ছাদখোলা বাসে করে সার্জিও রামোসরা যখন মাদ্রিদে সিবেলেস স্কয়ারে এলেন, সেখানে তিল ধারণের জায়গা নেই। এক দফা উৎসব অবশ্য মালাগার মাঠেই হয়ে গেছে। কিন্তু সেখানে তো আর সব সমর্থক ছিলেন না। আর ওইটুকু উদ্যাপনে কি খেলোয়াড়দেরও মন ভরে! পাঁচ বছর পর লা লিগার ট্রফি জয়, রেকর্ড ৩৩তমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন বলে কথা!
‘৩৩’ লেখা বাসে চড়ে দল আসতেই গগনবিদারী চিৎকারে রোনালদো-রামোসদের স্বাগত জানালেন সমর্থকেরা। ঐতিহ্য মেনে সিবেলেস স্কয়ারের মূর্তিটার গলায় রিয়াল মাদ্রিদের পতাকা জড়িয়ে দিলেন অধিনায়ক রামোস। তারপর ট্রফি নিয়ে সে কী উচ্ছ্বাস!
শেষ ম্যাচে মালাগার সঙ্গে ড্র করলেই হতো। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর করিম বেনজেমার গোলে রিয়াল জিতল ২-০ ব্যবধানে। একই সময় শুরু এইবারের বিপক্ষে ম্যাচে নাটকীয়ভাবে ৪-২ গোলে জিতেও তাই কোনো লাভ হলো না বার্সেলোনার। একটা সময় তো বার্সেলোনা ২-০ গোলে পিছিয়েও ছিল ম্যাচে। মেসি-সুয়ারেজরা স্বরূপে ফিরে শেষ পর্যন্ত দলকে জেতালেন, কিন্তু ততক্ষণে সেই জয় মূল্যহীন হয়ে গেছে!
২০১২ সালে হোসে মরিনহোর অধীনে সর্বশেষ লিগজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ আবার হলো লা লিগার সেরা। মালাগার মাঠ লা রোসালেদায় শেষ বাঁশি বাজার পর তাই রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদানকে ঘিরেই উচ্ছ্বাসটা বেশি দেখালেন খেলোয়াড়েরা।
উচ্ছ্বসিত জিদান নিজেও। খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন। জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগা, সিরি ‘আ’সহ সম্ভাব্য প্রায় সব শিরোপা। এরপর রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হয়েও জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, ক্লাব বিশ্বকাপ। কিন্তু সব ছাপিয়ে এটাই নাকি তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন! ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে রিয়াল কোচ বললেন, ‘আমার পেশাদার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আনন্দের দিন এটা। আমার তো ইচ্ছে করছে এখানেই দাঁড়িয়ে নাচতে। হয়তো আমাকে বাইরে থেকে দেখে সবকিছু বোঝা যাচ্ছে না, কিন্তু ভেতরে-ভেতরে আমি দারুণ খুশি! খেলোয়াড় হিসেবেও এই ট্রফিটা জিতেছি। আর সেই জন্যই বলছি, এটা সবচেয়ে আনন্দের দিন। কারণ কোচ হিসেবে জেতাটা আসলেই অন্য রকম। রিয়াল মাদ্রিদ কোচের কাছে কী রকম প্রত্যাশা থাকে, সেটা তো আপনারা সবাই জানেন।’