কোনো যন্ত্র থেকে তার অংশ খুলে আবার তাতে ঠিকঠাক বসিয়ে দেওয়ার কাজে ৫৭ বছর বয়সী প্রকৌশলী তাল গলসওর্দি সিদ্ধহস্ত। কিন্তু তিন দশক ধরে তিনি যে প্রাণসংহারী সমস্যার মধ্যে ছিলেন, তা ঠিক করা তাঁর জন্য মোটেই সহজ ছিল না। সেই কঠিন কাজটিও তিনি করেছেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁর মতো সমস্যায় ভোগা ৪০ জন রোগীকেও সারিয়ে তুলেছেন তিনি।
৩০ বছর আগে কঠিন এক সমস্যায় আক্রান্ত হন যুক্তরাজ্যের গ্লস্টারশায়ারের বাসিন্দা গলসওর্দি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় সমস্যাটিকে বলা হয় ‘মারফান সিনড্রোম’। এ সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের সংযোজক টিস্যু ঠিকভাবে কাজ করে না। এ টিস্যুগুলো শরীরের ভেতর বড় অঙ্গগুলোকে তার অবস্থানে ধরে রাখার কাজ করে। এই অঙ্গগুলোর আকারও যেন ঠিক থাকে, নিশ্চিত করাও এদের কাজ। মারফান সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চোখ ও অস্থিসন্ধিতে সমস্যা দেখা দেয়। বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয় হৃদ্যন্ত্রে।
তরুণ বয়সে মারফান সিনড্রোমে আক্রান্ত হন গলসওর্দি। তিনি জানতেন, যেকোনো দিন তাঁর মহাধমনি ফেটে যেতে পারে। একদিন বাগানে কাজ করার সময় হঠাৎ তাঁর মাথায় পরিকল্পনাটা আসে। পরিকল্পনা সফল করতে বিমানশিল্পের কিছু প্রক্রিয়া ধার করলেন এবং শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেলেন ‘সুন্দর সাধারণ’ সমাধান। বানিয়ে ফেললেন হৃদ্যন্ত্রে স্থাপনযোগ্য একটা যন্ত্র। সবচেয়ে কঠিন কাজটা ছিল যন্ত্রটা নিজের মধ্যে স্থাপনে শল্যচিকিৎসককে রাজি করানো। লন্ডনের রয়্যাল ব্রোম্পটন হাসপাতালের চিকিৎসক জন পেপার ও গাইস হাসপাতালের টম ট্রেজারকে রাজি করালেন তিনি। অস্ত্রোপচারের নয় বছর পরও গলসওর্দি বহাল তবিয়তে বেঁচে আছেন।
Source:
http://www.prothom-alo.com/pachmisheli/article/1017959