যুক্তরাষ্ট্রে হঠাৎ করেই বেড়েছে দুর্ঘটনায় পথচারী মৃত্যুর হার। এই মৃত্যুর হার বৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ অন্যমনস্ক হয়ে মুঠোফোনের ব্যবহার। দেশটিতে ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ছয় হাজার পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। গত দুই দশকে এত বেশি পথচারী মৃত্যুর নজির আর নেই।
মার্কিন গভর্নরস হাইওয়ে সেফটি অ্যাসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে অন্যান্য কারণের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে গাড়িচালকের সংখ্যা বৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যহ্রাস এবং স্বাস্থ্য রক্ষা ও পরিবেশগত কারণে হাঁটার পরিমাণ বৃদ্ধি। মারাত্মক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ পথচারী ও ১৫ শতাংশ চালকের কারণ হিসেবে মদ্যপানের উল্লেখও সেখানে ছিল।
যুক্তরাজ্যের রয়াল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব অ্যাকসিডেন্টস সংস্থাও মনোযোগ হারানো বা ডিসট্র্যাকশনের অন্যতম কারণ হিসেবে মুঠোফোনের উল্লেখ করেছে। সংস্থাটির সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিক লয়েড বলেন, ‘ডিসট্র্যাকশনের ফলে আরও বেশি তরুণ আহত হচ্ছে, বিশেষ করে রাস্তা পারাপারের সময় মুঠোফোন ব্যবহারের কারণে। সেটা মুঠোফোনে কথোপকথন, গান শোনা, বার্তা আদান-প্রদান কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে হতে পারে।’
স্মার্টফোন ‘জোম্বি’
বিশ্বজুড়ে বেশ কিছু শহরে রাস্তায় ডিজিটাল ডিসট্র্যাকশন ঠেকাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে স্থানীয় সরকার। জার্মানির অগসবার্গ শহরে যেমন রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ভূমিতে লাল-সবুজ বাতি বসানো হয়েছে। এর পেছনে কারণ, রাস্তায় যারা স্মার্টফোনে নাক-মুখ গুঁজে চলাচল করে, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ।
নেদারল্যান্ডসের বোদেগ্রাভেন শহরে গত ফেব্রুয়ারিতে একধরনের ট্রাফিক বাতির পরীক্ষা চালানো হয়েছে, যেগুলো ফুটপাথজুড়ে লাল বা সবুজ আলো ফেলবে। এই আলো ফেলার কারণ একটাই—স্মার্টফোন জোম্বিদের দৃষ্টি আকর্ষণ। রাস্তায় মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গেম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং গানের কথা বলছেন তাঁরা।