বিকেএসপিতে একটা ঝড় উঠল আজ। না, সেটা কালবৈশাখী নয়। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে মৃদু হাওয়া—আবহাওয়াটা বরং চমত্কার। বিকেএসপিতে যেটা উঠছে সেটির নাম তামিম-ঝড়! মার আর মার, স্ট্রোক-প্লের অসাধারণ প্রদর্শনী উপহার দিয়ে ১২৫ বলে ১৫৭ রান করেছেন তামিম ইকবাল। বাঁহাতি এই ওপেনারের দুর্দান্ত ইনিংসে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে মোহামেডান পেয়েছে ৩০৭ রানের বড় স্কোর।
নিজেদের আগের ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা থাকায় খেলতে পারেননি তামিম। অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে গাজী ক্রিকেটার্সের কাছে হেরেছে মোহামেডান। ওই হারটাই যেন আরও তাতিয়ে দিয়েছে তামিমকে। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ওপেনিং জুটিতে শামসুর রহমানের সঙ্গে ৭৩ রানের ভালো শুরু এনে দিয়েছেন বাঁহাতি ওপেনার। শুরুতে যদিও তিনি বেশ ধীরলয়েই এগিয়েছেন। বাউন্ডারির খাতাটা খুলেছেন নবম ওভারে সানজিত সাহাকে ছক্কা মেরে। কিন্তু তার আগে তাঁকে খেলতে হয়েছে ২২ বল। এই সময়ে মোহামেডান অধিনায়কের রান ৭।
৬১ বলে ফিফটি পাওয়া তামিম যতই সামনে এগিয়েছেন ততই কলবাগান বোলারদের ভোগান্তি বেড়েছে। ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে খেলেছেন আরও ৪১ বল। তবে তামিমের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের চূড়ান্ত প্রদর্শনীটা দেখা গেছে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পরই। সেঞ্চুরির আগে ১৩ চারের সঙ্গে যে দুটি ছক্কা মেরেছেন তার একটিতে বল হারিয়ে গিয়েছিল! সেঞ্চুরির পর চারটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ২৩ বলে করলেন ৫৭ রান। ৩৯ ওভারে আবুল হাসানের বলে লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারা ছক্কায় একটি টিভি চ্যানেলের গাড়ির উইন্ডশিল্ডই ভেঙে গেল!
কলাবাগানের সব বোলারকেই কম-বেশি ভুগিয়েছেন তামিম। তবে তাঁর হাতে সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছেন কলাবাগানের অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল! ১৮টি চারের দুটি মেরেছেন তাঁর বলে। তবে সাতটি ছক্কার তিনটিই আশরাফুলের বলে। সানজিতকে ডাউন দ্য উইকেটে মারতে গিয়ে কাভারে মুক্তার আলীর ক্যাচ হওয়ার আগে পেয়ে গেছেন লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসটা। কলাবাগানের বোলারদের মধ্য সানজিতই যা একটু ব্যতিক্রম। ৫২ রানে পেয়েছেন ৪ উইকেট।
তামিমের ইনিংসে যখন সবাই বুঁদ, পাশের মাঠে আলো ছড়িয়েছেন গত প্রিমিয়ার লিগে ভিক্টোরিয়ার হয়ে দুর্দান্ত খেলা আল আমিন জুনিয়র। তাঁর অপরাজিত ১০৬ রানে ভর করে খেলাঘরের বিপক্ষে প্রাইম ব্যাংক করেছে ৬ উইকেটে ৩০৭। কী আশ্চর্য, দুই মাঠেই প্রথমে ব্যাট করা দুই দলের ইনিংসে করেছে সমান রান!