ধরুন, কারও কাছে শুনলেন ব্যায়াম করা ভালো। সঙ্গে সঙ্গে শুরু করে দিলেন ব্যায়াম। দিন নেই, রাত নেই—চলতে থাকল শারীরিক কসরত। পরিণামে এক সময় হাতে-পায়ে ব্যথা নিয়ে বিছানার সঙ্গে সখ্য! এই চারটি লাইনের সার সংক্ষেপ হলো, ভালো কাজ বেশি করা কিন্তু ভালো নয়। এতে অনেক সময় ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে। আসুন জেনে নিই এমনই কিছু ভালো কাজের কথা যেগুলো বেশি করলে আর থাকে না ভালো—
ঘুম
সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। অনেকে মনে করেন, এর চেয়ে বেশি ঘুমালে হয়তো বেশি সতেজ থাকা যাবে। কিন্তু জানেন কি—দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি ঘুম আপনার মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়? এতে করে আপনার হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা ৩৪ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। এ ছাড়া মনোযোগ, ওজন ও রক্তে শর্করার পরিমাণ কমতে পারে।
ব্যায়াম
ব্যায়াম করা ভালো—সে সবাই জানে। কিন্তু বেশি ব্যায়াম করলে তা শরীরের সন্ধিস্থলে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে টেন্ডন ও লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি আপনার হৃদ্যন্ত্রেও সমস্যা হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যায়াম অস্টিওপরোসিস রোগের কারণ হতে পারে। কিন্তু কতটুকু ব্যায়াম করলে তা বেশি হবে? যদি ব্যায়ামের কারণে আপনার বিরক্তির উদ্রেক হয়, তবেই মনে করবেন বেশি হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ব্যায়াম বেশি হয়ে গেলে ঘুমাতে ও কাজে মনোযোগী হতেও সমস্যা হয়। সুতরাং এমনটা হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়ামের পরিমাণ কমিয়ে আনুন।
অ্যান্টিবায়োটিক
আমাদের দেশে কিছু হলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার চল আছে। কিন্তু বেশি বেশি অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া মোটেই ভালো কিছু নয়। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া মেরে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। কিন্তু বারবার অ্যান্টিবায়োটিকের সংস্পর্শে এলে ব্যাকটেরিয়া নিজেদের ধরন পরিবর্তন করার সুযোগ পায়। ফলে আগের অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করে না। সুতরাং অ্যান্টিবায়োটিক তখনই খেতে হবে, যখন আসলেই সেটির প্রয়োজন হবে।
ভালো খাবার
কেউ কেউ মনে করেন ভালো ও পুষ্টিকর খাবার খেলেই ভালো থাকা যায়। তা থাকা যায় বৈকি। কিন্তু তাই বলে পুষ্টিকর খাবার মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। কারণ বেশি খেলে হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টরল, ডায়াবেটিস, হাড় ও ঘুমের সমস্যা। আবার বেশি খেলে শরীরের ওজনও বাড়বে। তাতে আবার হৃদ্রোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
পানি
পানি কম পান করলে নানা শারীরিক সমস্যা হয়। আবার খুব বেশি পান করলেও হতে পারে এক বিরল রোগ। এতে কিডনি অতিরিক্ত পানি শরীর থেকে বের করে দিতে পারে না। ফলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। এ অবস্থাকে বলে হাইপোনেট্রিমিয়া। এতে করে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে, মাথা ব্যথা হবে এবং অবস্থা বেশি খারাপ হলে মৃত্যুও হতে পারে।
ভিটামিন
অসুস্থতার সময় আমরা ভিটামিন ট্যাবলেট খাই সবল হওয়ার জন্য। কিন্তু যদি মনে করে থাকেন ভিটামিনের এই ট্যাবলেটই আপনাকে সতেজ-সবল রাখবে, তবে ভুল ভাবছেন। অতিরিক্ত ভিটামিনও কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বেশি আয়রন বমির কারণ হতে পারে। আবার ভিটামিন সি বেশি খেলে তাতে ডায়রিয়া হতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন এ সৃষ্টি করতে পারে চোখের সমস্যা। বেশি বেশি ভিটামিন ডি আপনার মাংসপেশিকে দুর্বল করে দিতে পারে। সুতরাং শুধু ভিটামিন বেশি খেলে হবে না।