আবারও লিওনেল মেসির মাথায় হাত রেখে, হতাশায় মাঠ ছেড়ে বের হওয়া। আবারও চিলির উত্সব। গোলশূন্য ম্যাচের ফল নির্ধারিত হলো টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-২ ব্যবধানে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতল চিলি। আর বিশ্বকাপসহ টানা তিনটি ফাইনালে উঠেও শিরোপাটা দূরের ব্যাপারই হয়ে রইল আর্জেন্টিনার জন্য।
আর্জেন্টিনার গোলকিপার সার্জিও রোমেরো প্রথম শট ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে যে সুবিধা এনে দিয়েছিলেন, মেসির নেওয়া আর্জেন্টিনার প্রথম শটের ব্যর্থতাতেই তা শেষ হয়ে গেল। হাভিয়ের মাচেরানো আর্জেন্টিনাকে আবারও এগিয়ে দিলেও পরে বিলিয়ার শট ঠেকালেন ব্রাভো। চার শটের দুটিতেই ব্যর্থ আর্জেন্টিনার তাই শেষ শটটি নেওয়ার দরকারই পড়ল না। নিলেও ফল হতো বড়জোর ৪-৩। তার আগেই তো চ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত! চ্যাম্পিয়ন চিলিই।
২৩ বছরের অপেক্ষা আরও দীর্ঘায়িতই হলো। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে মায়ের কোলে ছোট্ট শিশুর হু হু কান্না। মা, হয়তো তাঁর সেই শৈশবে আর্জেন্টিনাকে কিছু জিততে দেখেছেন। নিজের মতো ছেলেকে আর্জেন্টিনার আকাশি-সাদা জার্সি পরিয়ে এনেছিলেন এই আশায়, ছেলেটা বুঝতে শেখার সময়েই তো প্রিয় দলকে ট্রফি নিয়ে উত্সব করতে দেখবে। সেই ছেলেটা, চার কি পাঁচ বছর বয়স হবে, সে তখন হু হু কাঁদছে। এ কান্না খেলনা না পাওয়ার কান্না নয়। এ কান্না অন্য এক আবেগের। মা সান্ত্বনা দেবেন কী, তিনি যে কাঁদছেন আরও বেশি।
আর মেসি? ইতিহাসের এক ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে থাকাই বুঝি যাঁর নিয়তি। চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। পাঁচটি ব্যালন ডি’অর। কিন্তু? বাকি সব পাওয়াই যে হয়ে উঠছে অর্থহীন। মাঠে মেসিকে এত কাঁদতে কেউ দেখেনি! ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে না। গত কোপা আমেরিকাতেও না। মেসিকে কে দেবে সান্ত্বনা। আর্জেন্টিনা দলের হয়ে কাঁদছে না কে! চিলিরই এক দুজনকে এগিয়ে আসতে হলো বুক পেতে দিতে, মাঠে এতক্ষণ যাদের বিপক্ষে তারা লড়েছে জান বাজি রেখে!