Faculties and Departments > Life Science
ভাইবোনের দূরত্বের জন্য বাবা-মা কি দায়ী?
(1/1)
Zannatul Ferdaus:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পথের পাঁচালী উপন্যাসে অপু-দুর্গার মধ্য দিয়ে ভাইবোনের সম্পর্ক কতটা মধুর, তা তুলে ধরেছিলেন। আদর-ভালোবাসায়, আহ্লাদ-আবদারে ভরা এই মিষ্টি সম্পর্কের মধ্যেও অনেক সময় ভুল-বোঝাবুঝি ও দূরত্ব তৈরি হতে পারে। তীব্র আবেগ থাকে বলে খুব ছোট কোনো সমস্যা থেকেও তীব্র মান-অভিমান তৈরি হয় ভাইবোনদের মধ্যে। দেখা যায়, ভাইবোনদের মধ্যে অভিমান জমে একসময় শত্রুতায় পরিণত হয়, যার দায়ভার মা-বাবার কিছু অনিচ্ছাকৃত আচরণের জন্যও হতে পারে। তাই ছোট সমস্যাগুলোকেও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে, তা না হলে ফাটল ধরতে পারে এ নিষ্পাপ সম্পর্কেও।
একের সঙ্গে অন্যের তুলনা করা
মৌ পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী, মা-বাবার অনুগত শান্ত মেয়ে। অথচ তার ছোট বোন টুসি ভীষণ দুষ্টু। বড় বোনের মতো মেধাবী নয় সে। তাদের মায়ের মুখে সারা দিন এক কথাই লেগে থাকে, ‘মৌকে দেখে কিছু শেখে টুসি। ও ক্লাসে ফার্স্ট হয়। গান, খেলাধুলায়ও চ্যাম্পিয়ন, আর তুমি? সারা দিন দুষ্টুমি, কম্পিউটারে গেম না হয় টিভি নিয়ে থাকো।’ ছোটবেলা থেকেই এমন তুলনার জন্য বড় বোনকে একদমই পছন্দ করে না টুসি। পড়াশোনা ও অন্যান্য বিষয়ে ভালো বলে মা-বাবা সব সময় ওকেই গুরুত্ব দেন।
এভাবে তুলনা করার ফলে সন্তানদের মধ্য অসুস্থ প্রতিযোগিতা, দূরত্ব, হিংসা আর পরবর্তী সময়ে শত্রুতার সৃষ্টি হয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফাতেমা রেজিনা পারভিন। তাঁর মতে, যেহেতু প্রত্যেকেই ভিন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী, তাই কখনোই মা-বাবার এক সন্তানের সঙ্গে অন্য সন্তানের তুলনা করা উচিত নয়।
বয়সের ব্যবধান
বয়সের ব্যবধান অনেক সময় দূরত্বের সৃষ্টি করে। এ দূরত্ব মেটানোর উপায়টা ছোটবেলা থেকে মা-বাবাকেই শেখাতে হবে। বড় ভাইবোন যেন ছোট ভাইবোনদের সময় দেয়, বন্ধুর মতো আচরণ করে এবং তারা সব সময় তাদের পাশে থাকবে এমন বিশ্বাস অর্জন করতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মেহেদী কায়সার বলেন, ছোট ভাই পদ্মের সঙ্গে তাঁর বয়সের ব্যবধান প্রায় ২১ বছর। কিন্তু বয়সের পার্থক্য দুই ভাইয়ের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারেনি।
মেহেদী কায়সার বলেন, ‘আমি ওর সঙ্গে অনেক কিছু শেয়ার করি। আমরা একসঙ্গে গিটার, কি-বোর্ড বাজানো থেকে শুরু করে খেলাধুলাও করি।’
গর্ভকাল থেকেই করণীয়
গর্ভকাল থেকেই বড় সন্তানকে তার ছোট ভাইবোনের প্রতি তার দায়িত্ব ও ভালোবাসার আভাস দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মা যখন গর্ভবতী থাকেন, তখন থেকেই তার বড় সন্তানকে বলা উচিত তার ভাই বা বোন তার খেলার সাথি হবে, ছোট ভাই বা বোনটা তার দায়িত্বে থাকবে। তার সারা জীবনের বন্ধু হবে ইত্যাদি বলে তাকে আগে থাকতে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে। যেন পরবর্তী সময়ে তার এমন মনে না হয় যে ছোট ভাইবোন জন্মের পর তার গুরুত্ব কমে গিয়েছে বা তারা মা-বাবার ভালোবাসায় ভাগ বসিয়েছে।
সময় দেওয়া জরুরি
মা-বাবাকে সন্তানদের শতভাগ সময় দিতে হবে। অনেক মা-বাবা সন্তানদের ঝগড়া বা মান-অভিমান নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেন না। সেটা একেবারেই অনুচিত। ভাইবোনের মধ্যে মান-অভিমান চলে, তবে সে সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিয়ে ফেলতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, যেন এই অভিমান বেশি দূর না গড়ায়।
Tapushe Rabaya Toma:
parent should be more concern on that point
Navigation
[0] Message Index
Go to full version