আমরা যখন খাই তখন আমরা খাদ্যের পুষ্টি উপাদানই কেবল গ্রহণ করি না, এর সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যাকটেরিয়াও গ্রহণ করে থাকি। আমাদের শরীরকে একযোগে পাকস্থলীতে গ্লুকোজের বিতরণ এবং এই ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়। এর ফলে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয়ে উঠে এবং ইনফ্লামেশন বৃদ্ধি পায়। এটি সুরক্ষার প্রভাব তৈরি করে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিবার খাওয়ার পরই ইনফ্লামেশন বৃদ্ধি পায়, যা খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার একটি প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে।
গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, এই ইনফ্লামেশন যা প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে তা মাত্রাতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়, যার ফলে তাদের ডায়াবেটিস হয়।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী ইনফ্লামেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চিনির মাত্রা এবং ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতায়।
এই গবেষণাটি সুইজারল্যান্ডের বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা করেছিলেন। এতে দেখানো হয় যে, রক্তে গ্লুকোজের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে পরিষ্কারক কোষ বা ইমিউন কোষ ম্যাক্রোফেজের সংখ্যা। খাওয়ার সময় অন্ত্রের চারপাশে এদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং বার্তাবাহক ইন্টারলিউসিন-১ বিটা (ইলিয়ন-১ বিটা)হিসেবে কাজ করে।
এটি অগ্নাশয়ের বিটা কোষের ইনসুলিনের উৎপাদনকে উদ্দীপ্ত করে এবং মেক্রোফেজকে উৎসাহিত করে ইলিয়ন-১ বিটা এর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য।
ইনসুলিন এবং ইলিয়ন-১ বিটা একসাথে কাজ করে রক্তের চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যখন ইলিয়ন-১ বিটা ইমিউন সিস্টেমে গ্লুকোজ সরবরাহ নিশ্চিত করে এবং সক্রিয় থাকে।
গবেষকেরা বলেন, খাদ্যগ্রহণের সময় যে পুষ্টি উপাদান এবং ব্যাকটেরিয়া গ্রহণ করা হয় তার উপর ইমিউন সিস্টেম এবং বিপাক প্রক্রিয়া নির্ভর করে।
পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান পেলে ইমিউন সিস্টেম বাইরের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে - বলেন বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিসিনের ডাঃ ইরেজ ড্রোর।
ড্রোর বলেন, অপরদিকে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হলে অবশিষ্ট ক্যালোরি সংরক্ষণ করা উচিৎ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করার নিমিত্তে ইমিউন প্রতিক্রিয়ায় খরচের জন্য।
ন্যাচার ইমিউনলজি নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয় এই গবেষণা প্রতিবেদনটি।