Entertainment & Discussions > Cricket

উন্নতির আশা জাগানো রেখা আছে টেস্টেও

(1/1)

Shakil Ahmad:
টেস্ট মানেই একসময় ছিল বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পণ। পেসারদের বাউন্সারের সামনে বড্ড নড়বড়ে দেখানো। স্লিপে একের পর এক ক্যাচ। ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়। সে রকম কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই যে বাংলাদেশ ছোট্ট পুকুর থেকে সাঁতরাতে নেমে গিয়েছিল টেস্টের উত্তাল সাগরে।

প্রথম ২৭ টেস্টের ২৬টিই হেরেছিল বাংলাদেশ। একমাত্র ড্রও বৃষ্টির বদৌলতে। এখনো যে বাংলাদেশ টেস্টের জন্য খুব বেশি প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পায়, তাও নয়। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট সেই খাড়া বড়ি থোড় নিয়মেই এগোচ্ছে। কিন্তু তবু ধীরে ধীরে টেস্টেও উন্নতির একটা ঊর্ধ্বগামী রেখা চোখে তো পড়ছেই। যে ছাপটা পাওয়া যাবে সর্বশেষ ২০ টেস্টে।
এই ২০ টেস্টের ১৩টিতেই হারতে হয়নি বাংলাদেশকে। এ তো এক বিশাল সাফল্য। হ্যাঁ, এর মধ্যেও কিছুটা প্রকৃতির অবদান আছে। তবে তার চেয়েও বেশি আছে নিজেদের অসম সাহসের প্রমাণ। এই ২০ টেস্টের ৫টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। ড্র করেছে ৮টি। এর মধ্যে আছে গল কিংবা খুলনা টেস্টের সেই বীরত্বের গল্পও। খুলনা টেস্টে তো পাকিস্তানের ২৯৬ রানের লিডেও ভেঙে পড়েনি দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ।
গত ২০ টেস্টের ​মতো সাফল্যমাখা সময় বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে আর কখনো আসেনি। প্রথম ২৭ টেস্টের ২৬টিতে হার, একটি ড্র। এর পরের ৪৮ টেস্টের ৩৯টিতেই হার, ৩টি জয়, ৬ ড্র। তার পরের ২০ টেস্টে এসেছে এই সাফল্য। বাংলাদেশের আটটি টেস্ট জয়ের পাঁচটিই এই সময়ে। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্জন তো গত সিরিজেই।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটা যেন নতুন এক দিগন্তের সূচনা করে দিয়ে গেল। এর আগে টেস্টে বড় দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশের মূল লক্ষ্যই থাকত ড্র করা। কিন্তু এবার জয়ের ঝুঁকি নেওয়ার সাহসটা বাংলাদেশ দেখিয়েছে। নিজেদের হোম কন্ডিশনের পুরো সুবিধা তুলে নিতে একধরনের বাজিই ধরেছিল মুশফিকের দল। যে বাজিটায় খুব ভয়াবহভাবে হেরে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এ সময়ের অন্যতম সেরা টেস্ট দলটিকে বাংলাদেশ ২-০–তে হোয়াইটওয়াশ করার মাত্র ২৩ রান দূরত্বে ছিল বাংলাদেশ!
গত সিরিজ বাংলাদেশ শুধু ১-১ ড্রয়ের ফল এনে দেয়নি, এই আত্মবিশ্বাসও এনে দিয়েছে, এখন থেকে ঘরের মাঠে ড্র করাটাকেই পরম আরাধ্য না ভাবলেও চলবে। বাংলাদেশ জয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়েও খেলতে পারে। এরপর বেশির ভাগ সিরিজ বিদেশে। সেটিও নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রতিকূল কন্ডিশনে। এই সিরিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিদেশেও ভালোর ছাপ রাখলে সেটি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে দেবে আরও।
তবে এই সাফল্যের উচ্ছ্বাসে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের দুর্বলতাগুলো ভুলে গেলেও চলবে না নিশ্চয়ই! সেই সঙ্গে বড় দলগুলোর বিপক্ষে আরও বেশি ঘরোয়া টেস্ট সিরিজের আয়োজনের উদ্যোগও নেওয়ার দায়িত্বও বিসিবির।

Navigation

[0] Message Index

Go to full version