ভারত সরকার দেশটিতে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোটের লেনদেন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্ত গতকাল মধ্যরাত থেকে কার্যকর করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন।
কালোটাকার লেনদেন বন্ধ করতে দেশটির সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) এর পরিবর্তে নতুন করে ৫০০ ও ২০০০ রুপির নোট বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে।
রুপি লেনদেনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুরোনো ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট ১০ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্ট অফিস ও ব্যাংকে গিয়ে পরিবর্তন করা যাবে। যাঁরা এ সময়ের মধ্যে বিশেষ কোনো কারণে পুরোনো নোট জমা দিতে পারবেন না, তাঁরা বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এসব নোট জমা দিতে পারবেন বলেও নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার রুপির সমপরিমাণ পুরোনো নোট পরিবর্তন করতে পারবেন নাগরিকেরা। আর সপ্তাহে এ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার। এটিএম বুথ থেকে দিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার রুপি তোলা যাবে। তবে আজ বুধবার ভারতের সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ থাকবে।মানবিক কারণে হাসপাতালের বিল পরিশোধে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত পুরোনো নোট ব্যবহার করা যাবে বলে বক্তৃতায় জানান নরেন্দ্র মোদি। বিমান, রেল ও সড়কপথে চলাচলের অর্থ পরিশোধে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত পুরোনো নোট ব্যবহার করা যাবে। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের অর্থ পরিশোধেও একই সময় পর্যন্ত পুরোনো রুপি ব্যবহার করা যাবে।
নিজের সরকারকে গরিববান্ধব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, টানা দুই বছরের খরা সত্ত্বেও গত আড়াই বছরে ভারত ঈর্ষণীয় উন্নতি করেছে। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ভারতের উন্নতির প্রশংসা করেছে। তবে সন্ত্রাস-দুর্নীতির কারণে দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দুর্নীতি ও কালোটাকা দেশে গভীর শিকড় গেড়ে বসেছে। বৈশ্বিক দুর্নীতি সূচকে ভারতের অবস্থান ওপরের দিকে। এসব কাজে সমাজের নির্দিষ্ট কিছু অংশের লোক জড়িত।তবে বৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনকারীদের আশ্বস্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতের বেশির ভাগ লোকই সৎ। বৈধভাবে কষ্ট করে যাঁরা আয় করেছেন, এ সিদ্ধান্তে তাঁদের কোনো রকম ক্ষতি হবে না।
ভারতে জাল নোট ছড়াতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানকেও দায়ী করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের জন্য সীমান্তের ওপর থেকে জাল নোট আসছে। এমন কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত আড়াই বছরে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি রুপির সমপরিমাণ কালোটাকা উদ্ধারের কথা জানান নরেন্দ্র মোদি।