অতিরিক্ত স্বাস্থ্যকর খাওয়া কী মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ?

Author Topic: অতিরিক্ত স্বাস্থ্যকর খাওয়া কী মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ?  (Read 683 times)

Offline Shahrear.ns

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 430
  • Plan living, High Thinking, Love After Marriage !!
    • View Profile
    • Shahrear Khan Rasel
অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা ও বুলিমিয়া এর মত ইটিং ডিজঅর্ডারের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা প্রায় সবারই জানা। কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়ার কথা চিন্তা করতে পারেন? কিন্তু বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কিছু মানুষ পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য একটি অবসেশনের মধ্যে থাকেন। তাদের এই সমস্যাটিকে অর্থোরেক্সিয়া বলা হয়। এই শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। এখানে ‘অর্থো’ অর্থ সঠিক এবং ‘অরেক্সিয়া’ অর্থ ক্ষুধা। এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন চিকিৎসক স্টিভেন ব্রেটম্যান।

অনেকের কাছেই এটি শুনতে অবাক লাগবে যে স্বাস্থ্যকর খাবারের কিছু বিপরীত বা নেগেটিভ দিকও আছে। যারা অর্থোরেক্সিয়ার সমস্যায় ভোগেন তারা তাদের খাদ্যে এমন বিধিনিষেধ আরোপ করেন যে তাদের খাদ্যের প্রধান গ্রুপ (কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট) বাদ পড়ে যায়, এর ফলে এদের ঘাটতিজনিত রোগ হতে দেখা যায়। এছাড়াও অর্থোরেক্সিয়া ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। অর্থোরেক্সিয়ার বিষয়ে অবিশ্বাস্য কিছু বিষয় জেনে নিই চলুন।

১। খাদ্যের বিষয়ে অনেক বেশি চিন্তা করা

অর্থোরেক্সিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা গড়পড়তা সাধারণ মানুষের তুলনায় তারা কী খাচ্ছেন সেটা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকেন।

২। প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রতি আবিষ্ট থাকেন

তারা নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য এড়িয়ে চলেন কারণ তারা খাদ্যের বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যেমন- আগাছানাশক, কীটনাশক ও কৃত্রিম পদার্থ নিয়ে ভয়ে থাকেন। এছাড়াও তারা খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া এবং খাদ্যের উপাদান নিয়েও অনেক বেশি চিন্তিত থাকেন।

৩। ওজন কমানোর কোন লক্ষ্য থাকেনা

অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা এবং বুলিমিয়ায় আক্রান্তদের চেয়ে ভিন্ন হয় অর্থোরেক্সিয়ায় আক্রান্তদের অবস্থা। তারা ওজন কমানো নিয়ে চিন্তিত থাকেন না।

৪। তারা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেয়ে ক্ষুধায় মরে যাওয়া পছন্দ করেন

পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাসের কারণে তারা নিয়মিত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলেন। যদি তারা স্বাস্থ্যকরভাবে তৈরি খাবার না পান তাহলে অনাহারে থাকতেই পছন্দ করেন।

৫। স্বাস্থ্য পেশাদারদের অর্থোরেক্সিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি

গবেষণায় দেখা গেছে যে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রদের, যোগব্যায়াম অনুশীলনকারীদের এবং ডায়েটিশিয়ানদের মধ্যে অর্থোরেক্সিয়ার প্রকোপ দেখা যায় বেশি।

৬। ছেলেদের অর্থোরেক্সিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি 

গবেষণায় পরামর্শ দেয়া হয় যে, নারীর তুলনায় পুরুষের অর্থোরেক্সিয়া হওয়ার প্রবণতা দেখা যায় বেশি।

৭। জেনেটিক্স এবং নিয়ন্ত্রণ

পারফেকশনিস্ট হওয়ার নির্দিষ্ট জেনেটিক প্রবণতা এবং নিয়ন্ত্রণের কারণে একজন মানুষ অর্থোরেক্সিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।

৮। ব্যক্তিত্ব

নির্দিষ্ট কিছু গবেষণায় অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার এবং অর্থোরেক্সিয়ার মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হয়। অন্তর্নিহিত আচ্ছন্নকারী আচরণের কারণে হয় এই সমস্যা হয়। 

৯। আধ্যাত্মিক উন্নতি হওয়া প্রয়োজন

অর্থোরেক্সিয়ায় আক্রান্তদের পরিপূর্ণতা এবং বিশুদ্ধতা অর্জনের জন্য প্রেরণা দিতে পারে খাঁটি খাবার গ্রহণের মাধ্যমে।

১০। অর্থোরেক্সিয়া দ্রুত ভালো হয়

যেহেতু স্বাস্থ্য তাদের অগ্রাধিকারের মূল বিষয় তাই সুস্থ থাকা নিয়ে তাদের দায়িত্ববোধ ও অনেকবেশি থাকে। তাই তারা অ্যানোরেক্সিয়া ও বুলেমিয়ায় আক্রান্তদের তুলনায় দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। 
Shahrear Khan Rasel
Sr. Lecturer
Dept. of GED
Daffodil International University