মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আজ বুধবার সারা দিনই টালমাটাল এশিয়ার পুঁজিবাজার। লেনদেনের কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাপক দরপতন লক্ষ করা যায় এশিয়ার পুঁজিবাজারে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বেশির ভাগ জরিপে জয়ের আভাসের ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিলেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। অর্থনীতিবিদেরা বলেছিলেন, হিলারির অবস্থান প্রভাবিত করছে এশিয়ার পুঁজিবাজারকে। গত সপ্তাহে এক জরিপে যখন হিলারি ও ট্রাম্পের মধ্যে ব্যবধান কমে এসেছিল, তখন ব্যাপক দরপতন লক্ষ করা যায় এশিয়ার পুঁজিবাজারে। ঠিক তেমনি কয়েক দিন আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই যখন হিলারিকে অভিযোগ থেকে রেহাই দিল, ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠল এশিয়ার বেশির ভাগ পুঁজিবাজার।
কিন্তু এই হিসাব-কিতাব উল্টে দিয়ে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন।
আজ বুধবার লেনদেন শেষে জাপানের নিকেই সূচক কমেছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। হংকংয়ের হ্যাংসেং সূচক কমেছে ২ দশমিক ১৬ শতাংশ। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক কমেছে সাড়ে ১৯ পয়েন্ট। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সূচক কমেছে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তাইওয়ানের প্রধান সূচক কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি কমেছে ২ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া সূচক কমেছে ভারতের পুঁজিবাজারেও। অর্থাৎ, এশিয়ার প্রধান প্রধান বাজারেই আজ সূচক কমেছে।
তবে শুধু এশিয়া নয়, লেনদেন শুরুতে ইউরোপের পুঁজিবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচক কমতে দেখা যাচ্ছে। নিম্নমুখী আছে ফ্রান্স ও জার্মানির পুঁজিবাজার। তবে সূচক ঊর্ধ্বমুখী সুইজারল্যান্ডের পুঁজিবাজারে।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপরে পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়। তবে আজকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, হিলারির হারের কারণে সূচক পড়তে পারে ব্যাপক। নির্বাচনের ফলাফলের পর ওয়ালস্ট্রিটের ডাও জোন্স সূচক ৩০০ পয়েন্ট পর্যন্ত কমতে পারে বলছে ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ। এর আগে ৮০০ পয়েন্ট কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
নির্বাচনের ফলাফলের আগে আজ ডলারের বিপরীতে ১৩ শতাংশ কমে মেক্সিকোর মুদ্রা পেসোর দর, যা দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন। বলা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ভালোই বিপাকে পড়তে যাচ্ছে মেক্সিকো। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর সীমান্তে দেয়াল তুলে দেবেন। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে মেক্সিকোর অর্থনীতি। বাণিজ্যিক দিক দিয়ে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
শুধু পেসো নয়, পড়তির দিকে ডলারও। জাপানি মুদ্রা ইয়েনের বিপরীতে ২ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। তবে গেল দুই মাসের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে এসেছে পাউন্ডের দর। এক পাউন্ডের দর ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
পুঁজি ও মুদ্রাবাজারে নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও ব্যাপক দর বাড়তে দেখা যাচ্ছে স্বর্ণের। ৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে স্বর্ণের দর। সূত্র: বিবিসি অনলাইন ও বিজনেস ইনসাইডার।