কখনো কখনো দরজার বেল বাজানোর সময়, চেয়ার ধরার সময় বা অন্য কাউকে স্পর্শ করার সময় হালকা বৈদ্যুতিক ঝাঁকি অনুভব করি আমরা। কেন এ ধরনের বৈদ্যুতিক প্রবাহ অনুভব করি আমরা তা একটা রহস্য। আজকের ফিচারে এই রহস্যই উন্মোচন করবো আমরা।
এটি আসলে হয় অণুর কারণে
আমাদের চারপাশে যা কিছুই আছে তা অণু দিয়ে গঠিত। খালি চোখে এদের দেখা যায় না। একটি অণু পজিটিভ চার্জযুক্ত প্রোটন, নেগেটিভ চার্জযুক্ত ইলেকট্রন এবং নিরপেক্ষ নিউট্রন নিয়ে গঠিত। বেশীরভাগ সময়ই অণু নিরপেক্ষ অবস্থায় থাকে অর্থাৎ সমসংখ্যক প্রোটন ও ইলেকট্রন থাকে এতে। কিন্তু যখনই অণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটন বিজোড় সংখ্যায় হয়ে যায় তখন ইলেকট্রন উত্তেজিত হয়ে যায়। প্রোটন এবং নিউট্রন সচরাচর স্থানান্তরিত হয় না, কিন্তু ইলেকট্রনের ঠিকরে বের হয়ে যাওয়ার প্রবণতা আছে। তাই যখনই কোন ব্যক্তি বা কোন বস্তুর মধ্যে অতিরিক্ত ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে তখনই নেগেটিভ চার্জ তৈরি হয়। তখন এই ইলেকট্রন বিপরীত চার্জের অর্থাৎ পজেটিভ চার্জের ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই ইলেকট্রনের দ্রুত স্থানান্তরের ফলেই আমরা বৈদ্যুতিক শক বা অভিঘাত অনুভব করি।
আবহাওয়া কী এর জন্য দায়ী?
হ্যাঁ সাধারণত শীতের সময়ে বা আমাদের চারপাশের জলবায়ু যখন শুষ্ক থাকে তখন বৈদ্যুতিক চার্জ উৎপন্ন হয়। বাতাস যখন শুষ্ক থাকে তখন ত্বকের উপরিভাগে ইলেকট্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। গ্রীষ্মের সময় বায়ুর আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে নেগেটিভ চার্জের ইলেকট্রনকে নষ্ট করে দেয় বলে আমরা খুব কমই বৈদ্যুতিক চার্জ অনুভব করি।
নেগেটিভ চার্জের ইলেকট্রন কী সব সময় থাকে?
ইলেকট্রন সব সময় লেগে থাকে না, তারা সব সময় পালানোর উপায় খুঁজতে থাকে। আমাদের শরীরের ইলেকট্রনের সংখ্যা যদি অনেক বেশি হয়ে যায় এবং তখন যদি আমরা কোন পজেটিভ চার্জের বস্তুর সংস্পর্শে আসি তখন ইলেকট্রন বের হয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে পায়। এই প্রক্রিয়ার ফলেই আমাদের শরীর যখন অনেক বেশি চার্জযুক্ত থাকে তখন এক ইঞ্চি দূরে থাকা অন্য মানুষটির শরীরে ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয় বায়ুর কণা ভেদ করে এবং এ কারণেই বৈদ্যুতিক শক অনুভব করি আমরা।