তাবলিগের নামে উগ্রবাদে যুক্ত জামায়াতের নারীরা

Author Topic: তাবলিগের নামে উগ্রবাদে যুক্ত জামায়াতের নারীরা  (Read 710 times)

Offline Md. Rasel Hossen

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 299
  • Test
    • View Profile
তাবলিগের নাম করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের টার্গেট করে উগ্রবাদী দীক্ষা দিয়ে দলে টানার চেষ্টা করছে জামায়াতের নারী শাখার সদস্যরা। ধর্মীয় দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কৌশলে তারা টার্গেট করা নারীদের ‘মগজধোলাই’ দিচ্ছে। এমনকি গ্রেফতার হওয়া ২৮ নারীর প্রত্যেকের নামে একটি করে ‘বুকলেট’ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতিটি বুকলেটে ৮-১০ জন নারীর নাম রয়েছে। ২৮ নারীর বুকলেটে অন্তত ২৫০ জন নারীর নাম পাওয়া গেছে। তালিকায় থাকা নারীদের কৌশলে দলে টানার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছিল তারা। এসব নারী পরিবারের নিষেধ উপেক্ষা করে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাত।
অভিযানের সময় নারী শাখার সদস্যরা সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং সাংগঠনিক পরিকল্পনার নথি নষ্ট করে দিয়েছে। মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের একটি বাসা থেকে গোপন বৈঠকের সময় গ্রেফতার ২৮ নারীকে দু’দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। শনিবার ছিল রিমান্ডের প্রথম দিন। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকা, পাবনা, বাগেরহাট ও কুমিল্লা থেকে এসে নারী শাখার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা ওই বাসায় গোপন বৈঠক করছিল।
পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) হাফিজ আল ফারুক যুগান্তরকে বলেন, জামায়াতের নারী শাখার সদস্যদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা তথ্য গোপন করারও চেষ্টা করছে।
পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেফতার নারীরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোহাম্মদপুরের ১১/৭ নম্বর বাসায় একত্র হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অনেকেই বলেছে, তারা প্রথমবারের মতো এ ধরনের বৈঠকে এসেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বুকলেট পর্যালোচনা এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তারা তাবলিগের নাম করে উগ্রবাদী দীক্ষা দেয়ার কাজ করছে। তারা যে এলাকায় থাকত ওই এলাকার নারীদের টার্গেট করে কাজ করছিল। কোন নারীকে কখন, কীভাবে কথিত দাওয়াত দেয়া হয়েছে, ওই তথ্যও তারা সংরক্ষণ করে রাখত। এমনকি তাদের কাজে কতটা অগ্রগতি হয়েছে সেটাও আলাদা ডায়েরিতে লিখে রাখত। বুকলেটে পাওয়া ২৫০ নারীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জামায়াতের নারী শাখার বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে। টার্গেটে থাকা নারীদের তারা উগ্রবাদী বিভিন্ন বই পড়তে দিত।
জামায়াতের নারী শাখার সদস্যদের গ্রেফতার অভিযানে থাকা একজন পুলিশ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে পুলিশ তাজমহল রোডের ১১/৭ নম্বর বাসার দরজায় নক করলে তারা দরজা খুলছিল না। প্রায় আধা ঘণ্টা পরও দরজা না খোলায় জানালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করা হয়। তখন তারা দরজা খুলে দেয়। আধা ঘণ্টার মধ্যেই তারা সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং তাদের কর্মপরিকল্পনার নথি নষ্ট করে দেয়। ওই বাসায় দুটি ওয়াশরুমের কমোডে অনেক নথি ফেলে ফ্লাশ দিয়েছে। ময়লার ঝুড়িতে ছেঁড়া নথি পাওয়া গেছে। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনা এবং টার্গেট করা নারীদের দলে টানার অগ্রগতি নিয়ে ওই বাসায় বৈঠক হচ্ছিল। এর আগেও ওই বাসায় বিভিন্ন সময় বেঠক হয়েছিল। আশপাশের লোকজন জানত সেখানে তাবলিগের তালিম হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, গ্রেফতার নারীরা দলে কর্মী টানার ক্ষেত্রে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে থাকে। নিজেদের এলাকায় কোনো ব্যক্তি মারা গেলে ওই বাড়িতে গিয়ে কোরআন খতমের দায়িত্ব নেয় তারা। তারপর কৌশলে ওই পরিবারের সঙ্গে মিশে যেত। তখন ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের দলে টানত। ধর্মীয় দুর্বলতা আছে এমন নারীদের সঙ্গে মিশে তাদের ‘মগজধোলাই’ দিত। বিভিন্ন বাসায় গিয়ে ধর্মীয় দীক্ষা দেয়ার সময়ও অনেক নারীকে তারা দলে টানত। তাছাড়া তাদের উগ্রবাদী চিন্তা ও আদর্শের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন নারীরাও তাদের টার্গেটে ছিল।
মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানায়, জামায়াতের নারী শাখার সদস্যরা তাজমহল রোডের যে বাসায় বেঠক করছিল সেটি সরকারি বাসা। এটি সদ্য অবসরে যাওয়া পিডব্লিউডির প্রকৌশলী একেএম জয়নাল আবেদীনের নামে বরাদ্দ নেয়া ছিল। তিন মাস আগে তিনি অবসরে যান। ১৫ দিন আগে তার নামে বরাদ্দ বাতিল হয়। গ্রেফতার ২৮ জনের মধ্যে জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম ওরফে জোস্না বেগমও রয়েছেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর নারী শাখার সেক্রেটারি অথবা সভানেত্রী। বৈঠকে নারী শাখার সদস্যরা ধর্মের ও তাবলিগের কথা বলে নাশকতা ছড়ানোর পরিকল্পনা করছিল। এ সময় তাদের কাছ থেকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের উদ্দেশে ছাপানো ৫০টি ও ৭০টি লিফলেট, সংগঠনের মাসিক রিপোর্ট ফরম ২২৫টি, গোলাম আযমের লেখা তিনটি এবং মতিউর রহমান নিজামীর লেখা একটি বই উদ্ধার করা হয়।
Md. Rasel Hossen
Senior Lecturer in Physics
Department of Natural Sciences
Daffodil International University,
Sukrabad, Dhanmondi, Dhaka-1207, Bangladesh