স্পাইডারম্যান বা মাকড়সা মানব ছবিটি যারা দেখেছেন তাদের নিশ্চয়ই গোবেচারা পিটার পার্কারের কথা মনে আছে। এক বিজ্ঞানমেলায় গিয়ে মাকড়সার কামড় খাবার পর যার কাছে চলে আসে অকল্পনীয় শক্তি। মাকড়সার মতই দেয়াল বাইতে পারে সে, অনায়াসেই জালের সাহায্যে এক দালান থেকে অন্য দালানে চলে যেতে পারে।
তার অন্য একটি ‘সুপারপাওয়ার’ হচ্ছে আশেপাশে কোন বিপদের আভাস পেলেই তার “মাকড়সা সংকেত” তাকে সাবধান করে দেয়। বাস্তবে স্পাইডারম্যান নেই, তবে জলজ্যান্ত মাকড়সা রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এতোদিন মনে করতেন এসব মাকড়সার গুণ হচ্ছে ধারেকাছের কোন বিপদ তারা টের পেয়ে যায় কিন্তু নতুন একটি গবেষণা বলছে অন্য কথা। বিজ্ঞানীরা বলছেন “লম্ফমান মাকড়সা” অতি দূরের বিপদও অনুধাবন করতে সক্ষম।
গবেষকরা বলেছেন, তারা এতোদিন মনে করতেন এই প্রজাতির মাকড়সা তাদের ধারেকাছে কোন খাবারের সন্ধান পেলে কিংবা কোন বিপদ টের পেলে তাতে সাড়া দিত। কিন্তু ঘটনাটি মোটেও তা নয়। তারা গবেষণায় পেয়েছেন যে ৯.৮ ফিট বা প্রায় ৩ মিটারের মত দূরত্ব থেকে মাকড়সারা কোন ধরণের শব্দ পেলে তা শুনে ফেলতে সক্ষম; যেখানে এত ছোট কোন কীটের ১-২৫ মিলিমিটারের মাঝে কোন শব্দ শোনার ক্ষমতা নেই। এদের অনেকেরই কান বা কানের পর্দা থাকে না
গবেষক পল শ্যাম্বল বলেন, “আমরা যেভাবে শুনি, মাকড়সাদের শোনার ক্ষমতা একেবারেই তেমন নয়। আমাদের কান যতটা ক্ষমতাবান, তাদের তা নয়। কিন্তু এদের স্পর্শকাতর কিছু লোম আছে যার মাধ্যমে এক ধরণের কম্পন অনুভব করতে পারে। এই কম্পনের ক্ষমতা এতই যে তারা শ্রবণের কাজটি এদের সাহায্যেই করিয়ে নেয়।”
গবেষণাটি করবার জন্য পল তার সহকারীদের সাহায্য নেন। মাকড়সার শরীরের সাথে কিছু ইলেক্ট্রোড যুক্ত করা হয় যা এটিকে কম্পনে সাহায্য করবে। এবার কিছুটা দূরত্ব গিয়ে সামান্য কিছু শব্দ করা হয়। রিডিং যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় যে মাকড়সার লোমের মাঝে এক ধরণের কম্পন সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি নড়াচড়া শুরু করে দিয়েছে।
এই গবেষণাটি কীট পতঙ্গদের জানার ক্ষেত্রে নতুন একটি দিগন্তের সৃষ্টি করবে বলেই পল শ্যাম্বলের বিশ্বাস।
সূত্রঃ সায়েন্টিফিক আমেরিকান