বল্কার জাতিবল্কার একটি ুদ্র জাতির নাম। এদের আবাসভূমি রাশিয়ার কাবারডিনোÑ বল্কার রিপাবলিক। এর অবস্থান ককেশাস অঞ্চলে। বল্কার জাতি বৃহত্তর তুর্কি (টার্কিক) জাতির অংশ। এদের মোট জনসংখ্যা এক লাখের বেশি। এ জাতি সম্পর্কে লিখেছেন মুহাম্মদ রোকনুদ্দৌলাহ্
বল্কাররা কথা বলে কোন ভাষায়? বল্্কার ভাষায়। এটি বৃহত্তর তুর্কি ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত বল্কার ভাষা লেখা হতো আরবি হরফে। ১৯২৪ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত ল্যাটিন হরফে। অবশেষে ১৯৩৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পরিবর্তিত সিরিলিক হরফে লেখা হচ্ছে। সাবেক সোভিয়েত যুগে বল্্কার সাহিত্যের বেশ উন্নতি হয়। এ সময় এ ভাষায় অনেক বই প্রকাশিত হয়। ১৯৮৪-১৯৮৫ সালে বই বেরিয়েছিল ৫৮টি। সোভিয়েত আইনগত বিচারে বল্কার ভাষা ও জনসংখ্যার মাপে এত অল্প সময়ে ৫৮টি বইয়ের প্রকাশনা বেশ।
বল্কার নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মানুষ বেশ অতিথিবৎসল এবং উদার। এদের বেশির ভাগ ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা বল্কার মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
এদের পোশাকে তুর্কি-ককেশিয়ান প্রভাব লক্ষণীয়। শীত নিবারণে এরা কোট পরে। বর্তমানে এরা বিভিন্ন ধরনের আধুনিক তুর্কি ও রুশ পোশাকে অভ্যস্ত। এরা টুপি পরে।
বল্কাররা দক্ষ পশুপালক। এরা ভেড়া, পার্বত্য ছাগল, গরু, মহিষ, গাধা ইত্যাদি পালন করে। পশুপালক জাতি হিসেবে বল্কাররা গোশত খেতে খুব পছন্দ করে। এরা ভেড়া, গরু, ছাগল ইত্যাদি প্রাণীর হালাল গোশত খায়।
জার শাসনের যুগে ১৯ শতকে রাশিয়া অনেক মুসলমান প্রধান এলাকা দখল করে। এ সময় ককেশাস রাশিয়ার অধিকারে আসে, বল্কার জাতি রুশদের শাসনের কবলে পড়ে।
সোভিয়েত যুগে কাবারডিন জাতি ও বল্কার জাতির নামানুসারে কাবারডিনো-বল্কার স্বশাসিত প্রদেশ গঠন করা হয়। কাবারডা ও বল্কারিয়া এলাকা সংযুক্ত করা হয় ১৯২২ সালে। ১৯৩৬ সালে একে রিপাবলিকে পরিণত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৪১-১৯৪৫) সোভিয়েত শাসক স্টালিন বল্কারদের সবাইকে মধ্য এশিয়ায় নির্বাসনে পাঠায়। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে জার্মানিকে সহায়তা করার। বল্কার এলাকা জর্জিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কাবারডিন এলাকায় স্বশাসিত সোভিয়েত রিপাবলিক গঠন করা হয়।
১৯৫৭ সালে বল্কারদের মাতৃভূমিতে ফিরে আসার অনুমতি দেয়া হয়। আবার দু’জাতির জন্য গঠন করা হয় কাবারডিনোÑ বল্কার রিপাবলিক।
Source:
http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/134508