬০)
স্বাধীনতা দিবস পদক (১৯৭৯)
নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক
(সুত্র : উইকিপিডিয়া)