Fair and Events > Students' Activities
Celebration of Unconditional Love: Parents' Day, Spring-2017
(1/1)
Fahmi Hasan:
বাস ছুটে চলেছে ধানমন্ডি থেকে আশুলিয়ার উদ্দেশ্যে। বাসে অধিকাংশই তরুণ, তরুণী প্রত্যেকেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কিন্তু বাসে পিনপতন নীরবতা কেন? কেউ গান গাইছে না, উচ্চস্বরে কথা পর্যন্ত বলছে না। সকলেই নীরব ভূমিকা পালন করছে। তবে কি তারুণ্যের জোয়ার থেমে গেল?
প্রায় ২২শ’ মানুষের সমাবেশ। অধিকাংশ ব্যাক্তিরই চোখে জল। বাবা-মা তার আদরের সন্তানকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। তবে এ কান্না কষ্টের না, এ কান্না আনন্দের।
আজ একদিনের জন্য বাবা-মা হয়ে গেলেন সন্তান, আর সন্তান হয়ে গেলেন অভিভাবক। কারণ বাবা-মা এসেছে তার চেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এনে দেয়া, ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে দেখান এক কথায় সার্বিক সহযোগিতায় পরম যত্নে বাবা-মাকে সহায়তা করে যাওয়া।
অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের এক ত্রিমাত্রিক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল শুক্রবার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। প্রায় ১১ শ’ শিক্ষার্থী ও ৬০০ জন অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন প্যারেন্টস ডে উপলক্ষে।
দিন দিন সন্তান এবং পিতা মাতাদের মাঝে দুরত্ব তৈরি করছে তথাকথিত আধুনিক সমাজ। সন্তানরা ভুলে যেতে বসেছে তাদের দায়িত্ব। এই দুরত্ব কমাতে এই ধরনের আয়োজন সত্যি প্রশংসনীয় দীর্ঘ আলোচনায় এই কথাগুলোই বলছিলেন সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম, রাকিবুল আলম রাব্বি ও মুনিরা জামানের মায়েরা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যতিক্রমী এক সংযোজন ‘আর্ট অফ লিভিং’। এই বিষয়ে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে শিক্ষার্থীর কথা বার্তা, আচার আচরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, চিন্তার প্রসার ঘটানো ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই কোর্সেরই অধীনে ‘প্যারেন্টস ডে’ অনুষ্ঠান পালন করা হয় চার মাস পর পর। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য এই কোর্স বাধ্যতামুলক।
স্টুডেন্ট আ্যাফেসার্সের ডিরেক্টর সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান সবুর খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার এ.কে.এম. ফজলুল হক, ট্রেজারার হামিদুল হক খান সহ অন্যান্য শিক্ষকরা।
সকালের নাস্তা শেষে, সবুজ মাঠে সবাই একত্রিত হয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় এবং শপথ করেন পিতা মাতাদের প্রতি নিষ্ঠাবান হবার। তারপর সন্তানরা পা ধুয়ে দেন পিতা মাতাদের, অনেক বাবা-মা তাদের চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তখনও। তারপর শুরু হয় অডিটোরিয়ামে আলোচনা অনুষ্ঠান।
সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু বলেন, ‘আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, আমাদের সন্তান যেন মানুষের মত মানুষ হয়। মানুষের মত মানুষ হবার জন্য আর্ট অফ লিভিং দিক নির্দেশনার কাজ করে থাকে।’
‘আপনাদের সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। সেই লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আপনার সন্তানের মেধাকে গুরত্ব দিয়ে সব দ্বার উম্মোচন করবার চেষ্টা করছি এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে আমরা সর্বোচ্চ গুরত্ব প্রদান করে যাচ্ছি’, বলছিলেন সবুর খান।
এরপরেই উপস্থাপক সন্তানকে জড়িয়ে ধরতে অনুরোধ করেন। বাবা-মা তার আদরের সন্তানকে জড়িয়ে ধরতেই আবেগপ্রবণ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। যার বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন না কিংবা অনুষ্ঠানের দায়িত্বরত অন্যান্য কর্মকর্তারাও চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি।
ছেলেকে জড়িয়ে ধরে যেন মনে হয়েছিল যেন আমি আমার বাবাকে জড়িয়ে ধরে আছি। আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, বায়িং হাউসে কর্মরত বাবা আব্দুল জলিল।
‘আমি আমার মাকে জড়িয়ে ধরতে পারি নি কখনো। হয়ত সুযোগ হলেও লজ্জার কারণে তা সম্ভব হয় নি। আজ আমি মাকে জড়িয়ে ধরে অনেক আনন্দিত,’ হাসি মুখে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন ইংলিশ বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত নীলা।
জুম্মার নামাজ এবং দুপুরের খাবারের বিরতির সময় সুশৃঙ্খল ভাবে খাবার সংগ্রহ করে পিতা-মাতার সঙ্গে খাবার গ্রহণ করেন। দেখে মনে হচ্ছিল এ যেন আর্ট অফ লিভিং এর ব্যবহারিক ক্লাস।
বিরতি শেষে মঞ্চ মুখর করেন আবারো শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। রংপুর থেকে আগত অভিভাবক মাহমুদুল হাসান সেলিম বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে এ ধরনের আয়োজন প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অতীব জরুরী এবং এই বিশাল সবুজ ক্যাম্পাস বেশ আকর্ষণীয় যা শিক্ষার্থীদের পদচারণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠান শেষে বাসে করে অভিভাবকদের গন্তব্যে পৌছে দেয়া হয়। এভাবেই শেষ হয় ছোট বেলার ভয়ানক রেজাল্ট দেয়া প্যারেন্টস ডের পরিবর্তন হয়ে আসা আনন্দঘন প্যারেন্টস ডে।
Source: https://www.manobkantha.com/%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%9F-%E0%A6%AF%E0%A6%96%E0%A6%A8-%E0%A6%9C%E0%A7%9C%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B0/
Navigation
[0] Message Index
Go to full version