Faculties and Departments > Teaching & Research Forum
শিক্ষাব্যবস্থা কোন পথে
(1/1)
Md. Alamgir Hossan:
বর্তমানে শিক্ষা যেন শুধু সার্টিফিকেট লাভের জন্য, পাসের জন্য, শিক্ষিতের হার বাড়ানোর জন্য! আদৌ কি এটা শিক্ষার উদ্দেশ্য?
শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তনশীল। কিন্তু সেই পরিবর্তন যদি সমাজের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারে তবে সেটা ব্যর্থ হওয়াটাই স্বাভাবিক। বর্তমানে আমাদের শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এবং ঘন ঘন সিলেবাস পরিবর্তন লক্ষণীয়। কিন্তু সেই পরিবর্তন আমরা গ্রহণ করতে কি পারছি? পারছি না। কারণ আমাদের যে শিক্ষকসমাজ রয়েছে তাদেরকে আগে প্রশিক্ষিত করতে হবে। তা না হলে শুরুতেই গলদ থেকে যাবে এবং যাচ্ছেও। তাই দেখা যায়, ইংরেজিতে কমিউনিকেটিভ সিস্টেম চালু হওয়াতে ছাত্রছাত্রীরা গ্রামার ভুলে গেছে এবং যাচ্ছে। তাতে ইংরেজিতে ফেলের মাত্রা বেড়েছে।
এরপর এসেছে সৃজনশীল পদ্ধতি। যা এখনো শিক্ষকসমাজের কাছে ধোঁয়াশা। শিক্ষকরাই বোঝেন না যে কিভাবে প্রশ্ন করতে ও প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। একেক শিক্ষক একেকভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। আর তার মধ্যে অসাধু নোট, গাইড বই ব্যবসায়ী সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর বানিয়ে নোট, গাইড বই বিক্রি করছে। যা শিক্ষার অন্তরায় হিসাবে কাজ করছে।
তার মধ্যে আবার ঢুকে গেছে শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থায় রাজনীতি। কোন আমলে বা কোন সরকারের আমলে পাসের হার বেশি তা নিয়ে রাজনীতি। ২০০১ সালে যেখানে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৬ জন, সেখানে ২০১৬ সালে পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন। এর মানে কি উন্নতি? তা কিন্তু নয়। রয়েছে রাজনৈতিক কারসাজি। তা সরেজমিনে দেখা যায় আজকালের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার অবস্থাতেই। তারা পাঠ্যবই তো ঠিকভাবে পড়েই না—সাধারণ জ্ঞান, ইতিহাস, ঐতিহ্য পর্যন্ত জানে না। তাই তো দেখা যায়, এসব জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রছাত্রীর অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বরই পায় না।
সম্প্রতি দেশীয় টিভি চ্যানেলের এক প্রতিবেদন নিয়ে হইচই চলছে। এর পক্ষে-বিপক্ষে মতামত আসছে। যারা এর পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছে তারা সবাই এটা স্বীকার করছে যে আমাদের শিক্ষার মান পড়ে গেছে। শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘জিপিএ ৫ তারা পায়নি, তাদের জিপিএ ৫ তুলে দেওয়া হয়েছে’ এবং শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান বলেন, ‘মাধ্যমিক শেষ করা একজন ছাত্র বা ছাত্রী দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য জানবে না তা কী করে হয়।’ শোনা যায় পরীক্ষার হলে ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন উত্তর বলে দেওয়া হয় এবং ওপর থেকে চাপ থাকে যে, যেভাবেই হোক তোমার প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ভালো করতে হবে। তাই অবৈধ পন্থায় পরীক্ষার্থীকে পাস করানো হচ্ছে। এমন শোনা যায়—যাঁরা পরীক্ষার খাতা দেখেন তাঁদের বলা হয় এতটি খাতা দিলাম সেখান থেকে ৮০-৯০% পাস করিয়ে দিতে হবে, না পারলে খাতা নেওয়ার দরকার নাই। তাই অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের কথাই সত্য যে পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আবার এর মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকল তো আছেই। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার আগের দিন বইয়ের পিছনে না থেকে কোথা থেকে প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় তার পিছনে ছুটছে। আর তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্র থেকে শুরু করে এক শ্রেণির শিক্ষক তাঁদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীর হাতে প্রশ্নপত্র তুলে দিচ্ছেন। যা আমাদের শিক্ষা ও জাতির জন্য ভয়ংকর ও কলঙ্কজনক।
এভাবে চলতে থাকলে জাতি এক সময় অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। মেধাশক্তি নষ্ট হয়ে যাবে। তাতে আমাদের শিক্ষা ও জাতি ব্যর্থ হবে। তাই এর লাগাম এখনই টেনে ধরা উচিত।
Zannatul Ferdaus:
:(
Navigation
[0] Message Index
Go to full version