আভিসিনা, যার পূর্ণ নাম হচ্ছে আবু আলি হুসাইন ইবন আবদ আল্লাহ ইবন আল হাসান ইবন আলি ইবনে সিন। বেশ রাশভারী নাম, তাই না? তবে জেনে রাখুন এই মুসলিম মনীষী তার নামের চাইতেও ছিলেন বিশাল কিছু। চিকিৎসাবিদ্যায় তিনি ছিলেন অন্যতম পথ প্রদর্শক। তার লেখা বই “কানুন ফিত তিবব” এখনো মেডিকেলের ছাত্রদের অন্যতম পাথেয়। হিজরী ৯৮০ সালে তার জন্ম এবং ১০৩৭ সালের কাছাকাছি কোন একটি সময়ে তার প্রয়াণ ঘটে। মুসলিম স্বর্ণযুগে তিনি ছিলেন অন্যতম একজন দার্শনিক ও চিন্তাবিদ। ঔষধশাস্ত্রে তিনি অসাধারণ পান্ডিত্যের অধিকারী। আসুন আজ এই মহান চিকিৎসাবিদের জীবনের কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাকঃ
১) ইবনে সিনার জীবনী সম্পর্কে কিছু তথ্য কেবলমাত্র তার এক ছাত্রের লেখার মাধ্যমে পাওয়া যায়। এটি ছাড়া এমন কোন নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র নেই যেখান হতে এই কথাগুলোর সত্যতা প্রমাণ করা যায়।
২) ইবনে সিনা উজবেকিস্তানের এক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
৩) ইবনে সিনার বাবা ছিলেন একজন স্থানীয় প্রশাসক এবং জ্ঞানী পন্ডিত। বাবার দেয়া শিক্ষা ইবনে সিনাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল পড়াশোনার ক্ষেত্রে। ইবনে সিনার স্মৃতিশক্তি ছিল অসাধারণ।
৪) দশ বছর বয়সে ইবনে সিনা সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ মুখস্থ করেন।
৫) কিশোর বয়সেই ইবনে সিনা দর্শন শাস্ত্রের দিকে ঝুঁকে পরেন এবং এরিস্টটলের নানা চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করা শুরু করেন। আল ফারাবীর দর্শনও তাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।
৬) ১৬ বছর বয়সেই তিনি ঔষধ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৮ বছর বয়সে সম্পূর্ণরুপে একজন শারীরবিদ হয়ে যান। গণিতের প্রতি তার আকর্ষণ ছিল তবে তিনি মনে করতেন চিকিৎসা শাস্ত্রে তিনি বেশ ভালো উন্নতি করতে পারবেন।
৭) ঐ বয়সেই তিনি বিপুল সুনাম অর্জন করেন নানা জটিল রোগের চিকিৎসা করে। অনেক সময় তিনি রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন।
৮) ৯৯৭ হিজরি সনে তিনি তাদের অঞ্চলের আমিরের একটি জটিল রোগ আরোগ্য করেন। এরপর আমির তাকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত করেন। এই আমিরের নাম হচ্ছে নুহ।
৯) আমিরের ব্যক্তিগত চিকিৎসক হবার পর ইবনে সিনার পাঠাগারে যাওয়ার পথ সুগম হয়ে যায় এবং সেখানে তিনি নানা বিষয় সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করে দেন। বিশেষ করে তিনি চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে গভীর পড়াশোনা করেন।
১০) সামানিদ সাম্রাজ্যর পতনের পর ইবনে সিনা এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ঘোরা শুরু করেন এবং নানা বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেন।
১১) ইবনে সিনা তার সমগ্র জীবনে প্রায় ৪৫০টিরও বেশি বিষয়ে লেখালেখি করেছেন এবং তাদের মধ্যে ২৪০টি অক্ষত রয়েছে।
১২) কোন রোগ হলে কেমন করে তার উপশম করা যায়, ইবনে সিনা সে বিষয় নিয়েও বই লিখেছেন।
১৩) ইবনে সিনার লেখা বইয়ের মধ্যে কানুন ফিত তিবব সবচেয়ে নন্দিত ও পাঠ্য।
তথ্যসূত্রঃ সফটস্কুল ডট কম